Advertisement
Back to
Rahul Gandhi

‘রোজগার কি বাত’ শুনতে চায় দেশ, বলছেন রাহুল

কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, ইউপিএ-সরকারের একশো দিনের কাজের প্রকল্প বা রোজগারের ‘গ্যারান্টি’ আইন ২০০৯-এ কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফিরতে সাহায্য করেছিল।

Rahul Gandhi

সমর্থকদের মধ্যে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। শুক্রবার গুজরাতের দাহোড়ে ন্যায় যাত্রার ফাঁকে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩৫
Share: Save:

বেকারত্বকে দেশের মূল সমস্যা হিসেবে তুলে ধরে সমাধানে পাঁচটি ‘গ্যারান্টি’ ঘোষণার পরে আজ রাহুল গান্ধী মোদী সরকার উৎখাতের ডাক দিলেন। আজ ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা থেকে রাহুল গান্ধী স্লোগান তুলেছেন, দেশে আর ‘মন কি বাত’ চলবে না। এ বার ‘রোজগার কি বাত’ করতে হবে। তাঁর বক্তব্য, দেশের তরুণ ও কর্মসংস্থানের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা মোদী সরকারকে বেকারদের ক্ষোভ উৎখাত করবে।

গত কাল ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা থেকে ‘যুবদের জন্য ন্যায়’ হিসেবে কংগ্রেসের ক্ষমতায় এলে পাঁচটি প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছিলেন। নিয়োগের ভরসা তাতে কেন্দ্রে-রাজ্যে ৩০ লক্ষ শূন্য পদে নিয়োগের ‘গ্যারান্টি’ ছিল। প্রথম চাকরির পাকা ‘গ্যারান্টি’ হিসেবে স্নাতক, ডিপ্লোমা পাওয়ার পরে ১ লক্ষ টাকার ভাতা-সহ এক বছরের শিক্ষানবিশির ‘গ্যারান্টি’ ছিল। তার সঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস না হওয়ার ‘গ্যারান্টি’, গিগ-কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষায় আইনের ‘গ্যারান্টি’, জেলা স্তরে স্টার্ট-আপ তৈরিতে ৫ হাজার কোটি টাকার জাতীয় তহবিলের ‘গ্যারান্টি’ ছিল।

আজ কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল সমস্ত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে গোটা দেশে এ নিয়ে প্রচারে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছে। কংগ্রেস মনে করছে, বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তোলা ও তার সমাধান হিসেবে বিকল্প কর্মসংস্থানের নীতি লোকসভা ভোটের হাওয়া ঘুরিয়ে দিলেও দিতে পারে।

আজ রাহুল গান্ধী বলেছেন, “দেশের সব থেকে বড় সমস্যা বেকারত্ব। তা বিভিন্ন রিপোর্ট, পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট। দেশের তরুণরা বুঝতে পেরে গিয়েছেন, গত ১০ বছরে আবেগ ও বিভাজনের প্রশ্নে বিভ্রান্ত করে নরেন্দ্র মোদী সময় নষ্ট করেছেন। এই আক্রোশ দেশে আন্দোলনের রূপ নিতে চলেছে। নরেন্দ্র মোদী যতই অন্য দিকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করুন, তরুণরা শপথ নিয়ে ফেলেছেন, আর ‘মন কি বাত’ নয়, এবার ‘রোজগার কি বাত’ হবে।”

কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, ইউপিএ-সরকারের একশো দিনের কাজের প্রকল্প বা রোজগারের ‘গ্যারান্টি’ আইন ২০০৯-এ কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফিরতে সাহায্য করেছিল। একই ভাবে ২০২৪-এ শিক্ষানবিশির ‘গ্যারান্টি’ খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে শিক্ষানবিশির অধিকার আইন আনবে। ২৫ বছরের কমবয়সি স্নাতক, ডিপ্লোমাধারীরা চাইলে তাদের শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। মাসে ৮,৫০০ টাকার হিসেবে এক বছরে ১ লক্ষ টাকা ভাতা মিলবে। কংগ্রেসের বক্তব্য, বেসরকারি সংস্থার উপরে এটা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ১৯৬১ সালের শিক্ষানবিশি আইনেই এই ব্যবস্থা রয়েছে। তার ব্যাপ্তি বাড়িয়ে ৫০ লক্ষ শিক্ষানবিশির লক্ষ্য নেওয়া হবে। এখন মাত্র ৮ লক্ষ শিক্ষানবিশ নেওয়া হয়। একই সঙ্গে চাকরির পরীক্ষায় জালিয়াতি, প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে নির্দিষ্ট মানদণ্ড ঠিক হবে। বিজেপি নেতা অমিত মালবীয়ের কটাক্ষ, “ভারতের রাজনীতির মিস্টার বিন রাহুল গান্ধী জানেন না, গত সংসদের অধিবেশনে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে বিল পাশ হয়েছে। সেই আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গিয়েছে। সংসদে কী হচ্ছে, তাতে মন না দিলে সংসদে নির্বাচিত হয়ে লাভ কী? উনি যাতে ২০২৪-এ নির্বাচিত হয়ে না আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।”

কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার কমিটির প্রধান পি চিদম্বরমের পাল্টা যুক্তি, বিজেপির নখদন্তহীন আইনের সঙ্গে কংগ্রেসের আইনের প্রধান ফারাক হবে, এখানে পরীক্ষার্থীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ থাকবে। দোষীদের শাস্তি দিতে ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্ট তৈরি হবে। পাঁচ বছরে ৪১টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। কংগ্রেস শুধু প্রশ্নপত্র ফাঁসের পরে কড়া শাস্তির কথা বলছে না। প্রশ্ন ফাঁস যাতে না হয়, তার আগাম ব্যবস্থা তৈরি করতে চাইছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress Lok Sabha Election 2024 BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE