শনিবার বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া-র নেতারা বৈঠকে বসতে চলেছেন। —ফাইল ছবি।
রাহুল গান্ধী বলেছেন, ভোটগণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইভিএমের দিকে নজর রাখতে হবে। অখিলেশ যাদব মনে করিয়ে দিয়েছেন, চণ্ডীগড়ে মেয়র নির্বাচনের ভোটগণনার সময় বিজেপি সিসিটিভি ক্যামেরার সামনেই কারচুপি করেছিল। সে কথা মাথায় রেখে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগণনার দিন যাতে কোনও কারচুপি না হয়, তা নিশ্চিত করার উপায় খুঁজতে শনিবার বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া-র নেতারা বৈঠকে বসছেন।
সূত্রের খবর, ৪ জুন ভোটগণনার দিন গণনা কেন্দ্রে ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির নেতা-কর্মীদের কী কাজ হবে, প্রতিটি দলের নেতা-কর্মীদের ভোটগণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত কী ভাবে সতর্ক থাকতে হবে, মূলত শনিবারের বৈঠকে তা এক বার ঝালিয়ে নেওয়া হবে। বিরোধী শিবিরের নেতারা আশঙ্কা করছেন, শনিবার সপ্তম ও শেষ দফার ভোটগ্রহণের পরে সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন বুথফেরত সমীক্ষা প্রকাশ্যে আসবে। সেই সব সমীক্ষাকে সামনে রেখে বিজেপি ৩০০-র বেশি আসনে জিতছে ধরে নিয়ে প্রচারে নেমে পড়তে পারে। ফলে ভোটগণনার আগেই ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির কর্মীরা হাল ছেড়ে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ভোটগণনার দিন বিরোধী দলের এজেন্টদের সতর্কতাও কমে যাবে। সেই সুযোগে ভোটগণনায় কারচুপির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিরোধী নেতারা। একই কারণে বুথফেরত সমীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের আলোচনায় কংগ্রেস অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে কংগ্রেসের কোনও মুখপাত্রকে পাঠানো হবে না।
শনিবার লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম ও শেষ দফার ভোটগ্রহণ। শনিবার বেলা তিনটেয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের বাড়িতে ইন্ডিয়া-র নেতাদের ঘরোয়া বৈঠক ডাকা হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মূলত লোকসভা ভোটে আসন জয়ের বিষয়ে কোন দলের কাছে কী ‘ফিডব্যাক’ রয়েছে, তা নিয়ে তথ্য আদানপ্রদান হবে। তবে আলোচ্য বিষয় হবে ৪ জুনের ভোটগণনার দিনের প্রস্তুতি। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে অধিকাংশ রাজ্যের ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির মধ্যে মসৃণ সমন্বয় ছিল। ভোটগণনার দিনও সেই সমন্বয় রেখে মাঠে নামতে চাইছেন বিরোধীরা। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস জানিয়েছে, গত ৭৭ দিনে তারা ১১৭টি অভিযোগ জানিয়েছিল। তার মধ্যে ১৪টি নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে, ৮টি যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে এবং ৩টি অমিত শাহের বিরুদ্ধে। একটি অভিযোগেরও সুরাহা হয়নি।
কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩০৩টি আসন জিতেছিল। কিন্তু এর মধ্যে ৪০টি আসন বিজেপি জিতেছিল ৫০ হাজারের কম ভোটে। এর মধ্যে ১১টি আসনে কংগ্রেস হেরেছিল। যেখানে যত কম ব্যবধান, সেখানে ততই ভোটগণনায় কারচুপির আশঙ্কা থেকে যায়। রাহুল ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের বলেছেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইভিএম-এর দিকে নজর রাখতে হবে। শেষ দফার ভোটের দিন ও ভোটগণনার দিনেও সতর্ক থাকতে হবে। আজ সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও তাঁর দলের নেতা, কর্মীদের খোলা চিঠিতে জানিয়েছেন, শেষ দফার ভোটের সময় ও তার পরে ভোটগণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বিজেপির প্ররোচনায় পা দেওয়া চলবে না।
অখিলেশের বক্তব্য, বিজেপি শনিবার থেকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদমাধ্যমকে দিয়ে বলাবে যে তারা ৩০০ আসন জিতছে। এ সব বলে বিরোধীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করবে, যাতে ভোটগণনার দিন সজাগ ও সতর্ক থাকার উৎসাহ চলে যায়। তার ফায়দা তুলতে বিজেপি কিছু ভ্রষ্ট আধিকারিকের সঙ্গে মিলে ভোটগণনায় কারচুপি করতে পারে। অখিলেশ মনে করিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনের সময় আদালতের নির্দেশে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে ভোটগণনার কারচুপি করার দুঃসাহস করেছিল। তাই ভোটে জেতার জন্য বিজেপি যে কোনও রকম কারচুপি করতে পারে। আজ ডিএমকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে দাবি করেছে, নির্বাচনী বিধি মেনে ভোটগণনার প্রথম আধ ঘণ্টায় যেন পোস্টাল ব্যালট গণনা করা হয়। তার পরেই যেন ইভিএম গণনা শুরু হয়। ইভিএম গণনার আগে যেন পোস্টাল ব্যালটের ফলও বলে দেওয়া হয়। বিরোধীদের আশঙ্কা, পরে পোস্টাল ব্যালট গণনা হলে কারচুপির আশঙ্কা থেকে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy