বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকের তর্কাতর্কি, খড়্গপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের আবহে বদলেছে রামনবমীর চেনা রীতি। মিশ্র সংস্কৃতির রেলশহরে এ বার আখড়ার শোভাযাত্রায় লাঠি, অস্ত্র প্রদর্শন থেকে ডিজে ব্যবহারে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আর তা নিয়ে থানায় অবরোধ করে আইসির সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ালেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। আর প্রশাসনের পদক্ষেপে ‘আস্থা’ রাখলেন তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া।
আজ, বুধবার রামনবমী উপলক্ষে খড়্গপুর শহরের ১৭টি আখড়া কমিটি রামপুজো ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। ভোট আবহে এ বার এতে রাজনীতিও জুড়েছে। সোমবার রাতে খড়গপুর টাউন থানার পক্ষ থেকে বৈঠক ডেকে আখড়া কমিটিগুলিকে রাজ্যের পাঠানো নির্দেশিকা জানিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, এ বার রামনবমীর শোভাযাত্রায় ডিজে ব্যবহার করা যাবে না। সেই সঙ্গে লাঠি, তরোয়ালের মতো অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না। এমনকি বোর্ডেও অস্ত্র প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে খড়্গপুর টাউন থানায় সদলবলে পৌঁছন অগ্নিমিত্রা। অতিরিক্ত বাধা-নিষেধের বিরোধিতা করে থানার সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। আইসি রাজীব পালকে উদ্দেশ্য করে নানা মন্তব্যও করেন অগ্নিমিত্রা পাল। পরে থানা থেকে বেরিয়ে আসেন আইসি ও এসডিপিও। মাইক হাতে আইসি রাজ্যের নির্দেশিকা পড়ে শোনান। অন্য অনুষ্ঠানে ডিজে বাজলেও কেন রামনবমীতে ডিজে বন্ধ করা হচ্ছে সেই প্রশ্ন তোলেন অগ্নিমিত্রা। আখড়া কমিটিগুলিকে থানা থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। পরে থানার ভিতরে যেতে চান অগ্নিমিত্রা। তখন আইসি-র সঙ্গে তর্জনি উঁচিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি প্রার্থী।
পরে অগ্নিমিত্রা বলেন, “আখড়াদের সঙ্গে এতদিন ধরে প্রশাসনের বৈঠক হচ্ছে। অথচ সব কিছু আয়োজনের পরে আগের দিন এসব নির্দেশিকা বলছেন? এত বছরের রীতি বদলে দেবেন? পশ্চিমবঙ্গের আইন তো হিন্দুদের জন্য আলাদা হতে পারে না। আমাদের দাবি এই নির্দেশিকা প্রত্যহার করা হোক।” জেলার নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী অবশ্য বলেন, “রামনবমী সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা রয়েছে তা যথাযত পালিত হবে। সারা রাজ্যের জন্য একই নির্দেশিকা জারি হয়েছে।”
আখড়া কমিটিগুলো অবশ্য এমন নির্দেশিকায় অসন্তুষ্ট। খড়্গপুরের ঝোলি বজরং আখড়া কমিটির সভাপতি রিতেন প্রসাদ বলেন, “রাতে থানায় বৈঠকে বলে দিয়েছে বোর্ডেও এ বার অস্ত্র প্রদর্শিত করা যাবে না। মিছিলে লাঠি থাকবে না। কিন্তু এসব না থাকলে শোভাযাত্রা হবে কী ভাবে! এটাই তো আমাদের দীর্ঘবছরের পুরনো রীতি।” মালঞ্চ সঙ্কটমোচন হনুমানমন্দির জয় বজরং আখড়ার সম্পাদক টিঙ্কু সিংহেরও বক্তব্য, “পুলিশ বলে দিয়েছে ডিজে বাজানো যাবে না। লাঠিও শোভাযাত্রায় নেওয়া যাবে না। অস্ত্র বোর্ডেও সাজানো যাবে না। চারটের বেশি গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না। তাহলে শোভাযাত্রা হবে কী নিয়ে! অস্ত্র ছাড়া তো পুজোই হয় না।”
মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া অবশ্য বলছেন, “সামনে নির্বাচন। রামনবমী যাতে সুষ্ঠুভাবে পালিত হয় তাই প্রশাসন কিছু পদক্ষেপ করেছে। কিছু ক্ষেত্রে নিয়মে যদি কিছু ছাড় দেওয়া যায় তার জন্য আমিও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু অগ্নিমিত্রা পাল মাইলেজ পাওয়ার জন্য এ সব করছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy