মরক্কোর ভূমিকম্পের চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
রাত তখন সাড়ে ১১টা। বেশিরভাগ বাড়িতেই আলো নিভে গিয়েছে। গৃহস্থেরা ঘুমিয়ে পড়েছেন। হঠাৎ কিসের শব্দে ভেঙে গেল ঘুম। চোখ মেলেই যুবক দেখলেন, তাঁর মাথার উপর কাঁপছে সিলিং ফ্যান। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখা গেল, পর পর দাঁড়িয়ে থাকা বাড়িগুলি দুলছে। রাস্তায় ভিড় করেছেন সাধারণ মানুষ।
মরক্কোর মারাকাশের ৭১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬.৮। এই ভূমিকম্পের ফলে ৮০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে অনেকে আটকে আছেন বলে খবর। দুর্যোগের রেশ এখনও কাটেনি মরক্কোতে। তার মাঝেই ভয় ধরানো সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মারাকাশের বাসিন্দা ৩৩ বছর বয়সি এক যুবক এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘‘আমি দেখছিলাম অনেক বাড়ি দুলছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আগে কখনও পড়িনি। বাড়ি থেকে বাইরে গিয়ে দেখলাম, অনেকে ভিড় করেছেন। সবাই আতঙ্কিত।’’
মারাকাশের আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ভূমিকম্পের পর আর বাড়িতে ঢোকার সাহস পাননি কেউ। অনেকে রাস্তাতেই ঘুমোচ্ছেন। আবার কম্পন অনুভূত হলে যদি পালানোর সুযোগ না মেলে!’’
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘বিছানায় শুয়ে মনে হচ্ছিল, খাটটি উড়ে চলে যাবে। বাড়ির ঝাড়বাতিটিও ভেঙে পড়ে যায়। দরজা, জানলা নিজে থেকেই খুলে যাচ্ছিল, আবার জোরে শব্দ করে নিজেই বন্ধ হচ্ছিল।’’
মরক্কোর ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল মাটি থেকে ৮০০ কিলোমিটার গভীরে। অনেকে বলছেন, এত শক্তিশালী ভূমিকম্প মরক্কোতে আগে কখনও ঘটেনি। কম্পনের আঘাতে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে একাধিক বাড়ি। ভাঙা বাড়ির নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। মারাকাশের বিভিন্ন রাস্তায় চওড়া ফাটল দেখা দিয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ এবং টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। মারাকাশের হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে আহতদের ভিড়। মরক্কোর ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশটিকে সম্ভাব্য সমস্ত রকম সাহায্য করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।