Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

ভোটে নয় সিভিকরা, নয় ইউনিফর্মেও 

সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে বলে তাঁরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন না, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এমনই অভিযোগ জানিয়েছিল কমিশনে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪৯
Share: Save:

লোকসভা ভোটে সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রিন পুলিশদের ব্যবহারে কড়া হল কমিশন। ভোটের দিন তো বটেই, এমনকী ভোটের আগের তিন দিন এবং ভোটের পরের দিনও ইউনিফর্মে কোনও কাজই করতে পারবেন না এঁরা। সেই মর্মেই নির্দেশ জারি করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রিন পুলিশ, স্টুডেন্ট পুলিশকে লোকসভা ভোটের কাজে বা তার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও কাজে নিযুক্ত করা যাবে না বলে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে চিঠি দিয়ে সম্প্রতি জানিয়েছে কমিশন। ওই চিঠিতেই জানানো হয়েছে, ভোটের আগের তিন দিন (পি মাইনাস থ্রি) এবং ভোটের পরের দিন (পি প্লাস ওয়ান) ইউনিফর্মে কোনও কাজই করতে পারবেন না সিভিকরা। ইতিমধ্যে চিঠি পাঠিয়ে কমিশনের ওই নির্দেশিকার কথা জানানো হয়েছে সব জেলায়।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা। নিজস্ব চিত্র

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা। নিজস্ব চিত্র

সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে বলে তাঁরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন না, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এমনই অভিযোগ জানিয়েছিল কমিশনে। তার জেরেই এই পদক্ষেপ বলে অনুমান। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘কমিশনের ওই নির্দেশিকা এসেছে জেলায়।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা জুড়লেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ মাফিক জেলায় পদক্ষেপ হবে।’’

এ নিয়ে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের দাবি, ‘‘একাংশ সিভিক তৃণমূলের ক্যাডার। ভোটের কাজে সিভিকদের কোনওভাবেই ব্যবহার করা যাবে না- এই দাবি আমাদেরও ছিল।’’ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান দীনেন রায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘তাতে কী! ভোট তো দেবে মানুষ।’’

বস্তুত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রিন পুলিশদের ভোটের কাজে ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন জেলায় সেই নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ ওঠে।তারপর গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ভোটে নিরাপত্তার কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কোনওভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনও হলফনামা দিয়ে হাই কোর্টকে জানিয়েছিল, সিভিকরা বুথ পাহারা দেবেন না। তাঁদের ভোটের নিরাপত্তার কাজেও ব্যবহার করা হবে না। তাঁরা শুধু বুথের বাইরে লাইন ঠিকঠাক করবেন। তবে সেই ভোটেই দুই ২৪ পরগনা-সহ একাধিক জেলায় বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিল, পুলিশের খাকি উর্দি গায়ে ভোট করাচ্ছে সিভিকরাই।

এ বার তাই গোড়া থেকেই কড়া কমিশন। চলতি মাসের গোড়ায় কলকাতায় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ এসে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে যে বৈঠক করে, সূত্রের খবর, সেখানেই সিভিক ভলান্টিয়ার প্রসঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল বেঞ্চ। তারা বুঝিয়ে দিয়েছিল, প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, কোনওভাবেই ভোটের কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না। ওই বৈঠকে সিভিক ভলান্টিয়ার এবং গ্রিন পুলিশ সম্পর্কে তথ্যও চেয়েছিল কমিশন। তারপরই এই নির্দেশিকা।

রাজ্যে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে। আগে সিভিক ভলান্টিয়ারের আলাদা ইউনিফর্ম ছিল না। কয়েক বছর হল আকাশি শার্ট এবং নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট— এই পোশাকেই কাজ করেন তাঁরা। পুলিশকে সহায়তা করতে এই বাহিনী গড়ে তুলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এরা চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত। দায়িত্ব মূলত যান-শাসন ও মেলা-উৎসব-পার্বণে ভিড় সামলানো। সিভিকদের বেতন বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবি পূরণে সর্বদা সচেষ্ট রাজ্য সরকার। সিভিকদের বেতন এক হাজার টাকা বাড়ানোর ঘোষণা রয়েছে এ বারের রাজ্য বাজেটে। তাঁদের মধ্যে থেকে রাজ্য পুলিশে কাজের সুবিধা দেওয়ার ‘কোটা’ও ১০ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy