প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যকে এক বাক্যে ঘৃণাভাষণ আখ্যা দিয়ে তার নিন্দায় সরব হয়েছেন বিরোধী সব নেতা। রাহুল গান্ধী এবং অন্য কংগ্রেস নেতারা বলছেন, প্রথম পর্যায়ের ভোটে তাঁর উন্নয়নের ফানুস ফেটে গিয়েছে। মোদী বুঝেছেন, ‘৪০০ পার’ তো দূরের কথা, অর্ধেক আসন পেলে হয়। তার পরেই ‘সব কি বিকাশ’-এর বাগাড়ম্বর ঝুলিতে পুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিশানা করে ‘ঘৃণাভাষণ’ শুরু করেছেন। যুব কংগ্রেস নেতা বি ভি শ্রীনিবাস বলেন, “মুখোশ খুলে গিয়েছে মোদীর। চাপে পড়ে সমাজকে কলুষিত করতে সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে ঘৃণাভাষণ শুরু করেছেন। সঙ্গে কংগ্রেসকে জড়িয়ে মিথ্যা কথা বলে চলেছেন অবিরত।”
বাঁশোয়াড়ার জনসভায় মোদী বলেন, “কংগ্রেসের ইস্তাহারে বলা হয়েছে সবার ধনসম্পত্তির হিসাব নেবে তারা। তার পরে সে সব কেড়ে নিয়ে তাদের মধ্যে বিতরণ করবে, যাদের অনেকগুলো করে বাচ্চা-কাচ্চা হয়। আপনারা বুঝে নিন কাদের কথা বলছি। এ সব শহুরে নকশালদের চিন্তাভাবনা, কংগ্রেস যা নিয়ে চলে। অর্থাৎ কংগ্রেসের হাতে মা-বোনেদের গলার হার বা মঙ্গলসূত্রও নিরাপদ নয়। তারা সে সব কেড়ে নেবে। তার পরে সে সব কাদের কাছে বিলি করে দেবে? অনুপ্রবেশকারীদের কাছে বিলি করে দেওয়া হবে! আপনারা তা করতে দেবেন? মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে বলেছিলেন, দেশের সম্পদে মুসলিমদেরই অগ্রাধিকার! তারা সেটাই মানে।”
যুব কংগ্রেস নেতা শ্রীনিবাস এক্স হ্যান্ডলে মোদীর একটি বংশলতিকা প্রকাশ করেছেন, যাতে দেখা যাচ্ছে— নরেন্দ্র মোদীর পিতামহ মূলচন্দ মগনলাল মোদীর ছয় পুত্র। তাঁদের নাম দামোদরদাস, নরসিংহদাস, নরোত্তমভাই, জগজীবনদাস, কান্তিলাল এবং জয়ন্তীলাল। দামোদরদাস ও হীরাবেন মোদীরও পাঁচ পুত্র এবং এক কন্যা। পুত্রদের নাম যাথাক্রমে সোমভাই, অমৃতভাই, নরেন্দ্রভাই, প্রহ্লাদভাই এবং পঙ্কজ মোদী। কন্যা বসন্তীবেন। নেটনাগরিকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বেশি বাচ্চা-কাচ্চা হয়’ বলে মোদী সংখ্যালঘুদের চিহ্নিত করছেন। কিন্তু তাঁর নিজের পরিবারে ‘বাচ্চা-কাচ্চা’-র কী হাল?
দু’দিন আগে লালু যাদবকেও ‘বেশি ছেলেপুলের বাপ’ বলে ঠেস দিয়েছেন মোদীর শরিক নীতীশ কুমার। এর পরে মোদীর এই বক্তৃতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব সোমবার বলেন, “মানুষের প্রকৃত সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতেই এই সব অবান্তর কথাবার্তা বলা হচ্ছে। কিশোর থেকে বয়স্ক সবার প্রশ্ন, বেকারত্ব আর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে। মানুষের হাতে কাজ নেই। সাধারণ মানুষের কাছে সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকাটাই আজ বড় সঙ্কট। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, অবান্তর কথা না বলে এই সব সমস্যার সমাধানে আপনার কী পরিকল্পনা রয়েছে, সে সব বরং বলুন। মানুষ তা-ই শুনতে চায়।”
প্রধানমন্ত্রী এর আগেও বলেছেন, কংগ্রেসের ইস্তাহারের সঙ্গে তিনি মুসলিম লিগের ইস্তাহারের মিল পাচ্ছেন। মোদীর দাবি, কংগ্রেসের ইস্তাহারে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘বান্ডিল বান্ডিল মিথ্যা কথা’ বলা হয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে জবাবে বলেন, “ইতিহাস সাক্ষী, ১৯৪০-এ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো আরএসএস-র লোকেরাই মুসলিম লিগের শরিক হিসেবে বাংলা, সিন্ধু ও উত্তর পূর্ব সীমান্ত প্রদেশে সরকার গঠন করেছিল। কংগ্রেস কখনও এ কাজ করেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy