—প্রতীকী ছবি।
প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের এ বারের লোকসভা ভোটে ডিউটি দেওয়া হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এই অভিযোগ তুলছিল বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। এ বার তাঁদের নতুন অভিযোগ, ভোটের ডিউটি করতে না চেয়ে জেলা প্রশাসনকে প্রতিবন্ধকতার শংসাপত্র দেখানো সত্ত্বেও ওই শিক্ষককে মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে পরীক্ষা দিতে বলা হচ্ছে।
শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে সরকারের প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেটও কি বিশ্বাসযোগ্য নয়? শিক্ষকদের দাবি, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম হল ৪০ শতাংশ বা তার বেশি প্রতিবন্ধকতা থাকলে তাঁকে ভোটের ডিউটি দেওয়া যাবে না। কিন্তু, ৪০ শতাংশের বেশি প্রতিবন্ধকতা আছে এরকম বহু শিক্ষককে ভোটের ডিউটি দেওয়া হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদ এলাকার একটি স্কুলের সহ প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার দত্ত জানাচ্ছেন, তাঁর ৬০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সার্টিফিকেটেও তা লেখা আছে। তিনি কানে শ্রবণযন্ত্র না লাগালে শুনতে পান না। ফলে তাঁর ভোটের কাজ করতে গিয়ে অসুবিধা হবে। তাই তিনি ভোটের ডিউটি থেকে বিরত থাকতে চাইছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, তিনি স্কুলে পড়ানোর কাজ যদি শ্রবণযন্ত্র লাগিয়ে করতে পারেন, তা হলে ভোটের ডিউটি করতে আপত্তি কোথায়? উজ্জ্বল বলেন, ‘‘শ্রবণযন্ত্র লাগিয়ে পড়ানোর কাজ করতে পারলেও ওই যন্ত্র টানা অনেকক্ষণ ধরে কানে রাখতে পারি না। টানা ওই যন্ত্র লাগিয়ে রাখলে কান ব্যথা করে। স্কুলে পড়ানোর সময় ৪০ মিনিটের মতো যন্ত্র লাগিয়ে আবার খুলে রাখি। কিন্তু ভোটের কাজ করতে গেলে আমাকে টানা এটা পড়ে থাকতে হবে।’’ উজ্জ্বলের দাবি, কোনও বারই তিনি ভোটের ডিউটি করেননি। এ বারেও তিনি ভোটের ডিউটি থেকে বিরত থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা সার্টিফিকেট দেখানোর পরেও তাঁকে মেডিক্যাল বোর্ডে গিয়ে পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।
শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ভোটের ডিউটি প্রত্যাহার, ভোট কর্মী, গণনা কর্মী এবং বিএলও-দের ভাতা বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন দাবিতে সিইও দফতরে রবিবার দুপুরে বিক্ষোভ দেখায় ও ডেপুটেশন দেয় শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চ। কিঙ্কর জানান, ডেপুটেশন গ্রহণ করেছেন অ্যাডিশনাল সিইও দিব্যেন্দু দাস। কিঙ্করের দাবি, দিব্যেন্দু তাঁদের আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, বিশেষ ভাবে সক্ষমদের নাম প্রত্যাহারের জন্য জেলাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ফান্দার এলাকার শিক্ষক কানাইলাল চন্দ্র জানিয়েছেন, মেরুদন্ডের অসুবিধার কারণে তাঁর চলাফেরা করতে অসুবিধা হয়। তিনি ঘাড় ঘোরাতেও পারেন না। স্কুলে তাঁকে ক্লাস করতে হয় অনেকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে। কানাইলাল বলেন, ‘‘আমার ৬০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা। ভোটের ডিউটি করতে গেলে ভোটে জিনিসপত্রও ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত বয়ে নিয়ে যেতে হয়। যা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ভোটের কাজ থেকে বিরত থাকতে চেয়ে আবেদন করেছি।"
শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘নিয়মই আছে, ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা থাকলে তাঁকে ভোটের ডিউটি দেওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের কাছে এরকম প্রচুর উদাহরণ আছে যেখানে ৬০ শতাংশ বা তারও বেশি প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও ভোটের ডিউটি দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা ভোটের কাজ থেকে বিরত থাকার আবেদন করলে তাঁদের আবার মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে টেস্ট দিতে বলা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy