—প্রতীকী চিত্র।
বুথ স্তরে ‘দুর্বল’ সংগঠনকে একের পর এক ভোটে বিপর্যয়ের কারণ বলে চিহ্নিত করেছিলেন বিজেপি নেতারা। জোর দিয়েছিলেন শক্তিশালী বুথ গঠনে। দুয়ারে কড়া নাড়ছে আরও একটি লোকসভা ভোট। বিজেপির অন্দর মহলের খবর, বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সিংহ ভাগ বুথেই এখনও কমিটি গড়া যায়নি।
যদিও, বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে ১৯৪১টির মধ্যে ১৬০০টি বুথে কমিটি গড়া হয়ে গিয়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনের পরে বিভিন্ন সময়ে জেলায় প্রচারে এসেছেন এ রাজ্য ও ভিন্ রাজ্যের বহু নেতা। দলীয় সূত্রে খবর, তাঁদের প্রত্যেকেই ভোটে জিততে বুথে শক্তিশালী সংগঠন গড়ার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কাজে সাফল্য মেলেনি। গত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি বহু আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। এর জন্য শাসক দলের ‘সন্ত্রাসকে’ দায়ী করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও দলেরই একাংশ ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় অকপটে স্বীকার করেন, বুথ স্তরে দুর্বল সংগঠনই প্রার্থী দিতে না পারার মূল কারণ। দোকানে, বাজারে, চায়ের আড্ডায় কান পাতলে শোনা যায়, পঞ্চায়েত ভোটের পরে সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়ে জোরদার আন্দোলন করতে দেখা যায়নি বিজেপিকে। কালনা শহর এবং আরও বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী-কলহ’ প্রকাশ্যে এলেও সেই সুযোগ কাজে লাগাতে গেরুয়া শিবিরে তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি।
উল্টে মাস দেড়েক আগে নিভুজিমোড় এলাকায় প্রকাশ্যে আসে বিজেপির ‘কোন্দল’। এমনকি নেতা-কর্মীদের হাতাহাতি করতেও দেখা যায়। এক ‘গোষ্ঠীর’ নেতাদের অনেককে বাদ দিয়ে কৃষ্ণদেবপুর এলাকায় বৈঠক করেন অন্য ‘গোষ্ঠীর’ নেতারা। এই সব ঘটনার বিশ্লেষণ করে চিন্তিত বিজেপি একাংশ। যদিও প্রকাশ্যে তাঁরা দাবি করছেন, দলে কোথাও কোনও গোলমাল থাকলেও ভোটে তার প্রভাব পড়বে না।
এই আত্মবিশ্বাসের কারণ? বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রামমন্দির উদ্বোধনের পরে চিত্র বদলে গিয়েছে। মন্দির উদ্বোধনের আগে প্রসাদী চাল প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। গ্রাম চলো অভিযানে বুথ স্তরে সাড়া মিলেছে।
বুথে কতটা শক্তিশালী বিজেপি? গোপালের দাবি, ‘‘১৬০০ বুথে কমিটি তৈরি হয়েছে। বাকি বুথগুলি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়। সেখানে কমিটি না হলেও মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।’’ তিনি মনে করেন, ‘‘একের পর এক দুর্নীতি এবং সন্দেশখালির ঘটনা মানুষের চোখ খুলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ তৃণমূলের থেকে পরিত্রাণ চান।’’
তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। সে সব আবেদন খতিয়ে দেখার পরে মার্চে ‘যোগদান পর্ব’ শুরু হবে। গোপালের কথায়, ‘‘লড়াইয়ের জন্য দল প্রস্তুত।’’ নেতৃত্বের একাংশের আশা, রামমন্দিরের উদ্বোধন ও সন্দেশখালির ঘটনায় বিজেপির পালে হাওয়া লেগেছে। বুথ স্তরে সংগঠন না থাকলেও এই হাওয়াই জিতিয়ে দিতে পারে তাঁদের।
বিজেপি নেতাদের দাবিকে ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল’ বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য মুখপাত্র তথা কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের পাল্টা দাবি, ‘‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ রাজ্য সরকারের বহু উন্নয়নমুখী প্রকল্পে সাধারণ মানুষের উপকার হয়েছে। উন্নয়নের নিরিখেই মানুষ ভোট দেবেন। সাধারণ মানুষ সঙ্গে নেই বলেই বিজেপি সব জায়গায় বুথ স্তরে দুর্বল। গত বারের থেকে এ বার আরও বেশি ভোটে বর্ধমান পূর্বে জিতবে দল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy