Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

‘ইন্ডিয়া’র সভার ভাবনা, দূরত্বই রাখছে তৃণমূল

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘর থেকেই তৃণমূল এবং কংগ্রেসের কাছাকাছি আসার সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল এক সময়।

দিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক। —ফাইল চিত্র।

দিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক। —ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়, প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:৪৫
Share: Save:

মাত্র পাঁচ সপ্তাহ আগেও সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র যে সুখী পরিবারের ছবি ধরা পড়েছিল, তার লেশমাত্র রইল না চলতি বাজেট অধিবেশনে। বরং প্রকট হয়ে উঠেছে সম্পর্কে চিড়, অনাস্থা, একলা চলার ছবি।

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘর থেকেই তৃণমূল এবং কংগ্রেসের কাছাকাছি আসার সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল এক সময়। চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগের এই শেষ অধিবেশনে সেই চিত্রকেই উজ্জ্বলতর করে দেখানোর দায় ছিল বিরোধীদের, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু বিজেপি-বিরোধী ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দেওয়া দূরস্থান, তৃণমূল, কংগ্রেস ও অন্য দলগুলির মধ্যে বিচ্ছিন্নতাই সামনে চলে এল বার বার।

কংগ্রেস শিবিরের পরিকল্পনা, এই মাসের শেষে অথবা রাহুল গান্ধীর ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ শেষ প্রান্তে (মহারাষ্ট্রে) পৌঁছনোর পর ‘ইন্ডিয়া’র একটি জনসভা করার। রাহুলের ন্যায় যাত্রার শেষ ভাগেও সবাইকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা এক বার ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তা হলে কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে বিরোধীদের ডাকা হচ্ছে— এমন বার্তা যেত। তাই এখন মুম্বইয়ের সভা নিয়ে বিভিন্ন বিরোধী দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও শুরু হয়েছে বলে খবর। কিন্তু তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “আমাদের সঙ্গে সভা নিয়ে কথাই হয়নি। আর হওয়ার কথাও নয়। আমাদের অগ্রাধিকার ছিল আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করা সব রাজ্যে। দ্বিতীয়ত, কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখ দিয়ে না দেখে যদি অধীর চৌধুরীর চোখ দিয়ে দেখতে চায়, আমাদের আর কী বলার থাকে।”

কর্নাটকেও কংগ্রেস সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে একটি আলোচনা সভায় ‘ইন্ডিয়া’র বিভিন্ন সদস্যকে ডাকতে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে এ ব্যাপারেও তৃণমূলের কাছে কোনও আমন্ত্রণ এখনও নেই বলের দলীয় সূত্রের বক্তব্য। পরিস্থিতি এমনই যে মুম্বই হোক বা কর্নাটক — ডাক পেলেও তৃণমূলের কোনও শীর্ষ পর্যাযের প্রতিনিধির যোগ দেওয়ার কোনও সম্ভাবনাই এই মুহূর্তে নেই। কেউ আদৌ যাবেন কি না, সে ব্যাপারেও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

১ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মল্লিকার্জুন খড়্গের সংসদীয় অফিসে ইন্ডিয়ার সদস্যদের ডাকা হয়েছিল। সেই আমন্ত্রণ যে শুধু তৃণমূলই প্রত্যাখ্যান করেছে তা-ই নয়, বৈঠকে যায়নি ‘ইন্ডিয়া’র ভিতরে সেই ‘জিঞ্জার’ গোষ্ঠীও। অর্থাৎ এসপি, আপ-এর সংসদীয় নেতারাও ছিলেন অনুপস্থিত। সূত্রের খবর, তৃণমূলের পক্ষ থেকে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, ‘তাঁদের যেন মাফ করা হয়। তাঁরা যেতে পারবেন না।’ কারণ, হিসেবে শুধু মাত্র অধীরের নামোল্লেখটুকু করা হয়েছে বলে খবর।

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ককে মসৃণ রাখার প্রশ্নে কংগ্রেসের তরফেও গাফিলতি দেখানো হয়েছে । তৃণমূল শিবিরের পক্ষ থেকে বারবার বার্তা দেওয়া হয়েছে, আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার জন্য। এটাও বলা হয়েছিল, যদি সনিয়া গান্ধী নিজে ফোন করেন, তা হলে দু’টির বদলে তিনটি আসন দেওয়া যায় কি না তা ভেবে দেখা হবে। কিন্তু কংগ্রেসের নেতারা কোনও সেতুই তৈরি করেননি, বিলম্ব করেছেন। আর মুখে আগাগোড়া বলে এসেছেন, তৃণমূল ‘ইন্ডিয়া’তেই রয়েছে। সম্প্রতি রাহুল গান্ধীও বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও ‘ইন্ডিয়া’য় রয়েছেন। আসন নিয়ে কথা চলার সময় নানা রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। এগুলি মিটে যাবে।

কিন্তু তা মেটার যে কোনও লক্ষণই নেই তা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায় স্পষ্ট। তাঁর বক্তব্য, “অবশ্যই আমরা ইন্ডিয়া জোটে রয়েছি। এবং তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে বিয়াল্লিশটি আসনে একা লড়বে। আমাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে অ-কংগ্রেসি বিরোধী দলেরই কক্ষ সমন্বয় রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমন্বয় নেই।”

সূত্রের খবর, কংগ্রেস নেতৃত্বও বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বুঝে গিয়েছেন যে ‘ইন্ডিয়া’ বেসুরে বাজছে। তাই সংসদে যৌথ কর্মসূচি করার চেষ্টা করে আরও ল্যাজেগোবরে হতে চায়নি তারা। নিজেদের মতো বিজেপি বিরোধিতা করেছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy