—প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে পূর্বঘোষিত তিন দিনের বাস ধর্মঘট থেকে সরে দাঁড়াল পাঁচটি বেসরকারি বাস সংগঠনের মঞ্চ। রবিবার রাতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে ধর্মঘট থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে দিয়েছে তারা। গণপরিবহণ বাঁচাও কমিটির নাম দিয়ে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, ‘‘ইতিমধ্যে গত ১৬ মার্চ তারিখে সমগ্র ভারতে লোকসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাওয়ার সঙ্গে নির্বাচনী নিয়মবিধি চালু হওয়া এবং তৎসহ উচ্চতর প্রশাসনের অনুরোধে আমরা প্রস্তাবিত পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখতে বাধ্য হলাম।’’ সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনে বিরাট সংখ্যক বাস এবং মিনিবাস রাস্তায় না নামলে সমস্যায় পড়তে হত সাধারণ মানুষকে। গণপরিবহণ বাঁচাও কমিটির দাবি, এই ধর্মঘট বাস্তবায়িত হলে কলকাতা-সহ দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে প্রায় তিন হাজার বাস রাস্তায় নামাত না। ফলে ভোট প্রস্তুতি ও রমজান মাসের সময় যাত্রীসাধারণকে প্রবল সমস্যার মধ্যে পড়তে হত। কিন্তু প্রশাসনের অনুরোধে আপাতত এই ধর্মঘট স্থগিত করে দিচ্ছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের একটি মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে, ১৫ বছরের বয়ঃসীমা পেরিয়ে গেলে আর কোনও বাস শহরে চালানো যাবে না। শহর কলকাতার পরিবেশ রক্ষার জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হন বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত বিষয়টি পাঠিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টে। আপাতত সেই নির্দেশ বলবৎ রয়েছে। তাই এ বছর কয়েক হাজার বাস বয়ঃসীমার কারণে বাতিল হওয়ার পথে। কিন্তু পরিবহণ সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ গণপরিবহণ বাঁচাও কমিটির দাবি ছিল, কোভিড সংক্রমণের সময় বেসরকারি বাস চলেনি। লকডাউনের কারণে যাবতীয় পরিবহণ পরিষেবা স্তব্ধ ছিল। অথচ সেই সময়কেও ১৫ বছরের মধ্যে ধরে নেওয়া হচ্ছে। আর একসঙ্গে এত সংখ্যায় বাস বাতিল হয়ে যাওয়ার পর, বেসরকারি বাস মালিকদের অবস্থা এমন নয় যে, পকেটের টাকা খরচ করে সঙ্গে সঙ্গে এত সংখ্যায় নতুন বাস রাস্তায় নামানো যাবে। তাই সব দিক বিবেচনা করে আদালত এবং পরিবহণ দফতরকে বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ জানায় মঞ্চটি। বাস মালিকদের একাংশের দাবি ছিল, নতুন প্রযুক্তির বাস রাস্তায় নামাতে গেলে কমপক্ষে খরচ হবে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। কোভিড সংক্রমণের পর পরিবহণ শিল্পের যা অবস্থা ,তাতে বাস মালিকদের পক্ষে এত টাকা ঋণ নিয়ে নতুন বাস নামানো সম্ভব নয়। তাই বিকল্প কিছুর কথা ভাবতেই হবে সরকার পক্ষকে।
আদালতের রায়ে ২০২৪ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ১৫ বছর বয়ঃসীমার মধ্যে থাকা বাসগুলি বন্ধ করে দিতে হবে। তাই এ বিষয়টি বিবেচনার জন্য পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনকে চিঠি দিয়ে তাদের দাবি কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছিল মঞ্চটি। কিন্তু পরিবহণ দফতর এ বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য না করলে ১৮-২০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল তারা। মূলত ভোট ঘোষণার কারণেই আপাতত সেই ধর্মঘট হচ্ছে না। এই ধর্মঘটে শামিল হয়েছিল জয়েন কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট, বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি এবং ইন্টার অ্যান্ড ইন্টার রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশন। মঞ্চে তরফে তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের কারণে বেসরকারি পরিবহণ পরিষেবা সাধারণ মানুষ এবং রাজ্য প্রশাসনের কাছে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের রমজান মাসের কারণে আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হয়েছে। আপাতত আমরা সব দিক বিবেচনা করে ধর্মঘট স্থগিত রাখলাম। কিন্তু জুন মাসের ভোট পর্ব মিটে গেলে আমাদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারকে নতুন করে ভাবার কথা আমরা বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy