নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে সন্দেশখালিকে ‘অস্ত্র’ বানাতে চায় বিজেপি। শুধু বাংলাতেই নয়, গোটা দেশেই মহিলা ভোট টানতে পদ্মশিবির সন্দেশখালিকে ‘হাতিয়ার’ করবে। প্রথম থেকেই তাই বিজেপি সন্দেশখালি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরা তো বটেই, দলের বিভিন্ন মোর্চার (শাখা সংগঠন) নেতারাও সন্দেশখালি গিয়েছেন। প্রথম দফায় দিল্লি থেকে বিভিন্ন কমিশনের প্রতিনিধিরাও সফর করে গিয়েছেন। সোমবার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত সন্দেশখালিতে টানা কর্মসূচিও নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। তার মধ্যেই রয়েছে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশ।
বিজেপি সূত্রে সর্বশেষ যা জানা গিয়েছে, তাতে মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় থেকে বুধবার বারাসতে সভা করতে যাবেন মোদী। দলের লক্ষ্য, মহিলা ভোটারদের জমায়েত। তবে শুধু রাজ্য বিজেপিই নয়, জাতীয় স্তরেও বারাসতের সভা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। বারাসতে ‘মহিলা সম্মেলন’ যাতে সফল হয়, তার জন্য আগেই রাজ্যে এসেছেন বিজেপি মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সভানেত্রী বনথি শ্রীনিবাসন। সোমবারই রাজ্যে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বৈজয়ন্ত জয় পাণ্ডা। তিনি মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় ইনচার্জের দায়িত্বেও রয়েছেন। তিনি বারাসতে সভাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি সাংগঠনিক বৈঠকও করেছেন।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, বারাসতের সভায় সন্দেশখালিতে ‘নির্যাতিতা’ হিসাবে যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা থাকতে পারেন। মুখ ঢেকেই তাঁরা মোদীর মুখোমুখি হবেন। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি এখনও পর্যন্ত এমন দাবি করেনি। সম্প্রতি মোদী রাজ্যে এসে আরামবাগ এবং কৃষ্ণনগরের সভায় সন্দেশখালি প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন। সেই সূত্র ধরে বারাসতে আক্রমণের মাত্রা আরও বেশি হবে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, বারাসতের পাশের লোকসভা কেন্দ্র হল বসিরহাট। তারই অন্তর্গত সন্দেশখালি। মোদী বারাসতে সন্দেশখালি নিয়ে আরও বেশি করে আক্রমণাত্মক হতে পারেন বলেই মনে করছে দল। সেই কারণে এই সভাকে ‘জাতীয় কর্মসূচির মঞ্চ’ বানানোর পরিকল্পনা।
সোমবার থেকেই মহিলা মোর্চা সর্বভারতীয় স্তরে ‘শক্তিবন্ধন’ নামে কর্মসূচি শুরু করেছে। এর অঙ্গ হিসাবে সোমবার বিভিন্ন রাজ্যে ‘রান ফর মোদী’ শীর্ষক ম্যারাথন হয়েছে। মঙ্গলবার মোর্চা দেশ জুড়ে এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে মহিলাদের বাইক মিছিলের পরিকল্পনা নিয়েছে। মোট ৪,১২৩টি বিধানসভা এলাকায় মিছিলের পরিকল্পনা রয়েছে। তিন দিনের কর্মসূচিও শেষ হবে বারাসতে মোদীর বক্তৃতার মধ্য দিয়েই। সেই বক্তৃতা দেশের সর্বত্র সরাসরি সম্প্রচার করতে চায় মহিলা মোর্চা। ঠিক হয়েছে, বিজেপির সাংগঠনিক জেলা কেন্দ্র এবং মণ্ডল মিলিয়ে মোট ৫,২৫৭ জায়গায় মহিলাদের সংগঠিত করা হবে।
কেন এমন উদ্যোগ? মোর্চার সর্বভারতীয় মিডিয়া ইনচার্জ নীতু দাবাস আনন্দবাজার অনলাইনকে সোমবার বলেন, ‘‘আমরা চাই সন্দেশখালি যে নারকীয় ঘটনা দেখেছে, তার কথা গোটা দেশ জানুক। এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, যাঁর নামে ‘মমতা’ রয়েছে, তাঁর রাজ্যেই মহিলাদের উপরে যে নির্মমতা চলেছে, তা গোটা দেশের জানা উচিত।’’ তৃণমূল সারা দেশে বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করার এত প্রচার কেন? নীতু বলেন, ‘‘শুধু তৃণমূল কেন, ওদের জোটসঙ্গীরাও তো মহিলাদের উপর বাংলায় হওয়া নির্যাতন নিয়ে চুপ। আর আমরা এটাই বলতে চাই যে, একমাত্র মোদীজির নেতৃত্বেই মহিলারা সুরক্ষিত।’’
মণ্ডলে মণ্ডলে বারাসতের সভার সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করার নির্দেশ রয়েছে বাংলার নেতৃত্বকেও। তবে দল ঠিক করেছে, কাছাকাছি জেলার মহিলাদের মোদীর সভাতেই নিয়ে আসা হবে। সোমবার এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় ‘আইসিডিএস’ প্রকল্পের কর্মীদের একটি সম্মেলনও হয় বিজেপির উদ্যোগে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সভায় হাজির করতে চায় বিজেপি। শুধু মহিলাদের হাজির করাই নয়, বারাসতে প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চ মহিলা মোর্চা নেতৃত্বের দখলেই থাকবে। সুকান্ত বা শুভেন্দুর পাশাপাশি বক্তা হতে পারেন মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি বনথি শ্রীনিবাসন এবং রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy