Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

প্রচারে ক্ষোভ, বিতর্কে সৌমিত্র-সুজাতা

বর্ধমানের কৃষক সেতু লাগোয়া খণ্ডঘোষের পলেমপুরে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের নামে একাধিক ফ্লেক্স ঝুলতে দেখা যায়। তাতে নীল শাড়ি পরে করজোড়ে ভোট প্রার্থনা করার ছবি রয়েছে তৃণমূল প্রার্থীর।

সুজাতার এই পোস্টারে বিতর্ক।

সুজাতার এই পোস্টারে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খণ্ডঘোষ শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫৪
Share: Save:

রবিবাসরীয় প্রচারে খণ্ডঘোষে এসেছিলেন দুই যুযুধান প্রার্থী। এক জন বেহাল রাস্তার কারণে স্থানীয়দের ‘ক্ষোভের’ মুখে পড়লেন। অন্য জন জড়িয়ে পড়লেন ব্যানার-বিতর্কে। ক্ষোভ-বিতর্ক নিয়ে পরস্পরকে কটাক্ষ করেছেন তাঁরা। প্রথম জন বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। অন্য জন ওই কেন্দ্রেরই তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। দু’জনই এ দিন খণ্ডঘোষের দামোদরের ধারের পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার করেন। সৌমিত্র করেন সকালে। সুজাতা বিকেলে।

এ দিন বর্ধমানের কৃষক সেতু লাগোয়া খণ্ডঘোষের পলেমপুরে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের নামে একাধিক ফ্লেক্স ঝুলতে দেখা যায়। তাতে নীল শাড়ি পরে করজোড়ে ভোট প্রার্থনা করার ছবি রয়েছে তৃণমূল প্রার্থীর। ফ্লেক্সে ছাপা তৃণমূল প্রার্থী ও ঘাসফুলের ছবি। কিন্তু সুজাতার গলায় থাকা উত্তরীয়তে লেখা বিজেপি। রয়েছে পদ্মফুলের ছবিও। এই ফ্লেক্স ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

সুজাতার মন্তব্য, “দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আগে যে দলটি করতাম, সেটি বিজেপি। এখন প্রায়শ্চিত্ত করছি। পুরনো ছবি সমাজমাধ্যমে, নেট-দুনিয়াতে রয়েছে। সে সব ছবি মোছা হয়নি। নীল রঙের শাড়ি তৃণমূলের খুব পছন্দের। কিছু উৎসাহী কর্মী ভুল করে প্রচারের ফ্লেক্সে ওই ছবি দিয়ে ফেলেছেন। এতে বিতর্কের কিছু নেই। সেগুলি খুলে নতুন ফ্লেক্স লাগাতে বলা হবে।”

বিজেপি প্রার্থীর কটাক্ষ, “তৃণমূলের প্রার্থী কবে তৃণমূল হলেন, সেটাই বুঝতে পারছি না। কারও স্ত্রী হওয়ার জন্য তাঁকে বিধায়ক-সাংসদের টিকিট দিতে হবে! আগে কখনও দেখিনি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিনোদ ঘোষের টিপ্পনী, “তৃণমূল ও বিজেপি ভাই-ভাই। এই ছবি সেটাই বলছে। কে কোথায় কখন থাকছে, সেটা তাঁদের দলের কর্মী-সমর্থকেরাই বুঝতে পারছেন না।”

এ দিকে, পলেমপুর থেকে হুড খোলা গাড়িতে দামোদরের ধারের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে কামালপুরের মাঝেরপাড়ার কয়েক জন মহিলা বিজেপি প্রার্থীকে দাঁড় করিয়ে রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন। জেলা পরিষদের ওই রাস্তা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে বলে তাঁদের দাবি। অভিযোগ, অতিরিক্ত বালি বহনকারী ট্রাক, ডাম্পার চলাচলের কারণে রাস্তার এই অবস্থা। কয়েক বছর আগে সংস্কারের দাবিতে কামালপুরেই রাস্তা কেটে দিয়েছিলেন স্থানীয়েরা।

সৌমিত্রকে মহিলারা জানান, রাস্তা না হলে ভোট দিতে যাবেন না। প্রসূতি, গর্ভবতী ও স্কুল পড়ুয়ারা ওই রাস্তা দিয়ে যেতে ভয় পান। কয়েক জনকে ক্ষোভ উগরে বলতে শোনা যায়, “দীর্ঘদিন ধরে সাংসদ আছেন। রাস্তার কাজ কিছুই হয়নি। পরিবর্তন তো করে দেব, কিন্তু রাস্তা সংস্কার না হলে কাস্তে, ফুলে চলে যাব।”

সৌমিত্র তাঁদের জানান, রাস্তাটি তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের। বারবার বলা সত্ত্বেও তারা সেটির সংস্কার করেনি। আবার সাংসদ তহবিলের অর্থেও সংস্কার করতে চায়নি। তৃণমূল প্রার্থীর কটাক্ষ, “সাংসদকে ওই এলাকার মানুষ দেখতে পান না। সাংসদ তহবিলের অর্থে কোনও কাজ করেননি। নির্লজ্জের মতো ভোট চাইতে গেলে মা-বোনেরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। ক্ষোভের মুখে পড়ে তিনি পালিয়ে যান।”

সৌমিত্রের সঙ্গে থাকা বিজেপির বিষ্ণপুর লোকসভা কেন্দ্রের সহ-সভাপতি, খণ্ডঘোষের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের দাবি, “কেউ বিক্ষোভ দেখাননি। জেলা পরিষদ রাস্তা করছে না বলে স্থানীয়েরা সাংসদের কাছে অভিযোগ করেন। ওই মহিলারা আমাদের প্রার্থীর উপরে ভরসা রেখেই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।”

প্রচারে খণ্ডঘোষের তৃণমূল ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলামকে ‘জঙ্গি’ বলে আক্রমণ করেন সৌমিত্র। তাঁর অভিযোগ, “খণ্ডঘোষেও বোমা-বারুদ-বন্দুক মজুত রয়েছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এক জন জঙ্গি। পঞ্চায়েতে আমাদের ভোট করতে দেয়নি। গণনায় কাউকে থাকতে দেয়নি।” অপার্থিবের পাল্টা, “যা ইচ্ছা তাই বলছে। বিজেপি বোমা-বারুদ রেখে শুটিং করছে। ক্ষমতায় আসতে পারবেন না, নিজেও জিততে পারবেন না জেনে বিজেপি প্রার্থী হতাশায় এ সব কথা বলছেন।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy