—প্রতীকী চিত্র।
তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের সমীকরণ যে আদৌ মধুর নয়, তা পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক মহলে সর্বজনবিদিত। লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বে কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের সঙ্গে মন্ত্রী অখিল গিরির সংঘাত বারবার সামনে এসেছে। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। ভোটের ফল প্রকাশের পর আর কোনও রাখঢাক না করে নিজের হারের জন্য পক্ষান্তরে অখিল গিরিকে দায়ী করলেন উত্তম। ফলে জেলায় হার নিয়ে চাপে থাকা শাসকদলে জটিলতা বেড়েছে।
লোকসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরে বিপর্যয় নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে। ‘অধিকারী গড়’ কাঁথিতে হার নিয়ে সরাসরি মন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন উত্তম। পাশাপাশি, অখিল এবং তাঁর ছেলেকে দলের সব রকমের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সমাজ মাধ্যমে প্রবল লেখালেখি শুরু হয়েছে। কাঁথি এবং তমলুকে তৃণমূলে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ ছিল আগে থেকেই। অখিলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভোটের আগেও অভিযোগ জানিয়েছেন উত্তম। ভোটের পরেও তিনি নালিশ জানিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
ফল ঘোষণার পর ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই উত্তম বারিক বলেন, ‘‘অখিলদা দলের প্রবীণ নেতা। কিন্তু ভোটের আগে যতটা সহযোগিতা করার কথা, তা ওঁর কাছ থেকে এলাকার নেতারা পাননি।’’ উত্তমের দাবি, ‘‘জেলায় কেন পরাজয় ঘটেছে, তা শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যালোচনা করবেন। তবে ব্যক্তিগত সমালোচনা নয়, দল যদি নির্দেশ দেয় তা হলে ২০২৬ সালের জন্য প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করতে পারি।’’ এ প্রসঙ্গে অখিলের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘কেউ নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে এ ধরনের কথা বলছেন। এমন ফলে খারাপ লাগছে। কেন এ ধরনের ফল হয়েছে, তা জরুরি ভিত্তিতে অঞ্চল স্তরের নেতৃত্বদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করছি।’’
কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে রামনগর বিধানসভার নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অখিলকে। দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা এলাকায় নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল তাঁর ছেলে সুপ্রকাশ গিরিকে। অখিলের বিরুদ্ধে এলাকার নেতাদের দলীয় বৈঠকে না ডাকার ফরমান জারি, ভোট প্রচারে নিয়মিত না থাকার অভিযোগ ছিল। আপাতত মন্ত্রী ও তাঁর ছেলেকে ‘গদ্দার’ কটাক্ষ করে ফেসবুকে সরব দলীয় কর্মীদের একাংশ। উল্লেখ্য, সুপ্রকাশ পুরসভার চেয়ারম্যানের পাশাপাশি, যুব তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। বলাগেড়িয়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক এবং কাঁথি মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার মাথাতেও তিনি রয়েছেন।
২০২০ সালে ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। সে সময় কাঁথি শহরের তৃণমূলের সভাপতি হন উত্তম বারিক। যদিও অভিযোগ, তাঁকে চক্রান্ত করে কাঁথি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল অখিল-শিবির। পটাশপুর বিধানসভা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন উত্তম। আর দক্ষিণ কাঁথিতে উত্তম শিবিরের প্রার্থী জ্যোতির্ময় কর পরাজিত হন। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে ও কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের জেলা পরিষদের পুরনো আসন থেকে সরে যেতে হয় উত্তমকে। পরে তিনি খেজুরি থেকে নির্বাচিত হন।
উত্তম শিবিরের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন সুপ্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘বাবাকে উপযুক্ত সম্মান দেওয়া হয়নি। আমাকেও ঠিক মতো কাজে লাগানো হয়নি।’’ দলের এমন কোন্দল নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডা। তবে বিজেপির জেলা (কাঁথি) জেলা সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘বিরোধী দলনেতাকে আটকাতে পারছে না শাসকদল। তাই কোন্দলের অজুহাত দিচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy