এই সেই সারকো পড। ছবি: সংগৃহীত।
এক মিনিটেরও কম সময়ে ব্যথা-বেদনাহীন শান্তির মৃত্যু! চলতি বছর শেষের আগেই এমনই এক যন্ত্রের প্রথম ব্যবহার হতে চলেছে সুইৎজ়ারল্যান্ডে।
এগ্জিট ইন্টারন্যাশনালের তৈরি গোলাকার কফিন আকৃতির যন্ত্রটির নাম ‘সারকো পড ক্যাপসুল’। ২০১৯ সালে যন্ত্রটির প্রাথমিক প্রোটোটাইপ তৈরি হয়। এর পর ২০২১ সালে ব্যবহারে আইনি ছাড়পত্র পায় সারকো পড। সব ঠিকঠাক চললে চলতি বছর শেষের আগেই এই যন্ত্রটি প্রথম বার ব্যবহার করা হতে পারে বলে বুধবার জানিয়েছে নির্মাণকারী সংস্থা।
আদতে ছোট্ট ক্যাপসুলের মতো দেখতে এই যন্ত্রটি বহনযোগ্যও! যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই নিয়ে যাওয়া যাবে এই সারকোকে। মূল মেশিন থেকে বিচ্ছিন্ন করলে একে দেখতে হবে খানিকটা কফিনের মতো। সেই কফিনে এক বার শুয়ে পড়লেই নিমেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বেন ব্যবহারকারী। যন্ত্রটিতে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। কফিনে ঢুকে আত্মহত্যায় ইচ্ছুক ব্যক্তি একটি বোতাম টিপলেই নাইট্রোজেনে ভরে যাবে ক্যাপসুলটির অন্দর। এতে প্রথমে অক্সিজেন কমে আসায় অস্বস্তি বোধ করলেও ধীরে ধীরে জ্ঞান হারাবেন ওই ব্যক্তি। তবে কোনও আতঙ্ক বা দমবন্ধকর পরিস্থিতি গ্রাস করবে না তাঁকে। এর পর কিছু ক্ষণের মধ্যেই হাইপোক্সিয়া এবং হাইপোক্যাপনিয়ায় মারা যাবেন ওই ব্যক্তি।
এই যন্ত্র ব্যবহার করে আত্মহননে খরচ হবে মাত্র ১৮ সুইস ফ্রাঁ, যা ভারতীয় মুদ্রায় ১৬৭৩ টাকার কাছাকাছি! যদিও এই যন্ত্রের প্রথম ব্যবহারকারী কে হতে চলেছেন, সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সংস্থা। ঘটনাটি না ঘটা পর্যন্ত এ বিষয়ে বিশদে মুখ খুলতেও নারাজ তারা। প্রাথমিক ভাবে সারকো পড ব্যবহারের জন্য ন্যূনতম বয়ঃসীমা ৫০ নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুনতে অবাক লাগলেও সুইৎজ়ারল্যান্ডে আত্মহত্যার অধিকার রয়েছে নাগরিকদের। পরিসংখ্যান বলছে, সুইৎজ়ারল্যান্ডে আত্মহত্যার ঘটনা প্রায়শই ঘটে। সেখানে আত্মহত্যায় সহায়তা করাও আইনত বৈধ। শুধুমাত্র ২০২০ সালেই ১৩০০ ব্যক্তিকে আত্মহত্যায় সহায়তা করা হয়েছিল। যদিও ভারতে স্বেচ্ছামৃত্যু, আত্মহত্যায় সহায়তা কিংবা ইউথেনেশিয়ার মতো বিষয়গুলি এখনও আইনত অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।