দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
ঠিক সাড়ে তিন বছরের ব্যবধান। বর্ধমান পূর্বের বিদায়ী সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বিজেপি-সংশ্রব নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে। বুধবার রাতে বর্ধমানের উল্লাস মোড়ে তাঁর বাড়িতে ঘণ্টাখানেক কাটান বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। জন্মদিনের কেকও কাটেন দিলীপ। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার সকালে ডেন্টাল কলেজের মাঠে প্রাতর্ভ্রমণের সময়ে দিলীপের সঙ্গে দেখা করেন বর্ধমানের স্থানীয় পুরসদস্য অজিত খাঁ। দু’জনেই জানিয়েছে, এটা সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার।
২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুনীলের কাঁকসার বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার তিন দিন পরে শুভেন্দুর সঙ্গে অমিত শাহর সভায় দেখা গিয়েছিল বর্ধমান পূর্বের তৎকালীন সাংসদ তৃণমূলর সুনীল মণ্ডলকে। বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন সুনীল। ভোটপর্ব মেটার পরে ২০২১ সালের এপ্রিলে কার্যত ‘চুপি চুপি’ সংসদে পেগাসাস আন্দোলনের সময়ে তৃণমূল সাংসদদের দলে কালো জামা পরে মিশে যান তিনি। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে দল তাঁকে প্রার্থী করেনি। প্রচারে নামার জন্য তেমন নির্দেশ আসেনি। ‘অভিমানী’ বিদায়ী সাংসদের বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে দু’টি গাড়ি নিয়ে হাজির হন দিলীপ। প্রায় ঘণ্টাখানেক থেকে গভীর রাতে উল্লাসের আবাসন ছাড়েন তিনি। সুনীলের বাড়িতে জন্মদিন পালনের পরে দুই বিদায়ী সাংসদের মধ্যে গোপন বৈঠকও হয়।
হঠাৎ করে সুনীলের কাছে কেন? দিলীপের দাবি, “আমরা পুরনো বন্ধু। দেখা করে চা খেলাম, কেক কাটল, কথা-গল্প হল।” রাজনৈতিক আলোচনাও হয়েছে মেনে নিয়ে দিলীপের সংযোজন, “অনেক দিন আগে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। তখন বর্ধমানের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কাল সময় ছিল, সন্ধ্যার সময় ওঁর বাড়ি ঘুরে এলাম।” একই সঙ্গে সুনীলের বিজেপিতে যোগ প্রসঙ্গে ধোঁয়াশা রেখে তাঁর দাবি, “এর আগে অনুরোধ না করতেই চলে এসেছিলেন। এখন দেখা যাক কী করেন, কোথায় যান? আমি কাউকে আসতে বলি না। এলে নিয়ে নিই খালি।”
শুক্রবার সকালে চা খাওয়ার ফাঁকে সুনীল বলেন, “দুর্গাপুরে ডিভিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে। ন’হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এই টাকা নিয়ে আসা থেকে শিলান্যাস সবটাই আমার হাতে হয়েছে। সেটা জেনেই বিজেপি প্রার্থী আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। এই বাড়িতে তিনি আগেও এসেছেন। জন্মদিন জানার পরে কেক কাটাটা সৌজন্য। তা ছাড়া আমি বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা ভোটার, সেই ফাঁকে ভোটটাও চেয়ে গেলেন।” দল প্রার্থী করেনি। প্রচারেও নামছেন না। তাহলে কি ফের বিজেপিতে? সুনীল বলেন, “আমি রাজনীতি থেকে দূরে আছি। সে ভাবে রাজনীতির কথা হয়নি। তবে আমি তৃণমূলের হয়ে প্রচারে নামছি না। কারণ খারাপ ফল হলে আমাকেই কাঠগড়ায় তোলা হবে।”
সুনীলের দলবদল নতুন নয়। ২০১১ সালে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে গলসি বিধানসভায় জেতেন কাঁকসার ‘মাস্টারমশাই’। ২০১৪ সালে লোকসভার ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। টানা ১০ বছর তিনি বর্ধমান পূর্বের সাংসদ ছিলেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “উনি যে দলের বিশ্বাস রাখছেন না, তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল। তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যে যোগ ছিল, সেটা দল বুঝতে পেরেই প্রার্থী করেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy