রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
আর ঠিক দু’সপ্তাহ পরে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। বিজেপি এবং বিরোধী পক্ষ, দুই শিবিরই মনে করছে, এখনও ভোটের তেমন ‘হাওয়া’ ওঠেনি। বিরোধী শিবিরের পক্ষে বিরাট জনসমর্থন তৈরি হয়নি সেটা ঠিক। কিন্তু বিজেপির পক্ষেও যে প্রবল ঢেউ উঠেছে, তা-ও নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী শিবিরের আশা, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে লোকসভা নির্বাচন একতরফা হবে এমন নয়।
রাহুল গান্ধী আজ কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন, ‘‘আমি ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নই। তবে আমার বিশ্বাস, যে রকম প্রচার হচ্ছে, সেই তুলনায় অনেক বেশি, সমানে সমানে টক্কর হবে।’’
১০ বছর আগে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, তার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ‘অচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ন দেশকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ঠিক আগে, পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে জঙ্গি হানা ও তার জবাবে বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযান দেশ জুড়ে জাতীয়তাবাদের আবেগ উস্কে দিয়েছিল। তেমন হাওয়া এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি। মোদী অবশ্য আগেই বলে রেখেছেন, বিজেপি ৩৭০ আসন জিততে চলেছে এবং ৫৪৩ আসনের লোকসভায় এনডিএ-র আসন সংখ্যা চারশো পেরিয়ে যাবে। উল্টো দিকে রাহুল রামলীলা ময়দানের জনসভায় দাবি করেছেন, ‘ম্যাচ-ফিক্সিং’ না হলে বিজেপি ১৮০-তে নেমে আসবে।
বিজেপি শিবিরের যুক্তি, রাহুলের দাবি ভিত্তিহীন। রামমন্দির ঘিরে দেশে হিন্দুদের মধ্যে আবেগ তৈরি হয়েছে। মোদী সরকারের কাজে সকলেই খুশি। সর্বোপরি বিরোধী শিবিরে নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প কেউ নেই। সেই কারণে বিজেপি ২০১৯-এর থেকেও বেশি আসনে জিততে চলেছে। আজ রাহুল পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়েও একই রকম আবহ তৈরি করা হচ্ছিল। ইন্ডিয়া শাইনিং-এর প্রচার চলছিল। এ বার তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাত্রা যোগ হয়েছে। কিন্তু সে বারের নির্বাচনে কে জিতেছিল, তা মনে করুন।’’
‘ইন্ডিয়া’র এক নেতার দাবি, ‘‘রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে হিন্দু ভাবাবেগ তৈরি হয়েছিল। তার পরে আড়াই মাস কেটে গিয়েছে। বিজেপি রামমন্দিরের আবেগে ভর করেই ভোটে উতরে যাবে ভেবেছিল। মনে হচ্ছে, বিজেপির হিসেবে ভুল হয়েছে।’’ বিরোধী শিবিরের নেতাদের দাবি, বিজেপিও এখন তা বুঝতে পারছে। আর সে কারণেই বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, যে কোনও বিরোধী নেতাকে বিজেপিতে টেনে এনে প্রার্থী করে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি নেতৃত্ব মরিয়া। কারণ উত্তর ভারতে গত ভোটেই বিজেপি খুব ভাল ফল করেছিল। সেখানে আর আসন বাড়ানোর সুযোগ নেই। কর্নাটক, বিহার, মহারাষ্ট্রেও বিজেপি বা এনডিএ-র যেমন আগের বারের মতো ভাল ফল করা কঠিন, তেমন সেখানে আসন কমলে দক্ষিণের অন্যান্য রাজ্য থেকে তা পূরণ করাও কঠিন।
কংগ্রেস নেতৃত্বের একটাই আশঙ্কা যে মোদী আগামী ১৪ দিনে নতুন বিষয় এনে বিজেপির পক্ষে প্রবল ঢেউ তৈরি করতে পারেন। তা হলে আর রাহুলের কথা মতো ‘সমানে সমানে টক্কর’ হবে না। বিজেপি নেতারাও সে দিকেই তাকিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy