Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

বহুমুখী আন্দোলনের মুখ এবার ভোটের ময়দানে

কোলাঘাটের বাঁকাডাঙার বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র। পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক। কলেজে পড়াকালীন তিনি ছাত্র সংগঠন ডিএসও করতেন।

প্রচারে নারায়ণচন্দ্র নায়ক।

প্রচারে নারায়ণচন্দ্র নায়ক। নিজস্ব চিত্র।

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৫৯
Share: Save:

রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে একটা। তিনি এসইউসির জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর একজন সদস্য। তবে নিজের জেলা তথা এলাকায় এই রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও একাধিক পরিচয় রয়েছে নারায়ণচন্দ্র নায়কের। কখনও তিনি জেলার ফুল চাষিদের সংগঠনের নেতা। কখনও তিনি চাষিদের দাবিদাওয়া আদায়ে সরব। আবার কখনও নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেদিনীপুর জেলায় বন্যা, ভাঙন, খরা প্রতিরোধের কমিটিকে।

এই ‘প্রতিবাদী মুখে’র আরেকটা নতুন পরিচয় যোগ হয়েছে, তিনি তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের এসইউসি’র প্রার্থী। প্রতিপক্ষ হিসাবে রয়েছেন বিজেপির প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সিপিএমের প্রার্থী আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য। তবে জেলা তথা রাজ্যের বহুমুখী আন্দোলনের নেতা নারায়ণচন্দ্রকে প্রার্থী ঘোষণা করায় উচ্ছ্বসিত এসইউসি কর্মীরা। এসইউসির উত্তর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক প্রণব মাইতি বলেন, ‘‘নারায়ণবাবু প্রকৃত সমাজসেবী। দলের একনিষ্ঠ কর্মী। ওঁর মতো একজন প্রার্থী হওয়ায় আমরা খুশি।’’

কে এই নারায়ণচন্দ্র নায়ক?

কোলাঘাটের বাঁকাডাঙার বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র। পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক। কলেজে পড়াকালীন তিনি ছাত্র সংগঠন ডিএসও করতেন। আর যখন বাড়িতে থাকতেন, তখন এসইউসির হয়ে কাজ করতেন। এক সময় নারায়ণচন্দ্র এসইউসি’র লোকাল কমিটির সদস্য ছিলেন। বর্তমানে সংগঠনের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য। তবে জেলায় বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য একাধিক সংগঠন গড়ে প্রতিবাদের এক চেনা মুখও হয়ে উঠেছেন কোলাঘাটের এই বর্ষীয়ান নেতা।

কৃষকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষে ১৯৮৪ সালে অবিভক্ত মেদিনীপুরের কৃষকদের নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন কৃষক সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি সংগঠন। সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক। রাজ্যের ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ীদের সংঘবদ্ধ করতে ১৯৯৭ সালে গড়েছেন ‘সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি’। ১৯৯৯ সালে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট মল্লিকঘাট ফুলবাজার উচ্ছেদে উদ্যোগী হয়েছিল। ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির আন্দোলনের জেরে সেই বাজার আজও উচ্ছেদ হয়নি।

মেদিনীপুরে এক সময় হামেশাই বন্যা হতো। ১৯৯৭ সালে ভয়াবহ বন্যার পর নারায়ণচন্দ্র জেলা বন্যা ভাঙন, খরা প্রতিরোধ কমিটি তৈরি করেছিলেন। রাজ্য রাজনীতিতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান একটি বহুল চর্চিত বিষয়। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের দাবিতে ১৯৯১ সালে ঘাটাল মহকুমা বন্যা প্রতিরোধ কমিটি নামে একটি সংগঠন আন্দলনে নামে। সেই আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন নারায়ণচন্দ্র। ২০০১ সালে ঘাটাল মহকুমা বন্যা প্রতিরোধ কমিটি ভেঙে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক পদে রয়েছেন নারায়ণচন্দ্র। তিনি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন ‘অ্যাবেকা’রও রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য। এছাড়া, কোলাঘাট এলাকায় বেআইনি ভেড়ি, মাদক, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ রোধের মতো সমস্যায় সব সময় এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে এই এসইউসি নেতাকে।

এবার লোকসভা নির্বাচনে পা রাখলেও এই ময়দানে লড়াই নতুন কিছু নয় নারায়ণচন্দ্রের কাছে। আগে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ এবং বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। কোনও নির্বাচনেই জয় পাননি। কিন্তু তাই বলে লোকসভার লড়াই থেমে নেই। সকাল হলেই সাইকেল চড়ে বেরিয়ে এলাকাবাসীর খোঁজ নেওয়া নারায়ণচন্দ্রের ‘ডেলি রুটিন’। নিজের জমি-জমা ভাগ চাষিদের দিয়ে রেখেছেন। আর তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিজের দল এবং তাঁর গড়ে তোলা বিভিন্ন কমিটির কাজকর্ম নিয়ে মেতে থাকেন। স্ত্রী বাসন্তী নায়ক একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের কর্মচারী। মূলত স্ত্রীয়ের আয়েই সংসার চলে।

কোনও ভোট-যুদ্ধে জয় পাননি। এবার লড়াই তো আরও কঠিন!

নারায়ণচন্দ্র অবশ্য বলছে, ‘‘মানুষের কাছে আমার দলের কথা, আন্দোলনের কথা নিয়ে পৌঁছব। মানুষ যা রায় দেবে, তা মেনে নেব। এখানে হার-জিতটা বড় নয়। সবচেয়ে বড় কথা হল জন সাধারণের সমস্যা মেটাতে আমরা কতখানি ওদের পাশে থাকছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 SUCI Tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy