নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন নিউ টাউনে পুলিশের গার্ডরেল দিয়ে ভোট কেন্দ্রের রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছিল। ভোট দিতে গিয়ে সে দিন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন প্রবীণ নাগরিক। এমনকি, বিরোধী দলের নেতাদেরও বাড়িতে বন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। এ বার লোকসভা নির্বাচনে ওই এলাকায় বিশেষ কুইক রেসপন্স টিম (স্পেশ্যাল কিউআরটি) মোতায়েন করাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। যার নেতৃত্বে থাকবেন আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ানেরা। তবে, বাহিনীতে থাকবেন রাজ্য পুলিশের কর্মীরাও।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে খাস নিউ টাউনে ভোট লুটের অভিযোগে মুখ পুড়েছিল রাজ্য প্রশাসনের। প্রশ্নের মুখে পড়ে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশের ভূমিকাও। বাসিন্দারা অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশের সাহায্য চেয়েও সে দিন মেলেনি। বিধাননগরের নগরপাল গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘মানুষ যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে আসতে পারেন, তার সব ব্যবস্থা থাকছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলির জন্য বিশেষ কিউআরটি দল থাকছে।’’
সূত্রের খবর, সামগ্রিক ভাবে বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার জন্য ৫৭ কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী বরাদ্দ হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ২০৩৪ জনের বাহিনীও মজুত করা হচ্ছে। ওই কমিশনারেট এলাকায় বুথ রয়েছে ৮৫০টির মতো। এ ছাড়া, বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের একটি বড় অংশ ও দমদম লোকসভা কেন্দ্রের একাংশও রয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে। বারাসত কেন্দ্রের মধ্যে বিধাননগর বিধানসভার মোট বুথ ২৮১টি, স্পর্শকাতর বুথ ২৫টি। নিউ টাউন বিধানসভায় বুথ রয়েছে ৩১৪টি, স্পর্শকাতর বুথ ৩৮টি। এ ছাড়া, দমদম লোকসভা কেন্দ্রে ১৮৭টি বুথও রয়েছে।
বিধাননগরের নগরপাল জানিয়েছেন, ভোটের জন্য বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন জায়গায় নাকা তল্লাশি চালু হয়েছে। সেই জন্যও অতিরিক্ত আধা-সামরিক বাহিনী তৈরি রাখা হবে। এর বাইরে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তাবাহিনীও মজুত থাকবে।
সল্টলেক বা নিউ টাউন আপাতনিরীহ অঞ্চল হলেও কোনও কোনও এলাকায় অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে গোলমাল, বোমা পড়া, বাইক জ্বালানো, ইভিএম ভেঙে ভোট বানচাল করার মতো ঘটনা ঘটেছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে রাজারহাটেই ঘটেছে তেমন ঘটনা। ওই সব এলাকা ধরে ধরে বিশেষ কিউআরটি বাহিনী তৈরি রাখা হবে। যাতে যে কোনও সমস্যায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। নিউ টাউনের ব্লক এলাকাগুলি, মহিষবাথান, পাথরঘাটা বা সল্টলেকের করুণাময়ী, দত্তাবাদ, লেক টাউনের কাছে দক্ষিণদাঁড়ি, বাঙুরে বিশেষ কিউআরটি দলকে সক্রিয় রাখা হবে। ইতিমধ্যেই বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় টহলদারি শুরু করেছে আধা-সামরিক বাহিনী।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন সিপিএমের এক প্রার্থীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট মহম্মদ আবদুল গফ্ফরকে বুথে যাওয়ার আগে রাস্তাতেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের চোখের সামনেই আমার পোশাক ছিঁড়ে, মারতে মারতে সরিয়ে দেওয়া হয়। দু’জন আমাকে টোটোয় চাপিয়ে এক জায়গায় নামিয়ে দিয়ে বলেছিল, ছেঁড়া পোশাকেই বাড়ি চলে যেতে। যাতে আমার হাল দেখে আর কেউ ভোট দিতে না আসে।’’ নতুন উপনগরীর আবাসিকদের সংগঠন ‘নিউ টাউন সিটিজ়েন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’র সাধারণ সম্পাদক সমীর গুপ্ত বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণ ভোটের আবেদন করেছি নির্বাচন কমিশনে। পুলিশ অবশ্য আশ্বস্ত করেছে। দেখা যাক, কী হয়।’’
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের পরে ভাবমূর্তি উদ্ধার করতে এ বার মানুষকে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছে তৃণমূলও। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের নেতা মহম্মদ আফতাবুদ্দিন বলেন, ‘‘নির্ভয়ে বুথে আসুন। যাকে ইচ্ছে, ভোট দিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy