রায়নায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: উদিত সিংহ।
বর্ধমানকে ‘একটু বেশিই ভালবাসেন’, বলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রায়না, পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড়ে পর পর সভা করেন তিনি। গত এক মাসের বেশি গরমে ভোট প্রচারে ঘুরে ঘুরে শরীর যে বিশেষ ভাল নেই, সে কথা জানান। তার সঙ্গেই রায়নার সভায় ব্লক সভাপতি ও বিধায়কের ‘দ্বন্দ্বের’ খবর যে তিনি রাখেন তা বুঝিয়েও দেন। নির্দেশ দেন, গত লোকসভার চেয়ে আরও ভাল ফল করতে হবে।
পূর্বস্থলীতে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এবং তাঁর খাল-বিল-চুনো মাছের উৎসবের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘স্বপনকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। এলাকায় একটি তাঁতের হাট বানিয়েছে। প্রতিবার খাল বিল এবং চুনোপুঁটি মেলা করে। আমার কাছে ওর একটা বই যায়। তাতে মেসেজ চাওয়া হয়। খালবিল, নদী নালা, চুনোপুঁটি এগুলো আমি ভীষণ ভালবাসি।’’ পর্যটনে বাংলা সেরা, হোম-স্টে থেকে ভাল আয় হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। নানা মন্দির থেকে বিপ্লবীদের জন্মস্থান সংস্কার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। রায়নার আলমপুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বর্ধমান আমাদের গর্ব। রাস্তাঘাট, মহিলা কলেজ, সাধারণ কলেজ কত উন্নয়ন হয়েছে। আমরা কালনার ১০৮ শিবমন্দিরের সংস্কার করছি। জেলার গোপীনাথ মন্দির, অট্টহাস সতীপীঠ, বটুকেশ্বর দত্ত, রাসবিহারী বসুর জন্মস্থান, সর্বমঙ্গলা মন্দির সংস্কার করা হচ্ছে।” বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানার জিআই ট্যাগ পাওয়ার উল্লেখ করেন। মিষ্টিহাব থেকে ধাত্রীগ্রামে তাঁতের হাট, ১৫টি কর্মতীর্থ, ২০টি কিসান মান্ডি, শক্তিগড় শিল্প পার্কে (১ ও ২ পর্যায়) উন্নয়নের ফিরিস্তি দেন। দামোদরের জল বাড়লে রায়নার সভাস্থল আলমপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বন্যার জন্য তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে নিম্ন দামোদর অববাহিকায় প্রকল্প করছি। বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর বন্যা থেকে রেহাই পাবে।” কালনা-শান্তিপুরের প্রস্তাবিত সেতুর প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। বলেন, “১১০০ কোটি টাকা দিয়ে সেতু করা হচ্ছে। ১০-১৫ মিনিটে কালনা থেকে শান্তিপুর পৌঁছে যাবেন।”
এর মাঝেই রায়না ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বামদেব মণ্ডল মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সভায় হাজির থাকা অন্য নেতাদের দাবি, বামদেবকে ‘ভাল’ করে কাজ করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বিধানসভায় রায়না ১ ব্লকে দল যে ভোটে জিতেছিল, তার চেয়েও বেশি ভোট তৃণমূল প্রার্থীকে জেতানোর নির্দেশ দিয়ে যান। বিধায়ক শম্পা ধাড়াকে জানান, রায়না ২ ব্লকে আগের চেয়ে ভাল ফল করতে হবে। রায়না ১ ব্লকটা বামদেব দেখছেন বলেও বার্তা দেন, দাবি দল সূত্রের।
পূর্বস্থলীতে পর্যটনে জোর শোনা যায় মমতার গলায়। তিনি বলেন, ‘‘হোম-স্টেতে সরকার এক লক্ষ টাকা দেবে। তাতে বাসযোগ্য বাড়ি, একটি খাট, টিভি এবং একটি শৌচাগার তৈরি হবে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পর্যটকেরা থাকবেন। বাড়ির রান্না খাবেন। এতে ভাল আয়ও হচ্ছে।’’ পাশের চৈতন্যের শহর নবদ্বীপের কথা বলেন। খোঁজ করেন জনপ্রিয় লোকশিল্পী পরীক্ষিৎ বালার। তাঁর স্বাস্থ্যের কথা জানতে চান। যদিও মঞ্চে হাজির ছিলেন না পরীক্ষিৎ। আগে কয়েক বার নানা সভায় মুখ্যমন্ত্রীকে গান শুনিয়েছেন পরীক্ষিৎ। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমার কথা বলেছেন, স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন শুনে খুব ভাল লাগছে। উনি যে আমায় মনে রেখেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সভাস্থল থেকে কিছুটা দূরে বাড়িতেই রয়েছি। ডাক পেলে সভায় যেতাম।’’
এ দিন অনেকে এসটিকেকে রোডে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভা শোনেন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া।অনেকের হাতে ছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্ল্যাকার্ড। গরমের সঙ্গে যুঝতে আয়োজকদের তরফে গন্ধরাজ লেবুর পাতা দেওয়া গুড়ের শরবতের ব্যবস্থা করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy