কালীপদ ওরফে খেরওয়াল সরেন। —ফাইল চিত্র।
অনুরোধ ফেরাতে পারছেন না ভগ্নীপতি। তৃণমূল প্রার্থী শ্যালকের হয়ে তাই প্রচার করবেন বিজেপির দলত্যাগী সাংসদ!
ঝাড়গ্রাম লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী তথা সাঁওতালি সাহিত্যিক কালীপদ সরেনের (পাঠক মহলে খেরওয়াল) ভগ্নীপতি হলেন ঝাড়গ্রামের বিদায়ী সাংসদ কুনার হেমব্রম। কুনারের স্ত্রীর পিসতুতো দাদা কালীপদ। মার্চের গোড়ায় পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর আসনে বিদায়ী তিন সাংসদকেই প্রার্থী ঘোষণা করে গেরুয়া শিবির। তবে ঝাড়গ্রামে কুনারকে প্রার্থী করেনি তারা। এরপরই ৮ মার্চ দলের জেলা ও রাজ্য সভাপতিকে চিঠি দিয়ে ব্যক্তিগত কারণে দলের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানান কুনার। তবে সাংসদ পদে ইস্তফা দেননি। দলত্যাগের পর ঝাড়গ্রাম স্টেশনে রেলের অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ।
কিন্তু হঠাৎ কেন তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারের সিদ্ধান্ত? শুধুই সম্পর্কের খাতিরে? কুনার বলছেন, ‘‘বড় শ্যালক বাড়িতে এসে সহযোগিতা চেয়েছেন। দু’চার দিন প্রচারে যেতে হবে। তবে তৃণমূলের ঝান্ডা ধরব না। নিজের দল ছেড়েছি। অন্য কোনও দলে যাব না।’’ কালীপদর কথায়, ‘‘উনি (কুনার) আমার সঙ্গে প্রচারে থাকলে এটা বড় প্রাপ্তি।’’ সূত্রের খবর, জেলা তৃণমূলের এক সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শে কুনারের বাড়িতে গিয়ে প্রচারের যাওয়ার অনুরোধ করেন কালীপদ।
কালীপদ থাকেন ঝাড়গ্রাম শহরের ভরতপুরে। লাগোয়া গ্রামীণ এলাকার কন্যাডোবায় কুনারের বাড়ি। দু’জনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভাল। ২০২২ সালে কালীপদের পদ্মশ্রী প্রাপ্তির গুঞ্জন উঠেছিল। সাংসদের আত্মীয় হওয়ার সুবাদেই পদ্মশ্রী লাভ বলে রটনাও হয়েছিল। যদিও কুনার তখন স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, সাহিত্য মূল্যের বিচারেই কালীপদ পদ্মশ্রী পেয়েছেন। তবে পদ্মশ্রী লাভের আগে ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন কালীপদ। ২০২০ সালে তৃণমূলের এক দলবদল কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। যদিও কালীপদর দাবি, পৈতৃক গ্রামের একটি খালে সেতুর জন্য তিনি জনপ্রতিনিধি ও রানেতানেত্রীদের কাছে দরবার করেছিলেন। তাঁর সরলতার সুযোগে হয়তো দলীয় পতাকা হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক জনসভায় কালীপদকে রাজ্যের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণে সম্মানিত করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই ১০ মার্চ ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে ঝাড়গ্রাম আসনের দলীয় প্রার্থী কালীপদের নাম ঘোষণা করে তৃণমূল।
কুনারের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদারও। তিনি সম্পর্কে সাংসদের শ্যালিকা। কুনারের স্ত্রীর মাসতুতো বোন হলেন বিরবাহা। বিরবাহার ভাইয়ের বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সাংসদ। বিরবাহা বলছেন, ‘‘উনি (কুনার) ভাইয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। প্রীতিভোজে আসেননি।’’ কালীপদের প্রচারে কুনার থাকতে পারেন শুনে মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘শ্যালকের প্রচারে ভগ্নীপতি যেতেই পারেন। উনি তো লিখিতভাবে বিজেপির সম্পর্ক ত্যাগের কথা জানিয়েছেন।’’ বিজেপি ছাড়লেও দল সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়নি কুনারকে। কুনারের বক্তব্য, রাজনীতি ও পারিবারিক সম্পর্ককে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। তবে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অজিত মাহাতো মুচকি হেসে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘যুদ্ধে সবই ন্যায়সঙ্গত!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy