নিহতের বাড়িতে শেখ সাহানেওয়াজ। —নিজস্ব চিত্র।
এখনও থমথমে কেতুগ্রামের চেচুড়ি। ভোটের দিন কেটেছে অশান্তি ছাড়া। তবে তার আগের রাতে গ্রামে পরোপকারী বলে পরিচিত তৃণমূল কর্মী মিন্টু শেখের খুনের ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সিপিএমের চক্রান্তে এই ঘটনা। যদিও নিহতের পরিজন, প্রতিবেশীদের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলেই খুন হতে হয়েছে মিন্টুকে।
মঙ্গলবার বিকেলে ওই গ্রামে যান কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ। সঙ্গে ছিলেন কেতুগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ মুখ্যোপাধ্যায়। বিধায়ক প্রথমে গ্রামের একটি ক্লাবের সামনে পৌঁছন। সেখানে একটা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রচুর গ্রামবাসীও ছিলেন। খুনের ঘটনায় দোষীদের যে ছাড়া হবে না সেই আশ্বাস দেন বিধায়ক। নতুন করে কোনও অশান্তি যাতে না হয়, তার জন্য গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানোর দাবিও ওঠে। প্রায় আধ ঘণ্টা এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পরে বিধায়ক মিন্টুর বাড়িতে যান। তাঁকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। দলের দলাদলিতে যে একটা জীবন চলে গেল, মেনে নিতে পারছেন না কেউই। বিধায়ক জানান, প্রকৃত দোষীদের রেয়াত করা হবে না। ওই পরিবারকে সব রকমের সাহায্য করা হবে বলেও আশ্বাস দেন। রবিবার রাতে মিন্টুর সঙ্গে মোটরবাইকে ছিলেন নজরুল শেখ ওরফে মিশি নামে এক ব্যক্তিও। তিনিও বোমাবাজিতে আহত হন। মিশি বহরমপুর হাসপাতালে ভর্তি বলে জানা গিয়েছে। পরিবারের দাবি, তাঁর অবস্থাও সঙ্কটজনক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের আগের দিন রাত ৯টা নাগাদ মিন্টু সুবিপুর গ্রাম থেকে দলীয় কাজ সেরে বন্ধু মিশিকে মোটরবাইকে চাপিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। গ্রামে ঢোকার মুখে ফাঁকা জায়গায় তাঁদের লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। দু’জনেই বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যান। মিশি কোনও রকমে জমির আল ধরে পালিয়ে যেতে পারলেও মিন্টুকে ধরে ফেলে দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু নিশ্চিত করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
চেচুড়ি গ্রামের বাসিন্দা কাদের শেখের অভিযোগ, “মিন্টু আমাদের গ্রামে তৃণমূলের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছিল। এটাই তাঁর কাল হল। উত্থান মেনে নিতে না পেরেই এলাকারই কয়েক জন লোক পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে ওকে। বিধায়ককে জানিয়েছি আমরা।’’ নিহতের স্ত্রী তুহিনা খাতুনও বলেন, “আমার স্বামীকে যারা খুন করেছে তারা যেন ছাড়া না পায় সেই দাবি জানিয়েছি। আশা করব দল পাশে থেকে বিচার পেতে সাহায্য করবে।’’ সোমবার দশ জনের নামে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। অভিযুক্তেরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত।
কেতুগ্রামের বিধায়ক বলেন, “মিন্টু আমাদের একজন দক্ষ কর্মী ছিলেন। সিপিএমের চক্রান্তের জেরে তাঁর খুন আমিও মেনে নিতে পারছি না। গ্রামে গিয়ে কথা বলেছি। শোর্কাত পরিবারের পাশে রয়েছি।” যদিও গোড়া থেকেই অভিযোগ মানেনি সিপিএম। কেতুগ্রামের সিপিএম নেতা মিনাজুল কবীর ধীরাজ বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে যে ওই খুন মৃতের পরিবার থেকে শুরু করে এলাকার সবাই তা জানেন।’’
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামে নতুন করে কোনও অশান্তি হয়নি। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy