—প্রতীকী ছবি।
মুম্বইয়ে আগামিকাল রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র শেষে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র সমাবেশে যোগ দিচ্ছে না দুই প্রধান বাম দল সিপিএম এবং সিপিআই। সরকারি ভাবে বামেদের বক্তব্য, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ‘ব্যস্ত’ থাকবেন ত্রিপুরায় আর দিল্লিতে থাকবেন সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা। কিন্তু তিনিও দলীয় কাজে ‘ব্যস্ত’ থাকবেন। বাস্তবে বিভিন্ন রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের মনোভাবে দুই বাম দলের শীর্ষ নেতারা ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, কোনও রাজ্যেই কংগ্রেস সিপিএম, সিপিআই-কে একটি, দু’টি আসনও ছাড়তে চাইছে না।
কংগ্রেসের এমন মনোভাব নিয়ে অসন্তোষ গোপন করছেন না বাম নেতারা। এক নেতার বক্তব্য, ‘‘আমরা ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। বিরোধী জোটে ফাটল ধরাতে চাইছি না। কিন্তু কংগ্রেসের আসন সমঝোতায় প্রশ্নে আরও নমনীয় হওয়া উচিত ছিল।’’ সিপিএম সূত্রের মতে, বামেরা কংগ্রেসের সবচেয়ে বিশ্বস্ত শরিক। যাঁরা কোনও ভাবেই বিজেপি-র সঙ্গে যাবে না। রাহুল নিজে কেরলে গিয়ে বামেদের বিরুদ্ধে লড়ছেন। তবু পশ্চিমবঙ্গে বামেরা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতায় রাজি হয়েছে। কিন্তু অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে রাজস্থান, মহারাষ্ট্র থেকে তেলঙ্গনা— কোথাও বামেদের একটি-দু’টি আসন ছাড়তেও কংগ্রেস রাজি হচ্ছে না। এই অনড় আচরণে তৈরি অসন্তোষই মুম্বইয়ের জনসভায় বাম নেতাদের অনুপস্থিতির কারণ। মুম্বইয়ের এই জনসভায় কার্যত ‘ইন্ডিয়া’র নেতারা প্রথম বার এক মঞ্চে আসছেন। সেখানে বাম নেতাদের অনুপস্থিতি নতুন করে ‘ইন্ডিয়া’য় ফাটল নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেবে বলে বাম নেতাদের আশঙ্কা।
‘ইন্ডিয়া’য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কংগ্রেসের প্রতি ক্ষোভের মূল কারণ ছিল, রাহুলের সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরির ব্যক্তিগত সখ্য। তৃণমূলের দাবি ছিল, ইয়েচুরির কথা শুনে চলছেন রাহুল। তৃণমূলের মতো এখন বাম নেতৃত্বও ‘ইন্ডিয়া’র আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের মনোভাবে অখুশি। পশ্চিমবঙ্গে জোটের কথা মাথায় রেখে কেউই অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। কিন্তু বাম নেতাদের বক্তব্য, ত্রিপুরায় বামদের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতার সম্ভাবনা থাকলেও কংগ্রেস একতরফা প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেস এখনও বিহারে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করতে পারেনি। অন্ধ্রে কংগ্রেস বামেদের জন্য শুধু বিজয়ওয়াড়া আসন ছাড়তে রাজি। অসম, মণিপুর নিয়েও কংগ্রেস কথা বলতে রাজি হচ্ছে না।
গত লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের কেরলে গিয়ে ওয়েনাড় আসনে লড়ায় বামেদের ক্ষোভ রয়েছে। তিনি ওয়েনাড় থেকে এ বারও প্রার্থী হচ্ছেন। সিপিআই আগেই ওই আসনে দলের জাতীয় কর্মসমিতি তথা মহিলা সংগঠনের নেত্রী অ্যানি রাজাকে প্রার্থী করেছে। তিনি আবার সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা-র স্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে ডি রাজা মুম্বইয়ে রাহুলের জনসভায় হাজির হলে অ্যানি রাজার পক্ষেও অসুবিধা হত বলে বাম নেতারা মনে করছেন। রাজা আগেই বলেছেন, রাহুল গান্ধীর স্তরের কংগ্রেস নেতার এমন কোনও আসনে প্রার্থী হওয়া উচিত ছিল, যেখানে তিনি কেন্দ্রের শাসক দল আরএসএস-বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন।
সিপিএম নেতারা মনে করছেন, গত লোকসভা নির্বাচনে কেরলে একটি মাত্র আসনে জিতেছিল সিপিএম। সেই আলাপ্পুঝা আসনে রাহুলের ঘনিষ্ঠ কে সি বেণুগোপাল প্রার্থী হয়েছেন। তাই দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে বেণুগোপাল পশ্চিমবঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে বিশেষ উৎসাহ দেখাচ্ছেন না, যতটা তিনি তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে উৎসাহী ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy