প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।
গত ২৩ অগস্ট চাঁদের ‘কুমেরুতে’ চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রমের সফল অবতরণের পর থেকেই সামাজমাধ্যমে আম পাকিস্তানিরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’কে। পাক সংবাদমাধ্যমের নানা খবর এবং আলোচনায় ভারতের সাফল্যের পাশাপাশি উঠে এসেছে সে দেশের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির কথা। এ বার সেই স্রোতে শামিল হলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী তথা পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) নেতা নওয়াজ শরিফ।
লন্ডনে স্বেচ্ছানির্বাসিত শরিফ মঙ্গলবার লাহোরে আয়োজিত দলীয় সভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতায় বলেন, ‘‘ভারত চাঁদে পৌঁছে গিয়েছে, আর আমার দেশ ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিশ্বে ঘুরছে!’’ পাক সেনার আধিকারিক এবং বিচারপতিদের একাংশকে মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক পতনের জন্য দায়ী করেন শরিফ। তিনি বলেন, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় ছিল ১০০ কোটি ডলার (প্রায় ৮,৩২৭ কোটি টাকা)। আজ তা প্রায় ৬০০ কোটি ডলারে (প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা) পৌঁছেছে। আর আমরা এখনও ভিক্ষা করে চলেছি।’’
পানামা পেপারকাণ্ডে নাম জড়ানোয় ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গদিচ্যুত হয়েছিলেন নওয়াজ। পাকিস্তানের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, আজীবন দলের কোনও পদে থাকতে পারবেন না তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে আয়-বহির্ভূত বিপুল অঙ্কের বেতন লুকোনোর অভিযোগ ছিল। এই মামলায় কিছু দিন শাস্তিভোগ করার পর চিকিৎসার কারণে লন্ডনে চলে যান নওয়াজ। এখনও সেখানেই স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন তিনি। তবে সম্প্রতি পিএমএলএন জানিয়েছে, আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে ২১ অক্টোবর দেশে ফিরতে পারেন নওয়াজ।
তা ছাড়া, কিছু দিন আগেই পাকিস্তানের ‘সুপ্রিম কোর্ট রিভিউ অফ জাজমেন্টে অ্যান্ড অর্ডারস অ্যাক্ট ২০২৩’ বিলে স্বাক্ষর করেছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। নয়া এই আইন নওয়াজের দেশে ফেরার রাস্তাকে প্রশস্ত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এই আইনে শীর্ষ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানাতে পারবেন নওয়াজ। এই আবহে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।