গাইঘাটার চাঁদপাড়ায় নিরাপদ সর্দার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
সন্দেশখালি-কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার। এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। পরে আদালতের নির্দেশে জামিন পেয়েছেন নিরাপদ। অভিযোগ উঠেছিল, থানায় লিখিত অভিযোগ হওয়ার আগেই পুলিশ নিরাপদকে গ্রেফতার করেছিল। এ বার তাঁকে সামনে রেখেই লোকসভা ভোটের আগে গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রচার শুরু করেছে বামেরা।
প্রচারে সন্দেশখালির মানুষের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, সন্দেশখালির মানুষের প্রতিরোধ, প্রতিবাদে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ। সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছেন, গোটা সন্দেশখালি-পর্বে আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছেন নিরাপদ। জেলা জুড়ে তো বটেই, রাজ্যের মানুষেরও তাঁকে নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। মানুষ সন্দেশখালির কথা তাঁর মুখ দিয়ে শুনতে চাইছেন। জেলা সিপিএম নেতৃত্বে তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপদকে নিয়ে গিয়ে সভা করানো হবে।
সেই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সোমবারই নিরাপদ গাইঘাটার চাঁদপাড়ায় দলীয় কর্মসূচিতে এসে সভা করেন। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার তাঁর অশোকনগর ও হাবড়াতেও সভা করার কথা।
জেলা সিপিএম নেতৃত্বে মনে করছেন, নিরাপদ এমনিতেই রাজ্য নেতা ছিলেন। দলের খেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তিনি। সেই সূত্রে গোটা রাজ্যের নানা প্রান্তে যেতে হয়। সন্দেশখালির লড়াই তাঁকে নিয়ে মানুষের মধ্যে আরও বেশি আগ্রহ তৈরি করেছে।
সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সন্দেশখালির আন্দোলন থেকে আমরা শিক্ষা পেয়েছি, আক্রমণের বিরুদ্ধে সমস্ত মানুষের রুখে দাঁড়ানো দরকার। এ কথা জেলা তো বটেই, গোটা রাজ্যে আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই। এই কাজে সন্দেশখালির আন্দোলনে এক জন যোগদানকারী হিসাবে মানুষের মধ্যে নিরাপদ সর্দারকে নিয়ে চাহিদা বেড়েছে। ওঁকে দিয়ে বিভিন্ন সভায় বক্তৃতা করিয়ে আমরা মানুষের সেই চাহিদা পূরণ করছি।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘সন্দেশখালির মানুষের প্রতিবাদ-প্রতিরোধের প্রতীক নিরাপদ সর্দার। তাঁকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। শুধু জেলায় নয়, গোটা রাজ্যের মানুষের কাছে নিরাপদ সর্দারকে নিয়ে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। মানুষ তাঁর কথা শুনতে চাইছেন।’’
কী বলছেন নিরাপদ?
তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দলে প্রচারের মুখ বলে কিছু হয় না। আমি দলের এক জন কর্মী। রাজ্য কমিটির সদস্য হিসাবে দল যেখানে পাঠাবে, যে কর্মসূচি দেবে, তা পালন করাই আমার কাজ।’’ তবে কী লোকসভা ভোটেও দল প্রার্থী করতে পারে তাঁকে? নিরাপদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলে কে ভোটে দাঁড়াবেন, তা বামফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নেয়। বামফ্রন্ট যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত।’’
সোমবার চাঁদপাড়ার সভায় নিরাপদ সন্দেশখালির ঘটনার কথা বলেন। সেখান মানুষের উপরে হওয়া নির্যাতন-বঞ্চনার কথা বলেন। তাঁর বক্তৃতা শুনতে পথচলতি অনেকে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। নিরাপদের কথায়, ‘‘শেখ শাহাজাহান অন্যায় করেছে বলে গ্রেফতারের দাবি উঠেছিল। তার গ্রেফতারে আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে না। সন্দেশখালির মানুষ চাইছেন এমন পরিবেশ, যেখানে মানুষ নিজের মতো বাঁচতে পারবেন। নিজের কথা বলতে পারবেন। নিজের ভোট দিতে পারবেন। সেই পরিবেশের জন্য আন্দোলন চলবে।’’ সন্দেশখালির মানুষের লড়াই রাজনৈতিক লড়াই নয় বলে এ দিন দাবি করেন তিনি।
বিষয়টিকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, "নিরাপদ সর্দারকে আগে সন্দেশখালিতে সভা করতে বলুন। ওখানকার মানুষই ওঁর কথা শুনবে না, জেলার বাকি জায়গা তো দূরের কথা!"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy