Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024 Result

গড় অটুট, দুইয়ে দুই-ই ঘাসফুলের

শতাব্দী যে এই কেন্দ্রে শাসকদলের প্রার্থী হবেন সেটা অনেক আগেই ঠিক হয়েছিল। কৌতূহল ছিল তাঁর বিপক্ষে বিজেপি-র প্রার্থী কে হবেন, সেটা নিয়েই।

সিউড়ির পার্টি অফিসে ভিক্ট্রি দেখাচ্ছেন শতাব্দী রায়।

সিউড়ির পার্টি অফিসে ভিক্ট্রি দেখাচ্ছেন শতাব্দী রায়। নিজস্ব চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ০৬:১৪
Share: Save:

বীরভূমে নিজেদের গড় অক্ষুণ্ণ রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। এবং অনুব্রত মণ্ডলকে ছাড়াই। পঞ্চায়েতের পরে লোকসভা নির্বাচনেও জেলার দুই আসনে ঘাসফুলের জয়জয়কার। চতুর্থবারের জন্য সংসদে যাচ্ছেন বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। দ্বিতীয় বার জয়ী হলেন বোলপুর কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অসিত মাল।

অথচ শতাব্দী রায়ের জয় অনায়াস হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল দলেই। আরও নানা কারণে চর্চায় ছিল বীরভূম কেন্দ্র। তাঁর বিপক্ষে বিজেপির প্রার্থী বাছাই নিয়ে জটিলতা, বাম সমর্থিত সংখ্যালঘু কংগ্রেস প্রার্থী, অনুব্রত মণ্ডলের না থাকা। সেই সবকে হেলায় হারিয়ে শতাব্দী বীরভূম কেন্দ্রে শুধু জয়ী হলেন না। বরং চার বারের মধ্যে এ বারেই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জিতলেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বীরভূম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী পেয়েছেন ৭ লক্ষ ১৪ হাজার ৫৪৭ ভোট। নিকটতম বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য পেয়েছেন ৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৫৮টি ভোট। ইভিএমে ভোট গণনা শুরু হতেই প্রথম রাউন্ড থেকে ক্রমাগত লিড বাড়িয়ে নিয়েছেন শতাব্দী। উচ্ছ্বসিত শতাব্দী বলছেন, ‘‘জয়ের ব্যবধান বাড়বে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। বিপুল জয়ের জন্য দলের কর্মী-সমর্থকদের নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং শাসকদলের প্রতি মানুষের আস্থাকে ধন্যবাদ।’’ অন্য দিকে, দেবতনুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সাধারণ মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। রায় মাথা পেতে নিচ্ছি। আনন্দের বিষয় স্পষ্ট জনাদেশ পেয়ে নরেন্দ্র মোদীজি তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন।’’

শতাব্দী যে এই কেন্দ্রে শাসকদলের প্রার্থী হবেন সেটা অনেক আগেই ঠিক হয়েছিল। কৌতূহল ছিল তাঁর বিপক্ষে বিজেপি-র প্রার্থী কে হবেন, সেটা নিয়েই। প্রায় এক মাস টালবাহানার পর বিজেপি যখন প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরকে প্রার্থী করে, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন লড়াইটা বেশ ভাল হবে। তার অন্যতম কারণ গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর প্রাপ্ত বিশাল অঙ্কের ভোট। এর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে মিল্টন রশিদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা।

কিন্তু, মনোনয়ন প্রত্যাহারে শেষ দিন নথিগত সমস্যায় দেবাশিস ধরের প্রার্থিপদ বাতিল হতেই যেন কেমন অগোছালো হয়ে পড়ে গেরুয়া শিবির। শেষ বেলায় দেবতনু ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা হলেও প্রচারে গতি আনতে পারেনি বিজেপি। তবু বিজেপি ভাল অঙ্কের ভোট পাবে ধরে নিয়েছিল শাসকদল। তৃণমূলের বেশি চিন্তা ছিল, কংগ্রেস প্রার্থী কত পরিমাণে সংখ্যালঘু ভোট কাটবেন, তা নিয়ে। কারণ, গত লোকসভা নির্বাচনে মোট সাতটি বিধানসভা এলাকার মধ্যে যে তিনটি সংখ্যালঘু অধ্যুশিত বিধানসভা আসনে (হাঁসন, মুরারই ও নলহাটি) জিতেছিলেন, মিল্টন রশিদ সেই এলাকার বাসিন্দা।

ফল বের হতে দেখা গেল, আদতে মিল্টন দাগ কাটতে পারেননি। সংখ্যালঘু ভোট শাসকদলের সঙ্গেই থেকেছে। মিল্টন নিজে ২ লক্ষ ১৪ হাজার ভোট পেলেও তা নির্ণায়ক হতে পারেনি। সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘জোট প্রার্থী যে পরিমাণ ভোট পারেন আশা করা হয়েছিল, তা তিনি পাননি।’’ শহরের যে ভোট গত কয়েকটি নির্বাচনে মুখ ফিরিয়েছিল শাসকদলের কাছ থেকে, সেখানেও এ বার ভাল ফল তৃণমূলের।

সিউড়ি রামকৃষ্ণ শিল্পবিদ্যাপীঠের গণনাকেন্দ্রে এ দিন সকাল আটটার পরে মিল্টনকে দেখা যায়নি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হার নিশ্চিত বুঝে সরে যান দেবতনুও।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Suri Satabdi Roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy