সুতির ছাপঘাটিতে জনসভায় মহিলাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
বিড়ি শ্রমিকদের মহল্লাতেই এলেন। কিন্তু বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না মুখ্যমন্ত্রী। অথচ সাগরদিঘিতে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে উপনির্বাচনের প্রচারে এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে গিয়েছিলেন, এক মাসের মধ্যে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির।এমনকি মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে দায়িত্ব দিয়ে যান দলের দুই বিড়ি মালিক নেতা খলিলুর রহমান ও জাকির হোসেনকে। সেই খলিলুরই এ বারও জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী। অভিষেকের সভার পরে দেড় বছর পেরিয়েও বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি কিন্তু থমকে রয়েছে ১৭৮ টাকাতেই। এর মধ্যে বাইরন বিশ্বাস কংগ্রেসের টিকিটে উপনির্বাচনে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
এ নিয়ে বিড়ি শ্রমিকদের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। ক্ষোভ রয়েছে মহল্লার অন্যত্রও। সম্প্রতি তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের দাদা সাজাহান বিশ্বাসও ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তিনিও বিড়ি শিল্পপতি। বাইরনের বাবা বিড়ি শিল্পপতি বাবর বিশ্বাস আবার সমর্থন করছেন নির্দল প্রার্থী আসাদুল শেখকে। আসাদুল সম্পর্কে বাইরনের মামাতো ভাই ও বাবরের ভাগ্নে। ১৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বিড়ি মালিক সাজাহান বিশ্বাসের। সাজাহান ও আসাদুল দু’জনেই জঙ্গিপুরে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে দাবি করেছেন, বিড়ি শ্রমিকদের শোষণ করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় বিড়ি শ্রমিক ও তাঁদের মজুরি নিয়ে কথা হবে, এমনটাই আশা করা হয়েছিল। তৃণমূলের একটি অংশও সে কথা ভেবেছিল। কিন্তু মমতার সে প্রসঙ্গে যাননি। তাতে বরং তৃণমূলেরই একটি অংশের দাবি, বিড়ি মহল্লায় এসে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ায় অনেকেই মনে ব্যথা পেয়েছেন।
জঙ্গিপুরের সুতি বিধানসভা এলাকায় প্রায় ৬৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নজর ছিল সম্ভবত সেই সংখ্যালঘু ভোটকে জোটবদ্ধ করে নিজের দিকে টেনে আনা। কারণ জঙ্গিপুরের এই লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী আব্দুস সাত্তারের নাতি মুর্তজা হোসেন। আশঙ্কা রয়েছে বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত এই এলাকায় মজুরি নিয়ে ক্ষোভের জেরে একটা মোটা অঙ্কের ভোট এ বারে যেতে পারে কংগ্রেসের দিকে। সম্ভবত সংখ্যালঘু ভোটের বিভাজন রুখতেই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সুর চড়িয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে।
সুতিতে মমতার দাবি, “যতই জবরদস্তি করুক, এ বার বিজেপির ২০০ আসনও পেরোবে না। আমাদের বাংলায় আমরাই একাই একশো। বিজেপির সঙ্গে যদি লড়তে হয় তবে তৃণমূলই হচ্ছে মূলশক্তি।”
এ দিনের সভায় মমতা এসে পৌঁছনোর পর থেকে চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয় উপস্থিত জনতার মধ্যে। এক সময় তা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিদায়ী সাংসদ খলিলুর ও মন্ত্রী আখরুজ্জামানকেও মঞ্চ থেকে পাঠানো হয় সেখানে। বিশৃঙ্খলার জন্য একাধিক বার বক্তৃতা থামাতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy