Advertisement
Back to
Narendra Modi on his Bengali Pronunciation

মোদীর মুখে রাজ্য সঙ্গীত, যাদবপুরে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ শুনিয়ে তাঁর উচ্চারণের ত্রুটিও মানলেন

দেশের সিংহভাগে বিজয়রথ চালানো বিজেপির নেতারা বাংলায় এসে ধাক্কা খেয়েছেন ‘বহিরাগত’ শব্দবন্ধের কাছে। বাংলায় মোদী-শাহরা যতই আবেগ উজাড় করুন, বাংলা উচ্চারণ সংশোধনের নিদান খুঁজতে পারেননি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  মঙ্গলবার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বারুইপুরে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বারুইপুরে। ছবি: ফেসবুক।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৪ ২০:১২
Share: Save:

রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করে প্রায় এক নিঃশ্বাসেই নিজের বাংলা উচ্চারণের জন্য বাঙালি দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

মঙ্গলবার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলার রাজ্য সঙ্গীত ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ আবৃত্তি করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম ছত্র শেষ হওয়ার পরে প্রায় না থেমেই মোদী বলেন, ‘‘আমার উচ্চারণ দোষ আপনারা ক্ষমা করবেন।’’

পশ্চিমবঙ্গে এসে এর আগেও নিজের বক্তৃতায় রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করেছেন মোদী। পাশাপাশি বাংলা সম্ভাষণ, বাংলা স্লোগান, এমনকি, এ বছর লোকসভা ভোটের প্রচারে নিজের বক্তব্যের বাংলা তর্জমাও শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে। অনভ্যস্ত অবাঙালি উচ্চারণে সেই সমস্ত বাংলা কথা অন্য মাত্রা পেয়েছে। বিকৃত হয়েছে কিছু শব্দও। তবে এই প্রথম নিজের উচ্চারণের ত্রুটির জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

দেশের সিংহভাগে বিজয়রথ চালানো বিজেপির শীর্ষ নেতারা বরাবর বাংলায় এসে ধাক্কা খেয়েছেন ‘বহিরাগত’ শব্দবন্ধের কাছে। বাংলায় মোদী বা অমিত শাহেরা যতই আবেগ উজাড় করে দিন, যতই শাসকদলের দুর্বলতাকে সবলে আক্রমণ করুন, বক্তৃতায় বাংলা উচ্চারণ সংশোধনের কোনও নিদান খুঁজতে পারেননি। সম্ভবত চানওনি। তাই শাহের বক্তৃতায় ‘সোনার বাংলা’ বার বার হয়ে গিয়েছে ‘সুনার বাংলা’। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বাংলার শাসকদল তৃণমূল। কিন্তু মোদী বা শাহ— কাউকেই এত দিন নিজেদের উচ্চারণের জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূর, সে ভাবে সংশোধন করতেও দেখা যায়নি। মোদী এক ভাবে তাঁর মতো করে ভাঙা বাংলা বলে গিয়েছেন। আর শাহ বাংলা বলার চেষ্টাই করেননি। কিন্তু মঙ্গলবার সেই চেষ্টা দেখা গেল মোদীর বক্তৃতায়।

মঙ্গলবার মোদী ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ কবিতার প্রথম কয়েকটি পঙ্‌ক্তি নিখুঁত উচ্চারণ করেছিলেন। কিন্তু শেষ ভাগে এসে গোল বাধে। ‘পুণ্য হউক পুণ্য হউক পুণ্য হউক হে ভগবান’ না বলে তিনি বলেন, ‘‘পুণ্য হউক পুণ্য হউক পুণ্য হউক কে...’’। তার পরে অবশ্য থমকে যান। শুধরে নিয়ে বলেন, পুণ্য হউক হে ভগওওবান। এর পরেই মোদীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ম্যায় মেরি উচ্চারণ দোষকে লিয়ে আপ সে ক্ষমাপ্রার্থী রহুঙ্গা।’’

কিন্তু হঠাৎ এই উচ্চারণ বোধ জাগ্রত হল কেন? দেশের লোকসভা ভোট প্রায় দেড় মাস ধরে চলার পরে এখন শেষ পর্যায়ে। আর বাকি শুধু সপ্তম দফার ভোট। এর আগে বাকি ছ’দফা ভোটে রাজ্যে অন্তত ছ’বার প্রচারে এসেছেন মোদী। কিন্তু উচ্চারণের জন্য ক্ষমা চাইলেন শেষ দফায়। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ এর ব্যাখ্যা করে বলছেন, বাংলায় আগামী ১ জুন এই সপ্তম দফায় ভোট হবে উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর, দমদম, বসিরহাট, বারাসত, জয়নগর, মথুরাপুর এবং ডায়মন্ড হারবারে। এর মধ্যে পাঁচটি আসন শহর কলকাতা অথবা তার লাগোয়া। যেখানে শিক্ষিত বাঙালি ভোটারের আধিক্য বেশি। মোদী সম্ভবত এই ভোটারদের কথা ভেবেই নিজের উচ্চারণ শুধরে নিতে চেয়েছেন।

যদিও রাজনীতিবিদদের অন্য একটি অংশ মনে করছেন, এ বারের ভোটে বাংলায় আরও বেশি আসন আশা করছে বিজেপি। আর তাই বাংলায় তাদের সবচেয়ে বড় নেতিবাচক যে বিষয়টি সেই অবাঙালিত্ব ঘোচানোর প্রয়াস শুরু করেছে তারা। নিজেদের উপর থেকে ‘বহিরাগত’ ট্যাগলাইন মুছে ফেলতেই প্রয়াসী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে তাঁর বক্তৃতায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy