—প্রতীকী ছবি।
আগে তাঁদের বাড়িতেও ভোট চাইতে যেতেন প্রার্থীরা। এলাকায় সভা হত। তখন অবশ্য এ-পার ও-পার বলে কিছু ছিল না। ছিল না কাঁটাতারের বেড়া।
আব্দুল শহিদ, বীরেন্দ্র নমঃশূদ্র, বিপুল দাসেদের আক্ষেপ, এখন আর কেউ গেট পেরিয়ে তাঁদের কাছে যান না, ভোটও চান না। তবু সকাল হলেই শহিদ-বীরেন-বিপুলেরা ভোটের লাইনে দাঁড়ান। দেশভাগ তাদের নাগরিক সুখসুবিধার অনেকটাই কেড়ে নিয়েছে। ভোট না দেওয়ার কারণে ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা পড়লে নাগরিকত্বটাও না কাটা যায়। শুক্রবার লোকসভা নির্বাচনেরও তাই এর ব্যতিক্রম হবে না।
করিমগঞ্জ জেলার লাফাশাইলের আব্দুল শহিদ বলেন, সস্তা দরে জমি কিনে কিংবা সরকারি অনুদানে তাঁরা এই তারের বেড়া পেরিয়ে বাড়ি করেছেন, তা আদৌ নয়। এক সময় এঁরা ছিলেন মূল ভূখণ্ডের নাগরিক। কিন্তু সাতচল্লিশের দেশভাগ তাঁদের প্রথমে প্রান্তিক করে, এখন তাঁদের পরিচয় নো-ম্যানস ল্যান্ডের বাসিন্দা। ভারতের নাগরিক হলেও কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে তাদের মূল ভূখণ্ডে আসতে হয়। স্বীকার না করলেও কথাবার্তায় বেরিয়ে আসে, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের সঙ্গেই এখন অনেকের যোগাযোগ বেশি।
অসমের করিমগঞ্জ আসনে ৯২ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিধি মেনে জিরো পয়েন্ট থেকে দেড়শো গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে ভারত সরকার। তখনই বহু গ্রাম বা গ্রামের অংশ ও-পারে চলে যায়। স্থানে স্থানে গেট তৈরি করা হয়েছে। বিএসএফ নির্দিষ্ট সময়ে গেট খুলে দেয়, বন্ধ করে। সূর্যাস্তের পর অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া গেট খোলা বারণ। গোবিন্দপুরের বীরেন্দ্র নমঃশূদ্র, বিপুল দাস বললেন, নিজেদের দিনমজুরের কাজে যাওয়া, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো, যুবাদের বিয়ে— সবেতেই মুশকিল। কিন্তু এখনও গোবিন্দপুর, লাতুকান্দি, জরাপাতা, লাফাশাইল, লামাজুয়ার, মহিশাসন, ও জবাইনপুর— এই আট গ্রামের ৭০০-র বেশি মানুষ পূর্বপুরুষের ভিটেয় রয়ে গিয়েছেন।
এ তো গেল কাঁটাতারের ওপারের কথা। এ পারেও কি ভোটের ইস্যুতে নাগরিক সমস্যা গুরুত্ব পাচ্ছে? করিমগঞ্জ কলেজের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক সব্যসাচী রায় বললেন, রাজনীতিটা বদলে গিয়েছে। সবাই ধর্মের অঙ্কেই হিসেব কষছেন।
করিমগঞ্জ জেলার মোট ভোটার ১৪,৩৭,০০০। সব্যসাচীর হিসেব, হিন্দুদের চেয়ে মুসলিম ভোট দুই লক্ষ বেশি। কিন্তু দুই শক্তিশালী মুসলিম প্রার্থী থাকায় জটিল হিসেব। এর মধ্যে মাইমাল সম্প্রদায়ের নেতা সেলিমুদ্দিন জানান, উচ্চ বর্ণের মুসলিমরা সব সময়ে তাদের তাচ্ছিল্য করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy