মালা রায়। —ফাইল চিত্র।
বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা আসনের ঘাসফুল প্রার্থী মালা রায়েরও মনোনয়ন বাতিলের দাবি তুলল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, মালা রায় কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন থাকা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন। যা ‘অফিস অফ প্রফিট’-এর আওতাধীন। মালা তাঁর মনোনয়ন সম্পর্কে এই অভিযোগ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, তিনি ২০১৯ সাল থেকে সাংসদ। পাশাপাশি, কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন। অভিযোগ জানাতে হলে তখন কেন চুপ ছিল বিজেপি? পাশাপাশি, মালার দাবি, তিনি আইন-বহির্ভূত কোনও কাজ করেননি।
লোকসভার সপ্তম দফার নির্বাচন রয়েছে আগামী ১ জুন। তার আগে দুই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ১ তারিখ কলকাতা দক্ষিণ এবং বসিরহাট কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ওই দুই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়নে গলদ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মালা রায় কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন। যা ‘অফিস অফ প্রফিট’-এর আওতাধীন। ফলে ওই পদে ইস্তফা না দিয়ে লোকসভা ভোটের প্রার্থিপদের জন্য মনোনয়ন দেওয়া যায় না। উনি ওই পদে থাকাকালীন কোনও বেতন না নিলেও তিনি লাভজনক পদে রয়েছেন বলেই বিবেচ্য হবেন।’’
লোকসভা নির্বাচনের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধর। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় কোচবিহারের পুলিশ সুপার ছিলেন তিনি। ওই নির্বাচনে শীতলখুচিতে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় চার জনের। দেবাশিসের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে তাঁকে কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠিয়ে দেয় নবান্ন। আইপিএস অফিসার চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগদান করার পর তাঁকে বীরভূম কেন্দ্রে প্রার্থী করে পদ্মশিবির। কিন্তু, ‘নো ডিউজ় সার্টিফিকেট’ জমা দিতে না পারায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। দেবাশিসের সঙ্গে ওই কেন্দ্র থেকে দেবতনু ভট্টাচার্যকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিজেপি। দেবাশিসের প্রার্থীপদ বাতিল হয়ে যাওয়ায় তাঁর জায়গায় ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হন দেবতনু। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে জগন্নাথ বলেন, ‘‘আমাদের বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থী দেবাশিস ধর ‘নো ডিউজ় সার্টিফিকেট’ জমা না দেওয়ায় তাঁর প্রার্থিপদ বাতিল হয়েছে। তা হলে বসিরহাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামেরও প্রার্থিপদও বাতিল হওয়া উচিত। তাঁর ‘নো ডিউজ়’ সার্টিফিকেট দেওয়ার শেষ সময় ছিল ১৪ মে বিকেল ৩টেয়। কিন্তু, তার মধ্যে ওই নথি নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে পারেননি তিনি।’’ এর পর বিদায়ী সাংসদ তথা আর এক তৃণমূল প্রার্থী মালার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিজেপি।
বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে মালাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ওরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে। কমিশনে আমার সব কাগজপত্র দেওয়া আছে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘২০১৯ সালে যখন থেকে আমি লোকসভা ভোটে জিতেছি, তখন থেকে কলকাতা পুরসভা আর কোনও সাম্মানিক নিই না। এখন ওরা কিছু না পেয়ে এবং হারবে জেনে এ সব কাজ শুরু করেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা কোনও আইনসভা নয়। আমি বিধায়ক হলে লোকসভার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হতে পারত। কিন্তু কলকাতা পুরসভা স্বশাসিত সংস্থা। আর আমি তো অনেক আগে থেকে পুরসভার চেয়ারপার্সন ছিলাম। তত দিন কি বিজেপি ঘুমোচ্ছিল?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy