বাংলার ভোটের ভারপ্রাপ্তদের ভোট-প্রস্তুতির হিসাব দিতে হবে। —প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হবে সোমবার দুপুরে। তার আগেই বাংলার ভোটের ভারপ্রাপ্তদের জানাতে হবে ভোট নিয়ে তাঁদের প্রস্তুতি কতদূর এগিয়েছে। কতটা কাজ এগোতে পেরেছেন তাঁরা। কত কাজই বা এখনও করা বাকি রয়ে গিয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টায় এই ব্যাপারে তাঁদের জবাব দিতে হবে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে।
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাবের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার দুপুরে তিনি ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলবেন বাংলার সমস্ত জেলাশাসক এবং রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে। ঠিক দুপুর ১২টায় হবে বৈঠক। সেই বৈঠকেই বাংলার ভোটের প্রাথমিক প্রস্তুতি সংক্রান্ত কাজ, যা দ্রুত সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন, তার যাবতীয় হিসাব ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের কাছ থেকে চাইবেন সিইও আফতাব।
যে হেতু ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে এবং মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট অর্থাৎ আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধিও চালু হয়ে গিয়েছে, তাই কোথাও সেই বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না বা হলে তা আটকানোর জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা-ও জানতে চাওয়া হবে ভারপ্রাপ্তদের কাছে।
শনিবার ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সময়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানিয়েছিলেন এই ভোটে চার ‘ম’ বা ‘এম’-এর অপব্যবহার রুখতে বদ্ধ পরিকর তিনি। এই চারটি ‘এম’ কী কী? রাজীব বলেছিলেন, মাসল (পেশিশক্তি), মানি (অর্থশক্তি), মিস ইনফরমেশন (ভুয়ো তথ্য) এবং মডেল কোড অফ কনডাক্ট (আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি)। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, ‘‘আমরা ভোটের আগে, ভোটের সময়ে এবং ভোটের পরে রক্তস্নান চাই না। হিংসামুক্ত ভোট করানোর বিষয়ে আমরা বদ্ধপরিকর। কিন্তু আমাদের সামনে ‘ফোর এম’-এর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা তা মোকাবিলা করব এবং দুনিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্রের এই উৎসবকে হিংসাহীন রাখতে কাজ করব।’’
পেশিশক্তি প্রদর্শন বলতে ভোটকে কেন্দ্র করে হওয়া হিংসা বা সন্ত্রাসের কথা বুঝিয়েছেন রাজীব। এ প্রসঙ্গে কমিশনের নির্দেশ ছিল, পুলিশ-প্রশাসনের যা যা করার, তা দ্রুত করে ফেলতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম, এক জায়গায় যিনি তিন বছর বা তার বেশি সময় ধরে কাজ করছেন, তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দিতে হবে। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় জেলাশাসকেরা কী পদক্ষেপ করেছেন তা জানাতে হবে সিইও আরিজকে।
ভোটে অর্থ বা উপঢৌকনের লেনদেন রুখতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন কমিশনার। কোনও নেতা বা নেত্রী এমন কোনও কাজ করছেন কি না তাতে নজরদারি চালানোর জন্য প্রয়োজনে পুলিশবাহিনীর তল্লাশি এমনকি, ‘ড্রোন’ ওড়ানোর কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। রবিবার থেকেই ভোটের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। তাই প্রচারে এ ধরনের ঘটনা রুখতে পদক্ষেপ করা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
সমাজমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমে যাতে ভুয়ো তথ্য বা খবর না ছড়ানো হয়, সে ব্যাপারেও কড়া বার্তা দিয়েছিল কমিশন। ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক কথা, ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং ঘৃণাভাষণের সমাজ মাধ্যমবাহিত প্রচার এড়াতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার কথা জানিয়েছিলেন কমিশনার রাজীব। সে ব্যাপারেও কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হবে।
এ ছাড়া ভোটের গণনা কোথায় হবে। ভোটদান কেন্দ্র গুলি চিহ্নিত করা হয়েছে কি না সে বিষয়েও জানতে চাইবেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক।
কমিশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী ভোটার কার্ড না থাকলেও ভোট দেওয়া যাবে, যদি ভোটার তালিকায় নাম থাকে। সে ক্ষেত্রে ভোটদাতা তাঁর যে কোনও পরিচয়পত্র দেখালেই ভোট দিতে পারবেন। বাংলার ভোটের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের ইতিমধ্যেই সে কথা জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে সমস্ত কেন্দ্রে। সেই কাজ এগিয়েছে কি না তারও জবাবদিহি করতে হতে পারে আধিকারিকদের।
এ ছাড়া কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যে খুব শীঘ্রই ‘বড় সংখ্যক’ কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে চলেছে। প্রথম দফার ভোটের আর ঠিক এক মাস এক দিন বাকি। তার আগে প্রথম দফার ভোট উপলক্ষে রাজ্যে প্রায় ২৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে রাজ্যে। বাকি কেন্দ্রীয় বাহিনীও খুব শীঘ্রই এসে পৌঁছে যাবে বলে জানা গিয়েছে কমিশন সূত্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy