বুথের পথে মহিলা ভোটকর্মীরা। শুক্রবার বিকেলে কোলাঘাটে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
অশান্তির আবহে আজ শনিবার ষষ্ঠ দফায় লোকসভা ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে নন্দীগ্রামে। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নন্দীগ্রামে লোকসভা ভোটের মাত্র দু’দিন আগে খুন হয়েছেন এক বিজেপি কর্মীর মা। ওই কর্মী নিজেও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। এমনকি শুক্রবারেও এলাকায় রুটমার্চ করেনি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলা মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। নন্দীগ্রামের থেকেও এগিয়ে রয়েছে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র। ভূপতিনগরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অম্বিকেশ মান্নাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে ভাজাচাউলিতে। খেজুরি এবং পটাশপুরে ও রাজনৈতিক উত্তেজনা অব্যাহত। রয়েছে রাজনৈতিক সংঘর্ষপ্রবণ বাকচার মতো এলাকা। কেন পুলিশ-প্রশাসন আগে থেকে এই এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা দৃঢ় করেনি এবং কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী এখানে আগে থেকে নিরপাত্তার রাশ ধরেনি, সেই প্রশ্ন এখন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে।
এই সব এলাকায় পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিকমতো কাজে লাগাচ্ছে না বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে তাদের আগে থেকে আটক করেনি প্রশাসন। শৈথিল্যের অভিযোগ উঠেছে জেলার পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে। রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ কুমার দত্ত বলছেন,"মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলা তত্ত্ব এবং বিরোধী দলনেতার ১৯৫৬ র বক্তৃতা ঘৃতাহুতি জুগিয়েছে
অতি স্পর্শকাতর নন্দীগ্রামে।"
দিন কয়েক আগে কাঁথির এসডিপিও, পটাশপুর এবং ভূপতিনগরের ওসি বদল করেছে নির্বাচন কমিশন। জেলা স্তরে পুলিশের নানা পদে রদবদলের জেরে আধিকারিকেরা খানিকটা অতি সতর্ক হয়ে রয়েছেন এবং সহদে কোনও পদক্ষেপ করতে চাইছেন না বলে প্রশাসনের অনেকে মনে করছেন। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন,"আমরা নির্বাচন কমিশনকে সমস্ত বিষয় জানিয়ে রেখেছি। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যথাযথ কাজে লাগানো হচ্ছে না।" অন্য দিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের দাবি,"কিছু কিছু ক্ষেত্রে দূরত্বের কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে সময় লাগছে পুলিশের। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যে ভাবে কাজে লাগানো উচিৎ, সে ভাবেই পুলিশ কাজে লাগাচ্ছে।"
শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (পশ্চিমাঞ্চল)। সে সময় খানিকটা দূরে সিএপিএফ বাহিনী দাঁড়িয়েছিল। কয়েকটি কিউআরটি (কুইক রেসপন্স টিম) বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় রুটমার্চ করেনি। তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি দেবু রায় বলছেন,"পাঁচ থেকে সাতটি বুথে কোনও পোলিং এজেন্ট বসতে
চাইছে না!"
যদিও, বিজেপির মহিলা কর্মী খুনের ঘটনায় অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মূল অভিযুক্ত দেবাশিস রায় ওরফে দেবুকে তেখালি পুলিশ ফাঁড়িতে দেখা গিয়েছে। তার আগে তৃণমূলের রাজ্য স্তরের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এলাকায় দেখা গিয়েছে আরও দুই অভিযুক্ত জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শামসুল ইসলাম এবং তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানকে। কী ভাবে অভিযুক্তেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা
শুরু করেছে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ধনঞ্জয় ঘরা নামে এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করেছে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। তিনি নন্দীগ্রাম-১ মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি। তমলুকে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন চাকরি হারা শিক্ষকদের ধর্না মঞ্চে যে অশান্তি ঘটেছিল তাতে অভিযুক্ত ছিলেন ওই বিজেপি নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy