Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

নির্মলকে নিয়ে বহু কর্মী এখনও ক্ষুব্ধ

লোকসভা ভোটে বিধানসভাভিত্তিক কোন দলের কী অবস্থা? প্রচারে কারা কোন বিষয়কে তুলে ধরছে? আজ, উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র।

নির্মল মাজির বিরুদ্ধে দলেরই বহু নেতা-কর্মীর ক্ষোভ রয়োছে এখনও।

নির্মল মাজির বিরুদ্ধে দলেরই বহু নেতা-কর্মীর ক্ষোভ রয়োছে এখনও। —ফাইল চিত্র।

নরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৪
Share: Save:

প্রচারে জোর বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজির বিরুদ্ধে দলেরই বহু নেতা-কর্মীর ক্ষোভ এখনও সামাল দিতে পারেনি দল। ফলে, এই কেন্দ্রে বিরোধীরা সাংগঠনিক ভাবে ‘দুর্বল’ হলেও লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জয়ের ব্যবধান গত লোকসভা বা বিধানসভা ভোটের তুলায় বাড়বে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছেন বহু তৃণমূল নেতাই।

তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলে, বাম আমলেও নিয়মিত জিতে পঞ্চায়েত সদস্য, পরে উপপ্রধানের পদ সামলানো এমনই এক নেতা এখন নিষ্ক্রিয়। তাঁর অভিযোগ, বিধায়কের স্তাবকতা না করার জন্য তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার নষ্ট হতে বসেছে। গত বছর সে কারণেই তিনি পঞ্চায়েত ভোটে দলের টিকিট পাননি।

শুধু কী ওই নেতা! আমতা ১ ব্লকের রসপুর, সিরাজবাটী, আমতা, ভান্ডারগাছা, খড়দহ থেকে শুরু করে উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের জোয়ারগড়ি, তুলসীবেড়িয়া, বাণীবন, টিকে ২, বাসুদেবপুর প্রভৃতি পঞ্চায়েতে আওর বেশ কিছু নেতা-কর্মীর একই অভিযোগ রয়েছে বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর। ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ‘বিক্ষুব্ধ’দের একটা অংশ ইতিমধ্যে বিজেপিতেও চলে গিয়েছেন।

বিধায়কের সঙ্গে দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের এই বিবাদের খবর পৌঁছেছে দলের গ্রামীণ জেলা নেতৃত্বের কাছেও। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। গ্রামীণ হাওড়ার এক তৃণমূল নেতা মানছেন, ‘‘বিধায়ককে বারবার বলা হয়েছে, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এটা একটা বড় সমস্যা।’’

বিধায়ক নির্মল এটিকে সমস্যা হিসাবে মানতেই নারাজ। তাঁর দবি, ‘‘যাঁদের ক্ষমতার বৃত্ত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা অসদুপায়ে অর্থ উপার্জন করছিলেন। দলকে ভাঙিয়ে তোলাবাজি ও দাদাগিরি করছিলেন। তাঁদের নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ায়
কোনও ক্ষতি হবে না।’’ বিজেপিতে চলে যাওয়া নেতাদের বিষয়ে বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘অপকর্মের
জন্য আগেই তাঁদের দল থেকে তাড়ানো হয়েছে।’’

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ব্যবধান ছিল ১৪ হাজার ভোটের। ২০২১-এর বিধানসভা সেই ব্যবধান বেড়ে যায়। তৃণমূল জেতে ২১ হাজার ভোটে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি জিতেছিল তুলসীবেড়িয়া ও জোয়াড়গড়ি পঞ্চায়েত। গত বছরের নির্বাচনে এই দুই পঞ্চায়েতও তারা তৃণমূলের কাছে খোয়ায়।

এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোট আছে প্রায় ২৯ শতাংশ। আইএসএফ
প্রার্থী দিলেও সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগ যে তাদের ঝুলিতেই আসবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত তৃণমূল নেতারা। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জয়ের ব্যবধান কতটা বাড়বে, সেটাই তাঁদের চিন্তা।

রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, তৃণমূলের এই কোন্দলের সুবিধা নিতে পারবে না বিজেপি। সংশয় রয়েছে বিজেপিরও অন্দরে। ইতিমধ্যে বিজেপির নিচুতলার বহু কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূল থেকে আসা কিছু নেতাকে নিয়ে গেরুয়া শিবিরের একাংশ ক্ষুব্ধ।

বিজেপির গ্রামীণ হাওড়ার এক নেতা বলেন, ‘‘তৃণমূল থেকে সম্প্রতি এমন কিছু নেতা আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন, যাঁদের ভাবমূর্তি তৃণমূলে থাকাকালীনই খারাপ ছিল। তাঁরা দলে আসায় আমাদের অনেক কর্মী বসে গিয়েছেন।’’ তবে, বিজেপি নেতা পিন্টু পাড়ুই দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা নেই। তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দিতে আমরা সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছি।’’

প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে বাম-কংগ্রেসও। দুর্বল সংগঠনের জন্য তারা কতটা লড়াই দিতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে, কংগ্রেস প্রার্থী আজহার মল্লিক দাবি করছেন, লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। প্রচারে তৃণমূল ‘উন্নয়ন’কেই বেশি করে সামনে আনছে। বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি তুলছে তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’র কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Uluberia TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy