প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর দলের হয়ে যিনি তমলুকের প্রার্থী হয়েছেন সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এক সময় শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার বিচার চলেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতায় সোমবার উঠে এসেছে তমলুক এবং সেই নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে হিংসার পরিবেশ বাড়ছে বলেও সমালোচনা করেছেন মোদী।
ষষ্ঠ দফার লোকসভা ভোটের প্রচারে এ দিন মেদিনীপুরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার ঝাড়গ্রামের পাশাপাশি তমলুক কেন্দ্রের অন্তর্গত হলদিয়ায় জনসভা করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি হলদিয়া আসেননি। ঝাড়গ্রাম থেকেই ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হওয়ার কথা উঠে এসেছে তাঁর কথায়। বড় স্ক্রিনে সেই বক্তৃতা শোনানো হয় তমলুকে প্রস্তাবিত সভাস্থলে।
মোদী বলেন,"উদ্দ্যেশে খাদ থাকলে কাজে কোনও হিসেব থাকে না। মোদী সরকার রিপোর্ট কার্ড দিয়েছে। বাংলায় তৃণমূলের রিপোর্ট কার্ড নেই, রেট কার্ড আছে!" প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ,"চাকরিতে রেট কার্ড লাগিয়ে রেখেছে! পয়সা দাও, চাকরি নাও। মন্ত্রীরা খোলাখুলি চাকরি বিক্রি করেছেন। নতুন প্রজন্মকে নিলাম করেছে।" একই সঙ্গে মোদি বলেন, "দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের কে বাঁচাতে চাইছে? কে সিবিআইকে কাজ করতে বাধা দিচ্ছে? বাংলার পরিচিতি পাল্টে দিচ্ছে এরা। হিংসা, সংঘর্ষ চলছে যখন-তখন।"
হলদিয়ায় শিল্প সম্ভাবনাকে তৃণমূল কাজে লাগাচ্ছে না বলেও অনুযোগ করেছেন নরেন্দ্র। বলেছেন,"মেদিনীপুর আর তমলুকে শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা আছে। পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। যদিও এখানকার শাসক দল তৃণমূল সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাচ্ছে না।"
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল,বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত কুমার বলেন, ‘‘শুভেন্দুর বিরুদ্ধে হিম্মত থাকলে প্রধানমন্ত্রী সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিন। কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী আর বাংলায় বিরোধী দলনেতা যা দুর্নীতি করছেন সেগুলো যদি বন্ধ হয় তবেই শিল্পের সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যাবে।"
একই সুরে সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, "২০১২ সালে ১২ হাজার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। সে সময় একই কায়দায় যাঁরা টাকা দিয়েছেন এবং সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন, তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। তাই সেই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র সরকার। আর হেমন্ত সোরেন এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে যদি সিবিআই পদক্ষেপ করে তা হলে বারবার ডাকা সত্ত্বেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সিবিআই কেন পদক্ষেপ করছে না?"
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মানস কর মহাপাত্রের কথায়,"প্রধানমন্ত্রীর মুখে ফুল চন্দন পড়ুক, উনি যখন নিয়োগ দুর্নীতির কথা বলছেন। তা হলে ওঁর দলেরই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা দরকার। শুভেন্দুর বিরুদ্ধেও তো নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায়।" পাল্টা দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক তথা বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ কুমার দাস মন্তব্য করেন,"মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি তখন ঘুমিয়েছিলেন? শুভেন্দু কোনওদিন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন না। দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্য সরকারকে বাঁচাতে তৃণমূল এবং তার ইন্ডিয়া জোটের শরিকেরা এক সুরে কথা বলবে, এটাই স্বাভাবিক।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy