তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলা তাঁর মন্তব্যের কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। প্রাক্তন বিচারপতি তথা লোকসভা ভোটে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে কমিশন লিখেছিল, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যেখানে মহিলাদের সম্মান করার স্বতন্ত্র ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যবহৃত শব্দ বাংলার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে, ভাবমূর্তিরও ক্ষতি করেছে।’’ কমিশনের এই ধরনের মন্তব্যের বিরুদ্ধেই বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ। বুধবার বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ হলফনামায় সই করতে হাই কোর্টে পৌঁছন তিনি।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের হলদিয়ার একটি সভা থেকে অভিজিৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘নজিরবিহীন’ ভাষায় আক্রমণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। ওই সভার একটি ভিডিয়োয় অভিজিৎকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত দামে বিক্রি হও? তৃণমূল বলছে, রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল ২০০০ টাকায়! আর তোমার হাতে কেউ ৮ লক্ষ টাকা গুঁজে দিলে চাকরি হয়, কেউ ১০ লক্ষ টাকা দিলে রেশন হাওয়া হয়ে যায়! তোমার দাম ১০ লক্ষ টাকা কেন? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে মেকআপ করাও বলে? আর রেখা পাত্র গরিব মানুষ, লোকের বাড়িতে কাজ করে, আমাদের প্রার্থী। তাই তাঁকে ২০০০ টাকায় কেনা যায়!’’ মমতাকে আক্রমণ করে অভিজিৎ এ-ও বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী আদৌ মহিলা কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে তাঁর। আনন্দবাজার অনলাইন ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে তৃণমূল এ ব্যাপারে কমিশনে অভিযোগ করার পরে কমিশন প্রথমে অভিজিৎকে শো-কজ় করে। পরে তাঁর প্রচার ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে বলা অভিজিতের মন্তব্যের সমালোচনাও করে। বিজেপি প্রার্থী অভিজিতের আপত্তি সেই সমালোচনা নিয়েই।
কী লিখেছিল কমিশন? অভিজিতের প্রচার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া চিঠির শেষে ১৩, ১৪, ১৫ এবং ১৬ নম্বর পয়েন্টে অভিজিতের সমালোচনা করে কমিশন লিখেছে, অত্যন্ত ব্যথিত ভাবে কমিশন এ কথা জানাতে বাধ্য হচ্ছে যে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের যে শিক্ষাগত যোগ্যতা তার ভিত্তিতে এই ন্যক্কারজনক শব্দ তাঁর কাছ থেকে কাম্য নয়। তিনি ভারতীয় মহিলাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যে নারী সম্মানের ইতিহাস, তারও অমর্যাদা করেছেন। এই ধরনের শব্দ কোনও নারীর প্রতি ব্যবহার করা হলে তা অবমাননাকর তো বটেই, কোনও রাজনৈতিক নেতা বা সাংবিধানিক পদাধিকারীর ক্ষেত্রেও অপমানজনক।
বুধবার এ প্রসঙ্গে অভিজিতের আইনজীবীরা বলেন, ‘‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের সমালোচনা করে কমিশন যা যা লিখেছে, তা এর আগে অন্য কোনও প্রার্থীর ক্ষেত্রে লেখা হয়নি। কমিশন কোনও প্রার্থীকে তাঁর আচরণের জন্য প্রচারের অনুমতি না দিতেই পারে। কিন্তু তাঁর আচরণ নিয়ে এ ভাবে মন্তব্য করতে পারে কি?’’ এই প্রশ্ন তুলেই বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে পাল্টা মামলা করছেন অভিজিৎ। সেই সূত্রেই বুধবার বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ অভিজিৎ পৌঁছন কলকাতা হাই কাের্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy