পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোটের মুখে সাংসদ থাকাকালীনই তৃণমূল ছেড়ে গিয়েছিলেন বিজেপিতে। কয়েক মাস বাদেই হাঁটা দেন ফিরতি পথে। বেশ কিছুটা সময় তিনি যে কোন দিকে, তা নিয়েই ধোঁয়াশা ছিল। তারপরে আবার শাসক দলের একটা, দুটো বৈঠক, কর্মসূচিতে মঞ্চে দেখা যায় তাঁকে। লোকসভা ভোটের মুখে প্রশ্ন উঠেছে বর্ধমান পূর্বের এই সাংসদ আবার টিকিট পাবেন কি না।
প্রথমবার, ২০১৪ সালে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্র থেকে ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৩৭৯ ভোটে জিতেছিলেন সুনীল মণ্ডল। ২০১৯ সালে তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল ৮৯,৩১১। তার পরেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপির হয়ে আক্রামণাত্মক ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু বিজেপির তেমন ফল না হওয়ায় পুরনো ঘরে ফেরেন সুনীল। ফেরার পরে তাঁকে বিশেষ করে নিচুতলার দলীয় নেতা-কর্মীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। পালশিট টোলপ্লাজায় এক কর্মীকে মারধরের ঘটনায় বিতর্কেও জড়ান। এর পরে কয়েক মাস তাঁকে বিশেষ সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। তবে গত মাস তিনেক ধরে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভায় নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। কলকাতায় দলীয় কোনও কর্মসূচি থাকলে নেতাদের ফোন করে লোকজন নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বাড়তি উদ্যোগী হতেও দেখা গিয়েছে।
জেলার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘এই আসনটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত।দল প্রার্থী বাছাইয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। সুনীলদা যেহেতু একবার বিশ্বাসভঙ্গের কাজ করেছেন, ফলে তাঁর পক্ষে এ বার টিকিট পাওয়া কঠিন বলে আমাদের মনে হয়।’’ সম্প্রতি কলকাতায় পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে হাজির থাকা এক তৃণমূল নেতার দাবি, পশ্চিম বর্ধমানের একটি আসনে প্রার্থীর ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব বর্ধমানের দু’টি আসনে দল সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটকুশলীর সংস্থার লোকজন এই কেন্দ্রের জন্য তিনটি নাম তুলে এনেছেন। তিন জনই বিধায়ক। এক মহিলাও রয়েছেন।
সামনেই লোকসভা ভোট। নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়নি বটে, তবে নানা দলেই প্রার্থী নিয়ে আলোচনা চলছে। জেলায় ঢুকে পড়ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। হাটে-বাজারে চর্চা চলছে সুনীলকে নিয়েও। কালনা ২ ব্লকের এক তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘সুনীলদা এলাকায় পেয়ে ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে বলেছিলাম, ‘দাদা এ বার আপনার নামে দেওয়াল লিখতে পারব তো?’ উনি এক গাল হেসে বলেছিলেন ২০০ শতাংশ। তবে ওঁকে এ বার দল টিকিট দেবে কি না তা নিয়ে আমাদের খটকা রয়েছে।’’ সুনীল অবশ্য বলেন, ‘‘টিকিটটা বড় কথা নয়। মানুষের জন্য কাজ করাটাই বড়। দলের হয়ে যেখানেই যাচ্ছি, প্রচুর মানুষকে পাশে পাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। দলের কাজে জেলার নানা প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছি।’’
বিজেপিতে যাওয়া, মাঝে বেশ কিছুটা সময় নিষ্প্রভ থাকা কি টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে? সাংসদের বক্তব্য, ‘‘বিজেপিতে যাওয়া একটা দুর্ঘটনা। মাঝে ছ-সাত মাস কিছুটা কম ঘোরাঘুরি হলেও বর্ধমানের বাড়ি থেকে মানুষকে পরিষেবা দিতাম। সাংসদ তহবিলের সমস্ত টাকা খরচও করেছি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে কোন কেন্দ্রে কে প্রার্থী হবেন সেই বিষয়টি দল ঠিক সময়ে ঘোষণা করে দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy