রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
দুই প্রবল প্রতিপক্ষ বিজেপি ও তৃণমূল প্রচারে নেমে পড়েছে। ভরে উঠছে একের পর এক দেওয়াল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আসন সমঝোতা নিয়ে স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারল না কংগ্রেস! সূত্রের খবর, বাংলায় তারা ১০ থেকে ১২টি আসনে লড়তে চায় বলে সিপিএমকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে এআইসিসি-র তরফে। তবে সেই আসন কোথায় কত, তার কোনও দিশা এখনও মেলেনি। উল্টে এআইসিসি নেতৃত্ব বলতে শুরু করেছেন, বাংলায় বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন কমিয়ে আনতে কোথাও কোথাও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্বল প্রার্থী দিয়ে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’য়ের কৌশল নিতে হতে পারে। সিপিএম তথা বাম নেতৃত্ব অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে এমন পিছনের দরজার সমঝোতা মানতে একেবারেই রাজি নন। কংগ্রেস এই দোলাচল চালিয়ে গেলে আর দিনদুয়েক অপেক্ষা করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিতে পারে বামফ্রন্ট।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মঙ্গলবার ছিলেন দিল্লিতে। এআইসিসি-র তরফে সিপিএমের কাছে বার্তা এসেছে, বাংলায় তারা বামেদের সঙ্গে রফা করেই লড়তে চায়। তাদের লক্ষ্য ১০-১২টি আসন। তবে কোথায় কোন আসন, সে সব হিসেব প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বই দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বৈঠকের জন্য লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর এর মধ্যে দিল্লি যাওয়ার কথা। তার ফলে, আসন-রফা নিয়ে সিপিএনের সঙ্গে কোথায় কখন কংগ্রেসের মুখোমুখি আলোচনা হবে, তার এখনও কিছু ঠিক নেই!
বামফ্রন্টের হয়ে যে চার দল লোকসভা ভোটে লড়াই করে, তাদের নিয়ে এ দিন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৈঠকে বসেছিলেন ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। সিপিএমের তরফে বৈঠকে ছিলেন পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র। সূত্রের খবর, শরিক দলের কেউ তাদের ভাগের আসন ছাড়তে রাজি নয়। আবার নওসাদ সিদ্দিকীর দাবি মেনে সিপিএম ডায়মন্ড হারবার ছাড়তে রাজি হলেও আইএসএফ উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও মুর্শিদাবাদে একটি করে আসনে লড়তে চায়। যা মেনে নেওয়া বামেদের পক্ষে সম্ভব নয়। আবার কংগ্রেসও কিছুই স্পষ্ট করে জানাচ্ছে না। এমতাবস্থায় বিমানবাবুরা পড়েছেন আতান্তরে!
গোটা বিষয়টিতে বিলম্ব প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর এ দিন বহরমপুরে বলেছেন, ‘‘এত হড়বড় করার কিছু নেই! ওদের (তৃণমূল) তাড়া আছে, তাড়াতাড়ি করেছে। আমাদের তাড়া কম, তাই তাড়াতাড়ি করিনি। এমন কোনও নিয়ম নেই, ওদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে হবে!’’ বামেদের সঙ্গে সমঝোতা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘জোট অবশ্যই হবে। দেখতে পাবেন সব!’’
কবে দেখতে পাওয়া যাবে, সেই উত্তরের সন্ধানের মধ্যেই কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্রে বলা হয়েছে, বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার ‘সম্ভাবনা’ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে তৃণমূল যেখানে শক্তিশালী, কংগ্রেস সেখানে প্রার্থী না-ও দিতে পারে। আবার ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ও হতে পারে! ওই সূত্রের বক্তব্য, কংগ্রেসের প্রধান উদ্দেশ্য বিজেপির আসন সংখ্যা কমানো। সেই অনুযায়ী রণকৌশল নেওয়া হবে। কংগ্রেস বাংলায় বিজেপি- বিরোধী ভোটের বিভাজন চায় না। তবে ডজ়নখানেক আসনে তারা সর্ব শক্তি দিয়ে লড়তে চায়। কংগ্রেসেরই একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেনুগোপাল কেরলে প্রার্থী হয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়ছেন। তাই বাংলায় বামেদের হাত ধরার প্রভাব কেরলে পড়ুক, তিনি তা চাইছেন না। এই রকম নানা অঙ্ক কাজ করছে এআইসিসি-র অন্দরে।
যার প্রেক্ষিতে সিপিএমের পলিটব্যুরোর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘এখনও ‘সম্ভাবনা’ খুঁজতে শুরু করলে শেষ করবে কবে! আর তৃণমূলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনও বোঝাপড়ায় আমরা নেই। তেমন হলে আর দিনদুয়েকের মধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy