অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
অভিষেক বলেন, ‘‘২০২১ সালে লক্ষ্মীর ভান্ডার দেখে ভোট দিয়েছেন, পেয়েছেন। ২০২৪ সালে যাঁকে ইচ্ছা ভোট দিন, নিজের অধিকার সামনে রেখে দিন।’’ তার পরেই অভিষেক বলেন, ‘‘খুঁটিপুজো আজ করলাম, বিসর্জন মে মাসের শেষ সপ্তাহে করব।’’
অভিষেক বলেন, ‘‘এক জন লক্ষ্মীর ভান্ডার দিচ্ছেন, রেশন দিচ্ছেন, সব দিচ্ছেন। অন্য জন নিচ্ছেন, তিনি বাংলা বলতে পারেন না, বুঝতে পারেন না। কার গ্যারান্টি নেবেন?’’
অভিষেক বলেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থা, কেন্দ্রীয় বাহিনী, আধাসেনা বাহিনী, সংবাদমাধ্যম রয়েছে। তা-ও বিজেপি বাংলায় দাঁড়াতে পারছে না। দাঁত ফোটাতে পারছে না। তৃণমূলের কাছে কিছু নেই। কিন্তু মানুষ রয়েছে।’’ অভিষেক মনে করালেন মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ।
অভিষেক বলেন, ‘‘আপনি টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছেন, ঝোলা নিয়ে এসে বলছেন গ্যারান্টি। মোদীজির গ্যারান্টি। আপনাকে টুপি পরিয়ে, পরে ঝোলা নিয়ে এলে কী করবেন? জবাব দেবেন না? ২০১৯ সালে ভোট দিয়ে বিজেপিকে জিতিয়েছেন। তার পর টাকা পাননি। জবাব দেবেন না?’’
অভিষেক বলেন, ‘‘কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। অমিত শাহের ডেপুটি। সেখানকার ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার শ্রমিকের টাকা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। নিশীথ কি একটাও চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রকে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ির সাংসদও কি একটাও চিঠি দিয়েছেন? শ্রমিকদের টাকা আটকে। এই জন বার্লা, মনোজ টিগ্গারা কি কোনও চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রকে? এই টাকা খেটে খাওয়া টাকা। আপনি পারবেন বাড়িতে কাউকে কাজ করিয়ে টাকা না দিতে?’’
অভিষেক বলেন, ‘‘আমরা বলিনি, জল্পেশ মন্দিরে ১০ কোটি টাকা দিয়েছি, ভোট দাও। ধর্ম বাড়িতে করুন।’’ তিনি জানালেন, উন্নয়ন দেখেই ভোট দেওয়া উচিত।
অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপিকে ভোট দিয়ে তৃণমূলকে বলতে পারেন না, বাড়ির টাকা দিন। তৃণমূলকে ভোট দিন, কথা পূরণ না হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। ’’
‘‘কার গ্যারান্টি নেবেন? আমি এক কথার ছেলে। কথা দিয়ে কথা রাখি’’, বললেন অভিষেক।
ধূপগুড়ি মহকুমা হয়েছে। চাষের জল একাধির ব্লকে পৌঁছে দিয়েছি। রাস্তা হয়েছে তিন জেলায়। ১০০ দিনের কাজের টাকা গত তিন বছরে যাঁরা পাননি, বিজেপি আটকে রেখেছিল। তাঁদেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ১০০০ টাকা থেকে বেড়ে ১,২০০ টাকা হয়েছে।
অভিষেক বলেন, ২০২২ সালে মালবাজারে এসেছিলাম। একটি সম্মেলনে বলেছিলাম, দৈনিক মজুরি যাতে বৃদ্ধি পায়, আন্দোলন করব। বৃদ্ধি পেয়েছে চা শ্রমিকদের মজুরি। দৈনিক মজুরি ২০১১ সালে ছিল ৬৭ টাকা। তা থেকে বেড়ে ২৫০ টাকা হয়েছে।
ভিডিয়ো দেখিয়ে অভিষেক জানালেন, কী ভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। কী ভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও মানুষ ঘর পাননি। ১০০ দিনের কাজের টাকা পাননি। বৃহস্পতিবার সকালে সমাজমাধ্যমেও এই অভিযোগ করেছেন তিনি।
‘‘বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ছিলাম। দুটো পোডিয়াম রেখেছি। তর্ক হবে বলে। বলেছিলাম শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। কেউ কি এসেছেন?’’ প্রশ্ন অভিষেকের। তিনি বলেন, ‘‘হাটে হাঁড়ি ভেঙেছি।’’
অভিষেক বার্তা দিলেন রাজবংশীদের। তিনি বলেন, ‘‘নিজের অধিকার বুঝে নিতে এ বার ভোট দিন। ধর্ম দেখে নয়।’’
কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী এসেছেন উত্তরবঙ্গে। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরে তিনটি আসনে জিতেছে বিজেপি। গত পাঁচ বছরে এখানে তিন সাংসদ একটা বুথেও কি কোনও আলোচনা করেছেন? একটিও বৈঠক করেছেন? প্রশ্ন অভিষেকের।
অভিষেক জানান, আসার সময় সকলে তাঁকে অনুরোধ করেছেন লক্ষ্মীর ভান্ডার বৃদ্ধি করার জন্য। একটা ঘর পাননি বলেও অভিযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিজের অধিকার ভেবে কি ভোট দিয়েছেন? রামমন্দিরকে সামনে রেখে ভোট দিয়েছেন। নিজের অধিকার বুঝে নয়। রামমন্দির হয়েছে। আপনাদের মাথায় ছাদ নেই।’’
মঞ্চে ওঠার আগে ভিডিয়ো দেখিয়েছেন অভিষেক। সেই প্রসঙ্গই তুললেন তিনি। বলেন, ‘‘আপনাদের সমর্থন নিয়ে ভাতে মারার চেষ্টা করেছে। আগামী দিন অধিকার সামনে রেখে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।’’
মঞ্চে উঠে একে একে জলপাইগুড়ির প্রার্থী নির্মল-সহ সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন অভিষেক। জানালেন, আসার সময় দেখেছেন, মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ। মাথা নত করেছেন জনগণের সামনে।
ময়নাগুড়ির সভামঞ্চে পৌঁছে গিয়েছেন অভিষেক। তাঁকে স্বাগত জানাতে দর্শকাসনে শুরু হয় উলুধ্বনি। ঢাকঢোলও বাজানো হয়। জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায় অভিষেককে। অনেক অনুগামীর ছবি তোলার আবদারও মেটান তিনি।
উত্তরবঙ্গ দিয়েই লোকসভার প্রচার শুরু করছেন অভিষেক। ময়নাগুড়ি টাউন ক্লাবের ময়দানে তাঁর সভা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ি আসনটি জিতেছিল বিজেপি। এ বার সেই আসন জিততে চায় বাংলার শাসকদল। এই আসনে তৃণমূল প্রার্থী করা হয়েছে ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়কে। ময়দানে নামার আগে বৃহস্পতিবার সকালে সমাজমাধ্যমে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন অভিষেক। তিনি জানিয়েছেন, ২০২১ সালে নীলবাড়ির লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পর থেকেই রাজ্যের আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জন্য এক পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। এই নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশের চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন অভিষেক।
১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা নিয়ে বিজেপির যে কোনও নেতাকে তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য বিজেপি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে অভিষেকের কাছে সময় জানতে চায়। তার অব্যবহিত পরেই স্থান এবং কাল জানিয়ে দেন তৃণমূলের সেনাপতি। অভিষেক সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টের সময় ময়নাগুড়ি টাউন ক্লাবের মাঠে। দয়া করে রেগা ও আবাস যোজনার শ্বেতপত্র সঙ্গে নিয়ে আসবেন। দেখা হবে।’’ সেই ডাকে যদিও সাড়া দেয়নি বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy