মলদ্বীপের মন্ত্রী মারিয়ম শিউনা। —ফাইল চিত্র।
মলদ্বীপের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভারতের জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে সাসপেন্ড করেছে প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর প্রশাসন। পরে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন ওই মন্ত্রী। কিন্তু বিতর্ক তাতে থামেনি।
মলদ্বীপের মুইজ্জু প্রশাসনের ওই মন্ত্রীর নাম মারিয়ম শিউনা। ভোটের প্রচারের সূত্রে সমাজমাধ্যমে কিছু দিন আগে তিনি একটি পোস্ট করেছিলেন। বিরোধী দলগুলিকে নিশানা করে তাঁর ওই পোস্টে ভারতের পতাকার ছবি ছিল বলে অভিযোগ। পোস্টটি পরে মুছে দেওয়া হয়। কিন্তু তার ‘স্ক্রিনশট’ ভাইরাল হয়ে যায়। ভারতের সমাজমাধ্যমে মলদ্বীপের মন্ত্রীর ওই পোস্ট নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে।
বিতর্কিত পোস্টে মলদ্বীপের বিরোধী দলের ভোটপ্রচারের একটি ছবি ছিল। তাতে দলের প্রতীকের ছবিটির জায়গায় ভারতের পতাকার অশোকচক্রের ছবি বসানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ছবির সঙ্গে মারিয়ম লিখেছিলেন, ‘‘এমডিপি (বিরোধী দল) একটা বড়সড় পতনের দিকে এগোচ্ছে। মলদ্বীপের জনগণ তাদের সঙ্গে পতনের দিকে এগোতে চায় না।’’ অভিযোগ, বিরোধী দলের প্রতীকে ভারতের অশোকচক্র বসে গিয়েছে বলে ইঙ্গিত করতে চেয়েছিলেন মারিয়ম। পরে এমডিপি জানায়, ওই ছবিটি ভুয়ো। তারা তাদের দলের প্রতীক চিহ্ন নিয়েই সভা করেছিলেন। যাতে এডিট করে ভারতের অশোকচক্রের ছবি বসিয়ে দেওয়া হয়। বিতর্কের মাঝে তড়িঘড়ি পোস্ট মুছে দেন মারিয়ম।
মারিয়মের ওই পোস্টের পর তাঁর দেশে তো বটেই, ভারত থেকেও ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবি ওঠে। এর মাঝেই এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মারিয়ম লেখেন, ‘‘আমার একটি সাম্প্রতিক পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমি শুনলাম, এমডিপিকে নিয়ে আমার পোস্টে ব্যবৃহত ছবির সঙ্গে ভারতের জাতীয় পতাকার মিল আছে। আমি এটুকু পরিষ্কার করে দিতে চাই, এটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। এর থেকে যে ভুল বোঝাবুঝির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আমি তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’’ ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মলদ্বীপ যে গুরুত্ব সহকারে দেখে, তা-ও জানিয়েছেন মারিয়ম।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে মলদ্বীপের ক্ষমতায় এসেছেন মুইজ্জু। তিনি ‘ভারত-বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত। তাঁর ক্ষমতালাভের পরেই ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লক্ষদ্বীপ সফরের সময়ে তাঁর উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল মলদ্বীপের তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। সে সময়ে সমাজমাধ্যমে ভারতের ব্যবহারকারীরা মলদ্বীপ বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। অনেকে মলদ্বীপে যাওয়ার টিকিটও বাতিল করে দেন। তার মাঝে মুইজ্জু মলদ্বীপের মাটি থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেন। সব মিলিয়ে ভারতের সঙ্গে এই পড়শি দ্বীপরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।