Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’, সরব গুরুং, বিনয়েরা

জিটিএ সূত্রের খবর, ২০০২ সাল থেকে পাহাড়ে আঞ্চলিক স্কুল সার্ভিস কমিশন কার্যকর নেই। গত ২২ বছরে বারোশোর কাছকাছি শূন্য পদ পাহাড়ের স্কুলগুলিতে তৈরি হয়েছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৪ ১০:২০
Share: Save:

দার্জিলিং ও কালিম্পঙে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এ বার সরব পাহাড়ের শাসক দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার বিরোধী নেতারা। পাহাড়ের দুই নেতা তথা দু’জন প্রাক্তন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান বিমল গুরুং ও বিনয় তামাং নিরপেক্ষ ও সার্বিক তদন্তের দাবি তুলেছেন। দু’জনের দাবি, পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ সামনে এসেছে। তাই কোনও অনৈতিক কাজ হয়ে থাকলে, তার সার্বিক তদন্ত প্রয়োজন। দোষীদের শাস্তির কথাও তোলা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মত প্রাথমিক স্তর এবং হাই স্কুল স্তরেও পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দু’টি আলাদা মামলাও
হাই কোর্টে বিচারাধীন।

বিমল গুরুং বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে স্বজনপোষণ এবং চাকরির নামে দুর্নীতি হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। আদালতে বিচারাধীন বিষয়। আইনের প্রতি ভরসা রয়েছে। সত্য নিশ্চয়ই সামনে আসবে।’’ আর বিনয় তামাংয়ের কথায়, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের নামে কী কী করা হয়েছে, তা আদালতের নির্দেশে তদন্ত হলেই সামনে আসবে। তবে দেখতে হবে কোনও নির্দোষ যেন শাস্তি না পান।’’

জিটিএ সূত্রের খবর, ২০০২ সাল থেকে পাহাড়ে আঞ্চলিক স্কুল সার্ভিস কমিশন কার্যকর নেই। গত ২২ বছরে বারোশোর কাছকাছি শূন্য পদ পাহাড়ের স্কুলগুলিতে তৈরি হয়েছে। সেখানে অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকারা কাজ করতেন। সেখানে বিভিন্ন সময়ে ২০১২ সাল থেকে অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়মিত (রেগুলারাইজ়) করা হয়েছে। তাতে প্রাথমিক থেকে হাই স্কুল সব মিলিয়ে এক হাজারের কাছাকাছি নিয়মিতকরণ হয়েছে। আর এই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের একাংশের দাবি, প্রাথমিক স্তরের বাইরে ৩১৩ জন স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরির নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর বাইরে নিয়মিত হওয়া ৭৫০ জনের নিয়োগের নথিপত্র নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। এ বার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জিটিএ-র ‘টেট’। বিধানসভা ভোটের আগে পাহাড়ে ‘টেট’ হয়েছিল, যা আদৌ বিধি মেনে হয় অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা হয়েছে।

প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, জিটিএ-র অন্দরে ইতিমধ্যে নিয়োগ মামলাগুলি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিরোধীরা সুর চড়াবে তা পরিষ্কার। সূত্রের দাবি, বিজেপি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ, হামরো পার্টির তরফে এক যোগে বিরোধিতা ক্রমশ বাড়বে, তা শাসক দলের নেতারা বুঝে গিয়েছেন। তাই আইনি পরামর্শ নেওয়াও শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে মামলাগুলিতে নিজেদের ভূমিকা, হাজিরা বা আইনজীবীদের মারফত বক্তব্য তুলে ধরার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

জিটিএ প্রধান অনীত থাপা শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রথম থেকেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে অনীত-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক জিটিএ সদস্যের দাবি, ‘‘পাহাড়কে সমতলের সঙ্গে মেলালে, চলবে না। এখানে একটি স্বাধীন সংস্থা কাজ করে। শিক্ষা রাজ্যের হাত থেকে তার হাতে এসে গিয়েছে। আইন প্রক্রিয়ায় সব ধীরে ধীরে সামনে আসবে।’’

গত সোমবার জিটিএ-র শিক্ষা বিভাগের তরফে দুই পাহাড়ি জেলার স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যানদের একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় দুই চেয়ারম্যানকে ২০১২-১৯ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তথ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেখানে অস্থায়ী শিক্ষকদের কী ভাবে চাকরি নিয়মিতকরণ হল, কী-কী নথি জমা করা হয়েছিল, সব উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। পার্বত্য পরিষদ থেকে জিটিএ, এই মেয়াদকালের কথা নির্দেশে রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy