—প্রতীকী চিত্র।
সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। ৪২টি আসনের ২৯টিতেই ফুটেছে ঘাসফুল। ভোট পরবর্তী বিশ্লেষণে উঠে আসছে, মহিলা আর সংখ্যালঘু ভোটের তৃণমূলের এই জয়জয়কার।
সেখানেই উল্টো ছবি তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কোলাঘাটে। এই এলাকায় প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটার। তবু এখানে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। বিজেপি মানছে, কোলাঘাটে সংখ্যালঘু ভোটের একটা ভাল অংশ এ বার তারা পেয়েছে।
বস্তুত, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরেই এ বার লোকসভায় উল্টো ছবি। রাজ্যে ভরাডুবি হলেও নন্দীগ্রামের এই জেলায় দুটি লোকসভাতেই পদ্ম ফুটেছে। বিধানসভা ভিত্তিক ফলও বলছে, জেলার ১৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫টিতেই এগিয়ে বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী তমলুকে তৃণমূলের প্রতীকে জিতেছিলেন। এই কেন্দ্রের অন্তর্গত পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভাই আদতে কোলাঘাট ব্লক। সে বার দিব্যেন্দু কোলাঘাটে বিজেপির থেকে ৭,৩৮০ ভোট বেশি পেয়েছিলেন। তারপর ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে কোলাঘাটে বিজেপিকে ৯,৬৬০ ভোটে হারিয়ে বিধায়ক হন তৃণমূলের বিপ্লব রায়চৌধুরী। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এখানে ভাল ফল করে তৃণমূল। সংসব মিলিয়ে কোলাঘাট এলাকায় বিজেপির থেকে প্রায় ২২ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল রাজ্যের শাসক দল।
কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই উলটপুরাণ। এ বার এখানে তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের থেকে ২,৭২১টি ভোট বেশি পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কোলাঘাটের ভোগপুর, সাগরবাড়, আমলহান্ডা, গোপালনগর,সিদ্ধা ১ ও ২ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। গোটা বিধানসভায় প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটার। তারপরেও এই ফল হল কী করে?
জানা যাচ্ছে, তমলুকের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রাক্তন বিচারপতির নাম ঘোষণার পরই নিবিড় জনসংযোগে নেমে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। শুভেন্দু নিজে কোলাঘাটে একাধিক কর্মসূচি করেছেন। গত ১৩ এপ্রিল মেচেদার অদূরে একটি গেস্ট হাউসে কোলাঘাট এলাকার মুসলিম ধর্মগুরুদের নিয়েও বৈঠকে বসেন বিরোধী দলনেতা। সবেরই ফল মিলেছে ভোটে। বিজেপির দাবি, এ বার লোকসভায় কোলাঘাটে অন্তত ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট তারা পেয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দুর সঙ্গে সংখ্যালঘুদের মধুর সম্পর্ক ছিল। কোলাঘাটের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় শুভেন্দু আগে প্রচুর কাজও করেছেন। বিজেপিতে যাওয়ার পরেও কিছু কিছু জায়গায় শুভেন্দুর সঙ্গে সংখ্যালঘুদের সম্পর্ক এখনও অটুট। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি শেখ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘কোলাঘাটে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোটার সংখ্যালঘু। তা সত্ত্বেও এখানে আমরা সংখ্যালঘুদের অন্তত ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি। দলের সমস্ত নেতা কর্মীরা নিবিড় জন সংযোগ করেছেন। কোলাঘাটের সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে শুভেন্দুবাবুর জনপ্রিয়তাও অটুট। এখানে সংখ্যালঘুরা বুঝেছেন বিজেপির বিকল্প কিছুই হতে পারে না। তাই প্রথম আমরা কোলাঘাটে পদ্ম ফোটাতে পেরেছি।’’
মন্ত্রী বিপ্লব বলছেন, ‘‘শুধু কোলাঘাট নয়। জেলার একটি বাদে সব বিধানসভাতেই আমরা হেরেছি। এই ফলাফলে সত্যিই অবাক। সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশ কেন বিজেপিতে গেল তারও পর্যালোচনা করা হবে।’’ উল্লেখ্য, মন্ত্রীর নিজের বুথেও তৃণমূল হেরেছে। বিপ্লব এবং তৃণমূলের তমলুক জেলা সভাপতি অসিত বন্দোপাধ্যায় একই বুথের ভোটার। সেখানে তৃণমূলের থেকে ২২ ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy