নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই প্রথম দফা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারিও হয়ে গিয়েছে। এ হেন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের আইনের উপর স্থগিতাদেশ দিতে রাজি নয় সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় এমনই জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। শুধু তা-ই নয়, আদালত আরও জানায়, ভোটের আগে কমিশনার নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।
প্রসঙ্গত, দেশে এক জন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার-সহ মোট তিন জন নির্বাচন কমিশনারের থাকার কথা। কিন্তু গত মাসে আচমকাই নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে ইস্তফা দেন অরুণ গোয়েল। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর নেন আর এক নির্বাচন কমিশনার অনুপ পাণ্ডে। তার ফলে নির্বাচন কমিশনারের দুই পদই শূন্য হয়ে যায়। কেবল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বেই দেশে লোকসভা নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তার পরই কেন্দ্রীয় সরকার দুই নির্বাচন কমিশনার পদ পূরণ করতে উদ্যোগী হয়। গত ১৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনের জোড়া শূন্যপদে দুই আমলাকে নিয়োগ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্ব কমিটি। দেশের দুই নির্বাচন কমিশনারের পদে আনা হয় সুখবীর সিংহ সান্ধু এবং জ্ঞানেশ কুমারকে।
এই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা দায়ের হয়। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে মোদী সরকারের আইনকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। বৃহস্পতিবার সেই সব মামলার শুনানিতে সওয়াল করার সময় মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘‘কমিশনে শূন্যতা ছিল ঠিকই। কিন্তু আমরা আশা করেছিলাম যে একটি স্বাধীন প্যানেল নিয়োগ করবে। তবে বাস্তবে তা হয়নি।’’ সেই সঙ্গে শূন্যপদ নিয়োগের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।
বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানিতে তার পর্যবেক্ষণে জানায়, নির্বাচন সামনে, এমন সময় নিয়োগ সংক্রান্ত আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করা ঠিক নয়। আর যে দুই নতুন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তাই তাঁদের পদ থেকে সরানোর কোনও কারণ দেখছে না আদালত। বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘এটা ভারসাম্যের প্রশ্ন। ভোটের মুখে কমিশনারদের সরিয়ে দিলে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়তে পারে।’’ তবে সেই সঙ্গে আদালত এ-ও জানায়, কমিশনকে স্বাধীন এবং সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে হবে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের আনা নয়া আইনে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি থেকে দেশের প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, তাঁর বেছে নেওয়া আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে। ফলে নিয়োগ কমিটিতে গোড়া থেকেই সরকার পক্ষের সংখ্যাধিক্য থাকছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
কংগ্রেস নেত্রী জয়া ঠাকুর এবং এডিআরের মতো সংগঠনের তরফে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে একগুচ্ছ মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। সর্বোচ্চ আদালতে দেওয়া হলফনামায় সেই আবেদনগুলি খারিজের পক্ষে সরব হয়ে কেন্দ্র বলেছে, মামলাকারীরা নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগও আনা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy