(বাঁ দিকে) ম্যাগডেবার্গের বাজারে গাড়ি হামলার মূহূর্ত। হামলার পরে বিধ্বস্ত সেই রাস্তা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বড়দিনের বাজারে থিকথিকে ভিড়ের মধ্যে প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি। গাড়ির ধাক্কায় বহু মানুষ ছিটকে পড়েন। অনেকে চাকার তলায় পিষে যান। নিছক দুর্ঘটনা নয়। ইচ্ছাকৃত ভাবেই বড়দিনের বাজারে এই গাড়ি হামলা চালানো হয়েছে জার্মানির ম্যাগডেবার্গ শহরে। কিন্তু কেন? কোন আক্রোশ থেকে এই হামলা? ঘটনার এক দিন পর প্রকাশ্যে আসছে একাধিক তত্ত্ব। জার্মানিতে এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে ভারত।
ম্যাগডেবার্গের বড়দিনের বাজারে গাড়ি হামলায় অন্তত ২০৫ জন মানুষ আহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। তাঁদের মধ্যে রয়েছে ন’বছর বয়সি এক শিশুও। আহতদের তালিকায় সাত জন ভারতীয়ের নাম রয়েছে। ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রক শনিবার একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘জার্মানির ম্যাগডেবার্গ শহরে এই সাংঘাতিক এবং অর্থহীন হামলার আমরা তীব্র নিন্দা করছি। অনেক মূল্যবান জীবন আমরা হারিয়েছি। অনেকে আহত হয়েছেন। মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’’
জার্মানির এই হামলায় যে সাত ভারতীয় আহত হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে এবং তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ভারতীয় দূতাবাস, জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। তাঁদের সবরকম সাহায্য করা হবে। আহত সাত ভারতীয়ের মধ্যে তিন জনের আঘাত তেমন গুরুতর নয়। ইতিমধ্যে হাসপাতাল থেকে তাঁরা ছুটি পেয়ে গিয়েছেন।
হামলার পরেই আততায়ীকে গ্রেফতার করেছিল জার্মানির পুলিশ। ৫০ বছর বয়সি টামারা জিয়েশচ্যাং সৌদি আরবের বাসিন্দা হলেও ২০০৬ সাল থেকে জার্মানিতেই থাকছিলেন। পেশায় ডাক্তার ওই ব্যক্তি নিজে একটি অতি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাকে সবাই ইসলাম-বিরোধী বলেই জানত। তবে তিনি নিজেও একসময় মুসলিম ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, জার্মানির শরণার্থী নীতি নিয়ে বিরক্ত ছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর সমাজমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট থেকেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। সেই কারণেই বড়দিনের বাজারে এই হামলা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জার্মানির বার্নবার্গ শহরে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসাবে একটি ক্লিনিক চালাতেন আততায়ী। তবে গত অক্টোবর থেকে তাঁর ক্লিনিক বন্ধ ছিল। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ক্লিনিক বন্ধ রেখেছিলেন তিনি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।