—প্রতীকী চিত্র।
বিক্ষিপ্ত কিছু গোলমাল ছাড়া মোটের উপর নির্বিঘ্নেই মিটল নদিয়ার দুই লোকসভা কেন্দ্রের ভোট।
সকালের দিকে কিছু ইভিএম বিগড়োনো ছাড়া আয়োজনে বড় গোলমাল তেমন কিছু ছিল না। তবে সাত দফার ভোটে চতুর্থ দফায় এসে সোমবারই প্রথম রক্ত ঝরল। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের দুই জায়গায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে দু’জনের মাথা ফাটে। দুপুরে আবার তেহট্টের রামজীবনপুরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে ছ’জন আহত হন। সন্ধ্যায় আবার শান্তিপুরে মারধরে জখম হয়েছেন বিজেপি সমর্থক। এ ছাড়া ভুয়ো ভোটার বা পুলিশকর্মীর তৃণমূল এজেন্ট হিসেবে বুথে বসার অভিযোগও উঠেছে। বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন রানাঘাট কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। কিন্তু কোথাও বড়সড় গোলমাল বা ভোট লুটের ঘটনা ঘটেনি।
পুরোদস্তুর কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করা এই নির্বাচনে পঞ্চায়েত ভোটের সন্ত্রাসের পরিস্থিতি এড়ানো যাবে কি না, আধা সেনা কতটা সক্রিয় হতে পারবে, তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় ছিল। কিন্তু প্রায় সর্বত্রই তাদের সক্রিয়তা চোখে পড়েছে, আবার অতিসক্রিয়তার অভিযোগও উঠেছে কোথাও-কোথাও। সকালের দিকে ভোটদানের গতি কিছুটা মন্থর থাকলেও দিনের শেষে দুই কেন্দ্রেই ভোটদানের হার ৮০ শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েছে। যদিও ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও দু’একটি জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত গোলমালের খবর এসেছে।
এ বার দুই কেন্দ্রেই দু’রকম লড়াই লড়তে নেমেছিল তৃণমূল। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে ফের জেতানোর চ্যালেঞ্জ এবং বিজেপির হাত থেকে রানাঘাট কেন্দ্র পুনরুদ্ধারেরর চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে কৃষ্ণনগরে বাম-কংগ্রেস জোট সংখ্যালঘু ভোট ভেঙে বিপদে ফেলতে পারে, এমন আশঙ্কা তাদের ছিলই। বিশেষত গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেরা অনেকটা ঘুরে দাঁড়ানোর পরে। সকাল থেকেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের বহু জায়গায় তৃণমূল এবং জোটের টক্কর চলেছে। তার জেরে সংঘর্ষও হয়েছে। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র দাবি, “পুলিশ-প্রশাসন আর একটু সক্রিয় হলে এই সব ঘটনা আটকানো যেত। তৃণমূলের ভোট লুটের চেষ্টার বিরুদ্ধে বিজেপি কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল।” আবার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের দাবি, “তৃণমূল বহু জায়গায় আমাদের ভোটারদের বাধা দিয়েছে। প্রতিরোধের কারণে অনেক ক্ষেত্রে পেরে ওঠেনি।” তবে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান পাল্টা বলেন, “বিরোধীরা কোথাও কোথাও অশান্তি করার চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষ তাদের রুখে দিয়েছ।”।
সেই তুলনায় রানাঘাটে বামেদের ভোটের ময়দানে তেমন মরিয়া মেজাজে দেখা যায়নি। বরং টক্কর হয়েছ বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলেরই। এই কেন্দ্রে শুরু থেকেই ভোটপর্ব ছিল নাটকীয়তায় মোড়া। বিজেপির অন্যতম মতুয়া-মুখ, রানাঘাট দক্ষিণের দলীয় বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী ফুল বদলে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন। আর ভোটের দু’দিন আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী, বর্তমানে আলাদা থাকা স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। এ দিন ভোট দিতে গিয়ে তিনি তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। সন্ধ্যায় মুকুট দাবি করেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী অনেক জায়গাতেই অতি সক্রিয় ছিল। বেশ কিছু বুথে আমাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। সকালের পরিবর্তে মহিলাদের দুপুরে ভোট দিতে আসতে বলে বাহিনী। আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। জয়ের বিষয়ে আমি নিশ্চিত।”
আবার জগন্নাথের দাবি, “আমি চার লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হব।” আর, সিপিএম প্রার্থী অলকেশ দাস বলেন, “বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া ভোট অবাধ হয়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy