Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

জোট হয়নি, আইএসএফের দুই ‘তালুকে’ হতাশার ছবি

বামেদের সঙ্গে জোট করেই ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড়ে জেতে আইএসএফ। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বামেদের সঙ্গে জোট হয়েছিল তাদের।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রকাশ পাল , সামসুল হুদা
ভাঙড় , ফুরফুরা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৫৪
Share: Save:

সময়টা ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে। রাজ্যে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের ব্রিগেড সমাবেশ। গঙ্গার পশ্চিম পারের ফুরফুরা থেকে কাতারে কাতারে লোক এসেছিলেন সেই সমাবেশে যোগ দিতে। তিন বছরের মধ্যে বদলে গেল পুরো ছবিটা।

২০২৪-এর ৪ এপ্রিল। আইএসএফের সঙ্গে বামেদের লোকসভায় আসন সমঝোতা ভেস্তে গেল। হতাশ ফুরফুরা। হতাশ আইএসএফের আর এক ‘তালুক’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের অনেক কর্মীও। এ জন্য বামেদেরই তাঁরা দুষছেন। বামেরা অবশ্য তা মানেনি।

আইএসএফের বয়স তিন বছর। এটাই তাদের প্রথম লোকসভা নির্বাচন। দলের একমাত্র বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী ভাঙড় থেকে নির্বাচিত। তবে, দলের অন্যতম প্রধান ভরকেন্দ্র ফুরফুরা শরিফ। নওসাদের বাড়ি এখানেই। দলের প্রধান কার্যালয়ও এখানে।

ফুরফুরা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য সুকুমার ঘোষ এখন আইএসএফ কর্মী। তাঁর কথায়, ‘জোট হলে সার্বিক ভাবে ফলাফল ভাল হত। আমাদের মতো কর্মীরা জোটের অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু বামফ্রন্ট আমাদের দলের প্রতি সঠিক মূল্যায়ন করেনি।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাঙড়ের এক আইএসএফ নেতার ক্ষোভ, ‘‘দলের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে কর্মীরা হতাশ। আমাদের লড়াই মূলত তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে। বামেদের সঙ্গে নয়। গত কয়েকটি নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট করে আমরা ভাল ফল করেছিলাম। জোট না হওয়ায় ভাঙড়ে সেই সিপিএমের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। এটা কী ভাবে সম্ভব হবে?’’

বামেদের সঙ্গে জোট করেই ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড়ে জেতে আইএসএফ। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বামেদের সঙ্গে জোট হয়েছিল তাদের। ভাঙড়ের দু’টি ব্লকের যে ক’টি আসনে তারা প্রার্থী দিতে পেরেছিল, তার মধ্যে আইএসএফ জেলা পরিষদের একটি আসন, ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির ৫টি আসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮টি আসনে জেতে। সিপিএম বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতে তিনটি আসন পায়। ফুরফুরা পঞ্চায়েতেও সিপিএম-আইএসএফ মিলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছিল তৃণমূলের সঙ্গে।

ফুরফুরা শরিফ শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে। ভাঙড় যাদবপুর কেন্দ্রের আওতায়। দুই কেন্দ্রেই সিপিএম এবং আইএসএফ প্রার্থী দিয়েছেন। তবে, ভাঙড় ও ফুরফুরার আইএসএফ কর্মীদের একাংশ আশা করেছিলেন, জোট হলে হয়তো দু’পক্ষের কেউ প্রার্থী প্রত্যাহার করবে। কিন্তু তা হয়নি। ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে তৃণমূল বা বিজেপিরই লাভ হবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

দুই কেন্দ্রেই আইএসএফ একক ভাবে জিততে পারবে, এমন আশা এখনই করছেন না ওই দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা। শেখ এহতেসান সিদ্দিকী নামে ফুরফুরার এক আইএসএফ কর্মীর বক্তব্য, ‘‘জোট না হয়ে ভালই হয়েছে। আমাদের শক্তি কতটুকু, আমরা বুঝে নিতে পারব। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তা কাজে লাগবে।’’ একই সুর ভাঙড়ের এক আইএসএফ কর্মীর গলাতেও।

কর্মীদের একাংশের হতাশা নিয়ে নওসাদ বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম জোট হোক। আইএসএফ এবং বামেদের নিচুতলার কর্মীরাও তাই চেয়েছিলেন। কিন্তু বামেরা না চাইলে আমাদের কিছু করার নেই। আইএসএফ কর্মীরা জানেন, তাঁদের ভাইজানরা (এই নামেই নওসাদ এবং আইএসএফের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকীকে ডাকেন কর্মীরা) যেটা করবেন, ভালই করবেন।’’

ঘুরিয়ে নওসাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। জোট ভেস্তে যাওয়াকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ। তবে, লাভ-ক্ষতির বিশ্লেষণে যেতে নারাজ সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে মানুষ আছেন, তাঁরা বিচার করবেন কাকে ভোট দিলে তাদের হারানো যায়।’’

তথ্য সহায়তা: দীপঙ্কর দে।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 ISF CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy