(বাঁ দিকে) বক্তব্য রাখছেন জো বাইডেন। পিছনে বসে নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। রবিবার আমেরিকার ডেলাওয়্যারে। ছবি: পিটিআই।
পিছনের আসনেই বসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ পরবর্তী বক্তা হিসাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে গিয়ে খেই হারালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শেষমেশ বাইডেনকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক। অস্বস্তি এবং সাময়িক বিহ্বলতা নিয়ে মোদীর নাম ঘোষণা করেন আমেরিকার অশীতিপর প্রেসিডেন্ট। হাসিমুখে বাইডেনের সঙ্গে করমর্দন করে বক্তৃতা শুরু করেন মোদী।
তিন দিনের সফরে শনিবার আমেরিকায় গিয়েছেন মোদী। রবিবার চতুর্দেশীয় অক্ষ ‘কোয়াডের’ একটি অনুষ্ঠানে বাইডেন এবং মোদী ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানেজ়। বক্তাদের তালিকায় বাইডেনের পরেই ছিল মোদীর নাম। প্রথা মোতাবেক দর্শকের সামনে পরবর্তী বক্তার নাম এবং তাঁর পরিচয় জানানোর কথা ছিল বাইডেনের। কিন্তু নিজের বক্তব্যের শেষে মঞ্চে কাকে ডাকতে হবে, তা-ই ভুলে গেলেন বাইডেন।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বিহ্বল চোখে দর্শকদের দিকে তাকিয়ে বাইডেন প্রশ্ন করছেন, “এর পর আমি কার সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব? এর পর কে?” তার পরেই দৃশ্যতই অসহায় প্রেসিডেন্টকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক। মঞ্চের ডান দিক থেকে তাঁকে অনুচ্চ স্বরে মোদীর নাম বলতে শোনা যায়। অবশেষে মোদীর নাম ঘোষণা করেন বাইডেন। হাসিমুখে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রীও। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই সমাজমাধ্যমে হাসি-মশকরা শুরু হয়ে যায়। (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)
৮১ বছর বয়সি বাইডেনের এই ধরনের ভ্রান্তিবিলাস নতুন নয়। এর আগে ওয়াশিংটনে নেটো-র সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। জ়েলেনস্কিকে পুতিন বলে সম্বোধন করে বসেছিলেন। তা ছাড়া গত জুলাইয়ে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বৈরথে বাইডেনের ক্ষীণ কণ্ঠস্বর, কথার খেই হারিয়ে ফেলা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের অন্দরেই প্রশ্ন উঠে যায়। ওই বিতর্কসভায় বাইডেনের আচরণ অসংলগ্ন ছিল বলে দাবি করেন দর্শকদের একাংশ। তাঁর কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল। ট্রাম্পের একাধিক বক্তব্যের বিরুদ্ধে সঠিক যুক্তিও নাকি সাজাতে পারেননি তিনি। বাইডেনের এই দুর্বলতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পও।
বয়স, শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে ঘরে-বাইরে বিতর্কের মুখে পড়া বাইডেন নিজেই পুনর্বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তাঁর পরিবর্তে ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।