Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

সিপিএম চাঙ্গা হোক, চাইছে তৃণমূল শিবির

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কালীদাসের অবশ্য দাবি, “বড়জোড়া এলাকায় জিততে আমাদের কারও উপরে নির্ভর করতে হবে না। দলের সাংগঠনিক শক্তিই যথেষ্ট।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বড়জোড়া শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৯:০৪
Share: Save:

পথে এ বার নামো সাথী— সলিল চৌধুরীর জনপ্রিয় এই গণসঙ্গীত সিপিএমের সভা-মিছিলে প্রায়ই শোনা যায়। তবে বড়জোড়ার অলিগলিতে উলটপুরাণ দেখা যাচ্ছে। তৃণমূল কর্মীদের মুখে মুখে ঘুরছে ওই গণসঙ্গীত। তাঁরা জানাচ্ছেন, ভোট বাজারে সিপিএমকে চাঙ্গা করতেই নাকি সলিলবাবুর গণসঙ্গীত তাঁদের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, বড়জোড়া কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীকে এগিয়ে রাখতে তৃণমূলের বড় ভরসা হল সিপিএম-ই!

বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই, গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে নজর রাখলেই বোঝা যায়, বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলক মুখোপাধ্যায়ের কার্যত ডুবতে থাকা নৌকাকে পাড়ে তুলতে বকলমে সাহায্য করেছিল সিপিএম। ওই ভোটে অলক জিতেছিলেন ৩,২৬৯ ভোটে। ২০১৯-এর লোকসভায় বড়জোড়া বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের ভোট ছিল ২৩,১৭১। ২০২১-এ সেই ভোটই বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজার ২৩৫। আর তাতেই অল্প ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থীর ঘুড়ি কেটে জয়ের হাসি ফোটে তৃণমূল শিবিরে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

তৃণমূলের দাবি, এ বার লোকসভা ভোটে সিপিএম নিজের ভোট ধরে রাখতে পারলেই এই বিধানসভা কেন্দ্রে বৈতরণী পার কার্যত নিশ্চিত। আর তাই সিপিএম কোথায়, কেমন প্রচার চালাচ্ছে তার উপর নিয়মিত নজর রাখছে তৃণমূল। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, কিছু জায়গায় সিপিএম সে ভাবে প্রচারই চালাচ্ছে না।

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কালীদাসের অবশ্য দাবি, “বড়জোড়া এলাকায় জিততে আমাদের কারও উপরে নির্ভর করতে হবে না। দলের সাংগঠনিক শক্তিই যথেষ্ট। কর্মীরা সবাই এক জোট হয়ে প্রার্থীকে জেতাতে আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছেন।” তবে তৃণমূলের বড়জোড়া ব্লকের এক নেতা ঘনিষ্ঠ মহলে আক্ষেপ করছেন, ‘‘মানাচর, ঘুটগোড়িয়া শিল্পাঞ্চলের মতো কয়েকটি জায়গায় সিপিএম সে ভাবে সক্রিয় হয়ে প্রচারই চালাচ্ছে না।” পাল্টা সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরী বলছেন, “আমরা ঠিক ভাবেই কাজ করছি। তৃণমূলেরই একটা অংশ বরং গোপনে বিজেপির হয়ে কাজ করছে। আগে নিজেদের ঘর সামলাক তৃণমূল, পরে আমাদের দিকে নজর দেবে।”

সিপিএমকে পাশে চান বিজেপি নেতৃত্বেও। তাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে কর্মসংস্থান তৈরিতে ব্যর্থতার কথা বলতে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের মুখে শোনা যায়, ‘‘এখানে কলকারখানা যা হয়েছে সব বাম আমলেই। তৃণমূল একটাও বড় শিল্প আনতে পারেনি। তাই এখানকার মানুষকে বাইরে কাজের খোঁজে যেতে হচ্ছে।” তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের পাল্টা দাবি, ‘‘ওঁর মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে গিয়েছে বলেই ভুল বকছেন। এখানে যা কারখানা হয়েছে, সবই তৃণমূলের আমলে।’’

বড়জোড়ার প্রত্যন্ত এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। কখনও স্থানীয় বধূদের সঙ্গে কলসিতে জল ভরা, কখনও সেলুনে ঢুকে চুল কেটে দেওয়া, কখনও আদিবাসীদের মাঝের থানে যাচ্ছেন, আদিবাসী নৃত্যে পা মেলাচ্ছেন— কিছুই বাদ দেননি তিনি। সুজাতা বলেন, “আমি বড়জোড়ার মেয়ে। এখানকার মানুষ আমাদের পাশের বাড়ির মেয়ে বলে মনে করেন। জয় নিয়ে নিশ্চিত।’’

আবার বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ-ও বড়জোড়া কেন্দ্রের বেলিয়াতোড়, গঙ্গাজলঘাটি-সহ নানা জায়গায় মিছিল ও জনসংযোগ সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছেন। দুই প্রার্থীর মধ্যে কাজিয়া চলছে বড়জোড়ার উন্নয়ন নিয়েও। সৌমিত্র বলেন, “বড়জোড়ায় যানজট এড়াতে আমি সংসদে উড়ালপুল তৈরি করার দাবিতে সরব হয়েছিলাম। রাজ্য কেবল অনুমতিটুকু দিলেই সেই কাজ করে ফেলতে পারতাম।’’ পাল্টা সুজাতার দাবি, উড়ালপুল করার থাকলে তিনি অনেক আগেই উদ্যোগী হতে পারতেন। একবারও লোকসভায় এ নিয়ে কথা বলেননি।”

সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় বলেন, “তৃণমূল-বিজেপি কেবল নিজেদের কেচ্ছা কেলেঙ্কারি নিয়েই মেতে রয়েছে। হাতির হানায় এত মানুষ মারা যায়, সেচের ব্যবস্থা সব জায়গায় নেই, কলকারখানাগুলি নানা সমস্যায় ধুঁকছে— এ সব নিয়ে তাঁরা কিছু বলছেন না কেন? মানুষ এর প্রতিবাদে এ বার সিপিএম প্রার্থীকেই জেতাবেন।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 barjora TMC CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE