Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

সাংসদের দেখা মেলেনি, তবু জয়ে প্রত্যয়ী তৃণমূল

লোকসভা ভোটে বিধানসভাভিত্তিক কোন দলের কী অবস্থা? প্রচারে কারা কোন বিষয়কে তুলে ধরছে? আজ, হরিপাল বিধানসভা কেন্দ্র।

হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালের নতুন ভবন।

হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালের নতুন ভবন। ছবি: দীপঙ্কর দে।

প্রকাশ পাল
হরিপাল শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ০৭:৪৮
Share: Save:

বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ নিজেই মানছেন, কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি!

তা সত্ত্বেও হরিপাল বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে খুব ‘চাপে’ নেই শাসকদল। বিরোধীদের সেই শক্তি কই! বরং আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে ‘প্যাঁচে’ পড়া ঘাসফুলকে টেনে তোলার দায়িত্ব অনেকটাই হরিপালের দলীয় সংগঠনের কাঁধে!

২০১১ থেকেই হরিপাল তৃণমূলের। পূর্বতন বিধায়ক বেচারাম মান্না এখন পাশের সিঙ্গুর কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি মন্ত্রীও। হরিপালের বিধায়ক তাঁর সহধর্মিণী করবী মান্না। অনুগামীদের দাবি, ‘দাদা-বৌদির’ হাতে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, কাজ যেটুকু হয়েছে তাতেও দুর্নীতি, কাটমানির লম্বা ছায়া।

গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা সমীরণ মিত্র। বিদায়ী সাংসদ অপরূপা পোদ্দার গত পাঁচ বছরে সাত বিধানসভার মধ্যে সব থেকে কম টাকা দিয়েছেন হরিপালে। শুধুমাত্র ৫টি মাদ্রাসার উন্নয়নে ৬৪ লক্ষ এসেছে সাংসদ তহবিল থেকে। তা-ও গত জানুয়ারিতে। এ জন্য অপরূপার স্বামী সাকির আলি আঙুল তুলেছেন মান্না-দম্পতির দিকে। তাঁর ক্ষোভ, অপরূপাকে হরিপালে কার্যত ঢুকতে দেননি বেচারাম-করবী। হরিপালের জন্য সাংসদ তহবিলের দু’কোটি টাকার কাজের কথা হয়েছিল। বেচারামের পাঠানো প্রকল্পে ভুল থাকায় প্রশাসন মঞ্জুর করেনি।

এ নিয়ে বেচারামের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এলাকার মানুষ ওঁকে (অপরূপা) সাংসদ হিসাবে পাননি। এলাকার উন্নয়ন করতে পারেননি। তাই এ বার দল টিকিট দেয়নি। এর বেশি মন্তব্য করব না।’’

এত কিছুর পরেও তৃণমূলের জয়জয়কার! বিধানসভায় করবী প্রায় ২৩ হাজার ভোটে সমীরণকে হারান। পঞ্চায়েতেও তৃণমূলের রাজত্ব। বিজেপি নেতাদের একাংশ মানছেন, হরিপালে তাঁদের সংগঠন এখনও মজবুত নয়। পঞ্চাশের বেশি বুথ সংখ্যালঘু প্রধান। এখানে গেরুয়া-ভোটবাক্সে কত সমর্থন জমা পড়বে, সংশয়। যদিও সমীরণের যুক্তি, ‘‘বিধানসভা ভোটে এনআরসি-সিএএ নিয়ে তৃণমূলের অপপ্রচার ছিল। সংখ্যালঘু ভোট পুরোটাই আমাদের বিপক্ষে গিয়েছিল। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। শিক্ষা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে তৃণমূল নিমজ্জিত। ওদের জয় সহজ হবে না।’’ তাঁর দাবি, বিভিন্ন প্রকল্পে উন্নয়নের টাকা দিয়েছে দিল্লি। ফলে, উন্নয়ন কিছু হয়ে থাকলে বিজেপিও অংশীদার।

বিরোধীরা সাংসদের সঙ্গে মান্না-দম্পতির দ্বন্দ্ব মনে করিয়ে দিচ্ছেন। চন্দনপুর স্টেশনে আন্ডারপাস না হওয়ার কথা তুলছেন। সাকিরের দাবি, আন্ডারপাসের কথা সংসদে তুলেছিলেন অপরূপা। তিনি জানান, আগের বার (২০১৪-’১৯) অপরূপার সাংসদ তহবিলের ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার কাজ হরিপালে হয়েছিল। ৭টি বিধানসভায় সেটিই ছিল সর্বাধিক।

পরিসংখ্যান দেখিয়ে সিপিএম বলছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হরিপালের ১৫টি পঞ্চায়েতের ২৬২টি গ্রামসভা আসনের একটিও বিজেপি জেতেনি। সিপিএম ১৩টি পেয়েছে। ওই নির্বাচনে সিপিএম ২৫% ভোট পেয়েছে। এ বার তা বাড়বে বলে সিপিএম আশাবাদী। সিপিএমের হরিপাল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মিন্টু বেরার কথায়, ‘‘দুর্নীতির জন্য তৃণমূলের থেকে মানুষ মুখ ফেরাচ্ছে। বিজেপির সঙ্গেও মানুষ নেই।
আমাদের প্রার্থী সর্বত্র সাড়া পাচ্ছেন। লড়াই হবে।’’ সিপিএমের অভিযোগ, বড় হাসপাতাল হয়েছে, অথচ পরিষেবা অমিল। বাস স্ট্যান্ড হয়নি। সিঙ্গুরের পাশের এই ব্লকে একটি রাসায়নিক কারখানা ছাড়া শিল্প
কার্যত নেই।

বিরোধীদের কথায় আমল না দিয়ে মন্ত্রী বেচারাম বলছেন, ‘‘উন্নয়ন যা হয়েছে, এলাকার মানুষ জানেন। আরও হবে।’’ আর সেই ‘উন্নয়নের’ জোরেই এ বারও শেষ হাসি তারাই হাসবে বলে দাবি তৃণমূলের।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Haripal TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy