গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দলের অন্দরে বিদ্রোহ, বিরোধীদের নজিরবিহীন জোট এবং পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের ধারাবাহিক ভর্ৎসনায় বিদ্ধ হয়ে ২০২২ সালের ১০ এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রধান ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার সেই উদ্যোগের নেপথ্যে তৎকালীন পাক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ভূমিকা ছিল বলে এ বার অভিযোগ উঠল।
কট্টরপন্থী দল জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম ফাজ়ি (জেইউআইএফ)-র প্রধান মৌলানা ফজলুর রেহমান অভিযোগ করেছেন, দু’বছর আগে পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ইমরানের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন জেনারেল বাজওয়া-সহ প্রথম সারির সেনা আধিকারিকেরা। ঘটনাচক্রে, সে সময় ইমরান বিরোধী জোটের অন্যতম মুখ ছিলেন ফজলুর। তাঁর দাবি, বিরোধী জোটে যোগ দেওয়ার জন্য জেনারেল বাজওয়ার ‘দূত’ হয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফৈজ হামিদ।
পাকিস্তানের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৬৬টি আসনের মধ্যে মাত্র চারটিতে জিতেছে জেইউআইএফ। পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র সম্ভাব্য জোট সরকারে ফজলুরের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুরনো প্রসঙ্গ তুলে সেনাকে নিশানা করেছেন তিনি।
ফজলুর বলেন, ‘‘২০২২ সালের এপ্রিলে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার ওই তৎপরতা হয়েছিল পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) নামের একটি জোটের মাধ্যমে। যার স্রষ্টা ছিল পাক সেনা।’’ তিনি জানান, শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পিএমএলএন, বিলাবল ভুট্টো জারদারির পিপিপির পাশাপাশি জেইউআইএফ, মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের মতো বেশ কয়েকটি দলকে ইমরান বিরোধী ওই জোটে শামিল করতে সক্রিয় ছিল পাক সেনা। ফজলুরের দাবি, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার বিরোধী হলেও শেষ পর্যন্ত নানা চাপের মুখে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার তৎপরতায় যোগ দিয়েছিলেন।