রবিবার ঘাটালে রোড শোয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং দেব। ছবি : সংগৃহীত।
অভিমান করে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন দেব। তবে তৃণমূল অভিনেতার অভিমান ভাঙিয়েছিল। কী ভাবে? রবিবার ঘাটালে দেবের লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দু’মাস আগের কথা। ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে হঠাৎ এসে দাঁড়িয়েছিল অভিনেতা এবং তৃণমূলের ঘাটালের সাংসদ দেব তথা দীপক অধিকারীর গাড়ি। তারও বেশ কিছু দিন আগে থেকে সমাজমাধ্যমে অভিনেতার একের পর এক পোস্টে তিনি ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, রাজনীতি থেকে বিদায় আসন্ন। স্বাভাবিক ভাবেই সেই দিন দেবের অভিষেক-দর্শনে দু’য়ে দু’য়ে চার করে নিয়েছিলেন অনেকে। কেউ কেউ ভেবেই ফেলেছিলেন, দেব ইস্তফা দিতে এসেছেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। ক্যামাকস্ট্রিট থেকে বেরিয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে দেব জানিয়ে দেন, তিনি রাজনীতি ছাড়ছেন না। কেন সিদ্ধান্ত বদলেছিলেন অভিনেতা সাংসদ? গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঠিক কী কী হয়েছিল, অভিষেক সেই কাহিনিই জানিয়েছেন।
রবিবার ঘাটালে দেবের সমর্থনে রোড শো করেন অভিষেক। পরে রোড শো উপলক্ষে বিপুল জনসমাগমকে উদ্দেশ্য করে আধঘণ্টার একটি সভাও করেন। যে ভ্যানে দেবকে নিয়ে রোড শো করছিলেন, সেই ভ্যানের মাথাতেই দেবকে পাশে নিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘দেব যখন ফেব্রুয়ারি মাসে আমার সঙ্গে দেখা করতে এল, আমি ওকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তুমি অভিমানী হচ্ছ কেন?’’ অভিষেক জানিয়েছেন সেই প্রশ্নের জবাবে দেব তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘আমি ঘাটালে দু’বার সাংসদ হলাম। প্রতি বারই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। অথচ কিছু করতে পারিনি। আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। দিল্লিতে গিয়ে কথা বলেছি। সংসদে আমার বক্তব্য জানিয়েছি। তা সত্ত্বেও আমি কিছু করতে পারিনি।’’
উল্লেখ্য, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের এই শহরকে জল-যন্ত্রণার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। নদীবেষ্টিত ঘাটাল বর্ষাকালে জলে ডুবে যায়। আক্রান্ত হন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কৃষকেরাও। কিন্তু ২০১৪ সালে এই প্রকল্প কেন্দ্রীয় অনুমোদন পেলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। যার কারণ হিসাবে বাংলার সরকার তৃণমূল দোষী ঠাওরায় কেন্দ্রকেই। রবিবার অভিষেক বলেন, দেবের কথায় যে যুক্তি আছে, তা বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। অভিষেক বলেছেন, ‘‘আমি তখনই দিদিকে (সম্পর্ক যা-ই হোক, অভিষেক তৃণমূলের বাকিদের মতো মমতাকে দিদিই বলেন) ফোন করি। এবং জানাই দেব যা বলছে তা সঙ্গত। শুনে দিদি বলেন, ‘ওকে বল, কেন্দ্র যদি টাকা না দেয় তবে ঘাটালে আমার সরকার দেবে মাস্টারপ্ল্যানের টাকা’।’’
অভিষেক জানিয়েছেন, এই কথোপকথনের পরই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত বদলান দেব। অভিমান ভোলেন অভিনেতা। মমতাও আরামবাগে দেবকে পাশে নিয়ে ঘোষণা করেন ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত করার কথা। যদিও রবিবার সেই প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরালো করেছেন অভিষেক নিজে।
অভিষেক ঘাটালে ঘোষণা করেছেন, রাজ্য সরকার শুধু ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করে ঘাটালের মাস্টারপ্ল্যান করবেই না, এ বছরের মধ্যেই ঘাটালে মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুরু করে দেবে। অভিষেক যখন এ কথা বলছিলেন, তখন পাশে দাঁড়ানো দেবকে অনেকটাই আশ্বস্ত দেখাচ্ছিল। অভিষেকের নতুন ঘোষণাকে হাততালি দিয়ে স্বাগতও জানান ঘাটালের বিদায়ী সাংসদ এবং তৃণমূল প্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy