Advertisement
Back to
Water Crisis at Coopers

নেতার আশ্বাস, কুপার্সের জলের সমস্যা কি মিটবে? 

প্রকল্পটি আর বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১৩ সালে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হয়েছিল একটি জলাধার। সেটিও ১১ বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে।

অব্যবহৃত পড়ে কুপার্সের জলাধার।

অব্যবহৃত পড়ে কুপার্সের জলাধার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৫১
Share: Save:

সালটা ছিল ১৯৫০। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু নিজে পরিদর্শন করে যাওয়ার পরে পূর্ববঙ্গ থেকে আগত উদ্বাস্তুদের জন্য কুপার্সে শিবির খোলার সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৯৭ সালে সেই কুপার্স ক্যাম্প ‘নোটিফায়েড এরিয়া’র তকমা পায়। কিন্তু ২০২৪ সালেও মেটেনি এলাকার জলের সমস্যা। গত ২১ এপ্রিল দত্তপুলিয়ার জনসভা থেকে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও সেই জল কত দূর গড়ায়, সেটা সময়ই বলবে।

১২টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত কুপার্সে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বাস। পুর প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১-১২ সাল নাগাদ পরিস্রুত পানীয় জল প্রকল্পের জন্য রানাঘাটের তৎকালীন মহকুমাশাসকের মাধ্যমে কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তাতে সিলমোহরও দিয়েছিল কেন্দ্র। ১ নম্বর ওয়ার্ডে জলপ্রকল্পের জন্য জমিও চিহ্নিত হয়। কিন্তু পরে আর প্রকল্পটি আর বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১৩ সালে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হয়েছিল একটি জলাধার। সেটিও ১১ বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে। এখন জল প্রকল্পের জন্য নতুন করে আবার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে জমি কেনা হয়েছে।

জলের সমস্যা যে লোকসভা ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে, এমন সংশয় তৃণমূলের রয়েছে। অনেকের ধারণা, সেই কারণেই অভিষেককে দত্তপুলিয়ায় নির্বাচনী জনসভায় কুপার্সের জলের সমস্যা মেটার আশ্বাস দিতে হয়েছে। সে দিন অভিষেক বলেন, "উদ্বাস্তু, নমঃশূদ্র, মতুয়াদের জন্য কুপার্স এলাকায় বৃহত্তর পানীয় জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। কয়েক দিনের মধ্যেই পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে।" যা শুনে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক দীপক দে-র পাল্টা দাবি, "ভোট আসতেই মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তৃণমূল। ওরা খুব ভাল করেই জানে, গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে কুপার্সের মানুষ ওদের সঙ্গে ছিল না। তাই এখন খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জলের সমস্যা নিয়ে বক্তব্য রাখতে হচ্ছে।"

২০২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়া অথরিটির বোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। তার আগেই ভাগীরথীর জল পরিস্রুত করে বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুমোদন চেয়ে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত প্রকল্প তথ্য পাঠানো হয়েছিল। তবে তাতে মূল জলের পাইপ থেকে বাড়ি-বাড়ি সংযোগকারী পাইপের উল্লেখ ছিল না। তাই প্রকল্পটি অনুমোদন পায়নি। পরে আবার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে (পিএইচই) শহরে জল সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মাস কয়েক আগে কিছু এলাকায় কাজও শুরু হয়। কিন্তু এতে জলের সমস্যা মিটবে কি না, বিভিন্ন মহলে এখন সেই প্রশ্ন উঠছে।

কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদের রাজ্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তথা কুপার্সের বাসিন্দা অশোক চক্রবর্তী বলেন, "এই শহরের জলপ্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন সময়ে টালবাহানা হয়েছে। জল প্রকল্পের জন্য পুর কর্তৃপক্ষ নতুন করে জমিও কিনেছেন।” তাঁর অভিযোগ, “সেই জমি কেনার পিছনে রয়েছে দুর্নীতি। জল প্রকল্প আর বাস্তবায়িত হয়নি।" তাঁর আক্ষেপ, নতুন করে আর নলকূপ বসানো হচ্ছে না। যে নলকূপ রয়েছে তা-ও মেরামত হয় না। ১১ বছর ধরে যে জলাধারটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, তা এখন পিএইচই ব্যবহার করবে বলে শোনা যাচ্ছে। আদতে সেই জলাধার এখন আর ব্যবহারযোগ্য রয়েছে কি না তা নিয়েই সংশয় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আর্সেনিকপ্রবণ এই জেলায় শহরের মানুষকে জল কিনে খেতে হচ্ছে। রানাঘাটের মহকুমাশাসক রৌনক আগরওয়াল বলেন, "নির্বাচন ঘোষণার আগেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছে। সেই মতো ওরা কাজ শুরু করেছে।"

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Ranaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy